কলকাতা: প্রায় এক মাস ধরে টানাপোড়েন। শেষমেশ চলেই গেলেন লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar Death)। রবিবার মুম্বইয়ের হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। আর তাঁর মৃত্যুতেই ভারতীয় সঙ্গীত জগতের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের পতন ঘটল। এই ক্ষতি কোনও কিছুতেই মেটানো যাবে না বলে জানালেন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা (Haimanti Shukna)। তাঁর মতে, লতা মঙ্গেশকর তাঁর কাছে সাক্ষাৎ সরস্বতীই। লতার সান্নিধ্যে আসতে পারাকে সৌভাগ্য বলেও উল্লেখ করলেন তিনি।


রবিবার সুর সম্রাজ্ঞীর মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই টেলিফোনে এবিপি আনন্দকে নিজের প্রতিক্রিয়া জেনে ফেলেন হৈমন্তী শুক্লা। সুর সম্রাজ্ঞীর কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন, ‘‘উনি স্বয়ং মা সরস্বতী ছিলেন। ওঁর সঙ্গে কথা বলার, ওঁকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল আমার। আমরা বুঝি, মানুষ চিরকাল থাকে না। কিন্তু উনি তো মানুষ ছিলেন না! দেবী ছিলন। দেবী সরস্বতী।’’


সুর সম্রাজ্ঞীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি টেনে আনেন হৈমন্তী শুক্লা। বলেন, ‘‘এক মঞ্চে গাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এক বার মেদিনীপুরে এবং এক বার দুর্গাপুরে গেয়েছিলাম। বলেছিলেন, এখনও গান গাইতে উঠলে নাকি হাত—পা ঠান্ডা হয়ে যায় ওঁর। আমি শুনে অবাক হয়েছিলাম। বলে ছিলাম, কী বলছ দিদি? আর এক বার একটা গান শেষ করে ফিরে এলেন। জিজ্ঞেস করলেন ‘হৈমন্তী, ঠিক গাওয়া হয়েছে তো?’ কী বলব বুঝে উঠতে পারিনি।’’


আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar Death: থামল সুরঝঙ্কার, প্রয়াত লতা মঙ্গেশকর


সুদীর্ঘ শিল্পীজীবনে প্রায় ৩০ হাজার গান গেয়েছেন কোকিলকণ্ঠী লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু তাঁর মতো অমায়িক মানুষ দেখেননি বলে জানান হৈমন্তী শুক্লা। তাঁর কথায়, ‘‘লতাজি বলেই এক বার মাত্র কোরাসে গাইতে রাজি হয়েছিলাম। শুধু ওঁর পাশে থাকতে পারব বলে। কত কথা যে মনে পড়ছে। উনি তো স্বয়ং সরস্বতী। আমরা মেয়েরা যআঁরা গান করি, সবার তো ওঁকে দেখেই আসা। কী অসম্ভব জ্ঞান। অথচ কী অমায়িক। ওঁর বাড়িতেও গিয়েছি আমি। কিন্তু কেউ এত অনাড়ম্বর হতে পারেন, না দেখলে বোঝা যায় না।’’


শিল্পী হিসেবে দেশ-বিদেশ থেকে অজস্র পুরস্কার এবং সম্মান পেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। ভারত সরকার তাঁকে ‘ভারতরত্ন’, ‘পদ্ম বিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’। ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’-এ সম্মানিত করেছে। বাংলা, হিন্দি, মারাঠি-সহ প্রায় ৩৬টি ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর।