কলকাতা: ছোট থেকেই তিনি কলকাতায় একা সফর করে অভ্যস্থ। বাসে-ট্রামে করে স্কুলে যেতেন, কলকাতা মানেই যেন ভেঙে পড়েও উঠে দাঁড়িয়ে আবার চলা শুরু। সেই গল্পই যেন বলে 'কলকাতা চলন্তিকা'। আর যাঁর কাছে কলকাতার অন্য নাম এগিয়ে চলা, তিনিই এই ছবির মুখ্যভূমিকায়। অভিনেতা সৌরভ দাস (Sourav Das)।


এই ছবিতে সৌরভের চরিত্রের নাম বাইচুং। বস্তির ছেলে। সেই চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে কীভাবে তৈরি হয়েছিলেন সৌরভ? অভিনেতা বলছেন, ''সমাজে যাঁরা তথাকথিত নিচু শ্রেণীর মানুষ যাঁরা, তাঁদের আমরা সবসময় রুক্ষ-সুক্ষ দেখি। কিন্তু তাঁদের মধ্যে আরও একটা জিনিস লুকিয়ে আছে যেটা কেউ দেখে না। সেটা হল সারল্য। মানুষগুলো এত মুখের ওপর কথা বলতে পারেন বলেই এত ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। আমি বাইচুং চরিত্রটার মধ্যে যেটা ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি সেটা সারল্য।'


আরও পড়ুন: Lokkhi Chele: 'আমার ছেলে স্কুলে গিয়ে বলে, ওর ধর্ম মানবতা', লক্ষ্মী ছেলে ছুঁয়ে গেল রূপম ও রূপকে


কলকাতা। হাজার আবেগ, অনুভূতি। সৌরভেরও তাই। অভিনেতা বলছেন, 'আমার মনে হয়, আমি আর কলকাতা হাত ধরাধরি করেই বেড়ে উঠেছি। বাবা-মা দুজনেই চাকুরিজীবী। আমায় স্কুলে দেওয়া নেওয়া করতে পারেননি বেশিদিন। একাই স্কুলে যাতায়াত করতাম। অনেকে বাবা-মাকে বকত বটে, কিন্তু ওঁদেরও কোনও উপায় ছিল না। এখন মা বলে, 'তুই ম্যাগি চাইতিস টিফিনে, তোকে করে দিতে পারিনি।' এখন মা-কে বলি, ভাগ্যিস তুমি দাও নি, ভাগ্যিস কলকাতাকে দেখে বড় হয়েছি। নাহলে, হয়তো শিখতাম না চরিত্রকে কিভাবে কল্পনা করতে হয়। আর যদি পরিচালক যখন চিত্রনাট্য শোনাচ্ছেন, তখন যদি চরিত্রকে কল্পনা করতে না পারি, তাহলে সেদিন যেন আমার মৃত্যু হয়।'


ইশা সাহা (Ishaa Saha)-র সঙ্গে এটা সৌরভের তৃতীয় কাজ। কেমন অভিজ্ঞতা হল? সৌরভ বলছেন, 'ইশা ইতিমধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করেছে একজন ভালো অভিনেত্রী হিসেবে। ওর সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি আমি। আমাদের সমীকরণটা খুব ভালো। যদি সহ-অভিনেত্রী ভালো কাজ করে, তাহলে এমনিতেই অভিনয়টা ভালো হয় যায়।'


পাভেলের ছবিতে সৌরভের চরিত্র এক বস্তিবাসীর। সেই চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে কী কী প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সৌরভ? অভিনেতা বলছেন, 'এক বস্তিবাসীর চরিত্রে কেবল অভিনয় নয়, তাঁর লুকটাকে ফুটিয়ে তোলাও বেশ চ্যালেঞ্জিং। নাহলে খুব ভালো অভিনয় করলেও, দর্শকেরা মনে করবেন, কী যেন অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। আমি মালয়ালি ছবি দেখতে শুরু করি, কারণ বাংলার থেকে মালয়ালি ছবিতেই এই ধরনের চরিত্র পাওয়া যায় বেশি। কিন্তু তারপরে দেখলাম, বাস্তব জীবনের চরিত্রদের থেকে অনেক বেশি সাহায্য পাচ্ছি।'