কলকাতা: যখন একের পর এক গানে, অভিনয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেছিলেন কিশোর কুমার, তখনও বাংলা ব্যান্ডে অভ্যস্থ হয়ে ওঠেনি বাঙালি। আধুনিক গানের ধারা বদলেছে, ভাষা বদলেছে। বাংলায় জনপ্রিয় হয়েছে ব্যান্ডের ধারা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গানের ধারা ছক ভাঙলেও, যে কোনও সঙ্গীতশিল্পীর কাছে এখনও আদর্শ কিশোর কুমার। গানের ছক ভেঙে জনপ্রিয়তার পেলেও কিশোর কুমারের গাওয়া কোনও গান গাইতে এখনও হয়ত গলা কাঁপে যে কোনও সঙ্গীতশিল্পীর। ছবিতে 'শিং নেই তবু নাম তার সিংহ' গাইতে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল রূপম ইসলামের? কিশোর কুমারের জন্মদিনে এবিপি লাইভকে সেই গল্প শোনালেন 'ফসিলস'-এর প্রতিষ্ঠাতা।


কমেডি থেকে রোম্যান্স, সব ধরণের গানেই অবাধ যাতায়াত ছিল তাঁর। তবে রূপমের সবচেয়ে মন ছুঁয়ে যায় মনখারাপের গান। সঙ্গীতশিল্পী বলছেন, 'কিশোর কুমার যেখানেই হাত দিয়েছেন, সেখানেই যেন সোনা ফলেছে। গান থেকে শুরু করে মিউজিক কম্পোজ, অভিনয়, গান লেখা, সব জায়গাতেই নিজের ছকভাঙা প্রতিভার পরিচয় রেখেছেন তিনি। যেমন মজার ছলে কমেডি গান গেয়ে শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে ফেলতেন অনায়াসে, ততটাই সাবলীলভাবে প্রেমের গানে ভাসাতেন শ্রোতাদের। আমার ব্যক্তিগতভাবে প্রিয় কিশোর কুমারের গাওয়া দুঃখের গান। প্রিয় গান বলতে প্রথমেই মনে পড়ে ওনার গলায় 'কোই হাম দম না রাহা' গানটা। আমার মনে হয়, একটা ভীষণ গভীর একটা বোধ কাজ করে ওনার দুঃখের গানগুলিতে।'


'শুকনো লঙ্কা' ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তীর লিপে 'শিং নেই তবু নাম তার সিংহ' গানটি গেয়েছিলেন রূপম। কেমন ছিল বাঙালির নস্টালজিয়া জড়ানো কিশোর কুমারের সেই গান রেকর্ডিং করার অভিজ্ঞতা? রূপম বলছেন, 'আমার গলায় শিং নেই তবু নাম তার সিংহ! সত্যি বলতে, শুনে একটু ভয়ই পেয়েছিলাম। শুকনো লঙ্কা ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন দেবজ্যোতিদা (দেবজ্যোতি মিশ্র)। ওনাকে বলেছিলাম, তুমি বলছো, তোমার পরিচালনা, তাই কিশোর কুমারের গান রেকর্ড করার সাহস করছি। তবে এর পরে কোনও সাংবাদিক সম্মেলনে বা অন্য যে কোনও রিলিজে এই গানটা আমার গুণগুণ করতেও বোলো না। আমার সে সাহস নেই। তবে ওই ছবিটায় কাজ করা সবসময় আমার কাছে বিশেষ হয়ে থাকবে। মিঠুনদা আমার গানে লিপ দিয়েছিলেন। এটাও আমার কাছে বড় পাওয়া।'


সেই প্রথম সেই শেষ? ভবিষ্যতে আর কিশোর কুমারের গান গাওয়ার চেষ্টা করবেন না? হাসতে হাসতে রূপম বললেন, 'অনুষ্ঠানে ওনার গান গেয়েছি অনেক। কিন্তু আবার কিংবদন্তির গান রেকর্ড করার ধৃষ্টতা নেই আমার।'