মুম্বই: শোকস্তব্ধ সুরের দুনিয়া। ৯২ বছর বয়সে থেমে গেল সুরেলা পথ চলা। সুরের জগতকে চিরবিদায় জানালেন লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। সুরের সরস্বতীর প্রয়াণে যেন এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল সঙ্গীত জগত। 


এখনও আট থেকে আশিকে প্রেমে ভাসায় 'লগ যা গলে', চোখে জল আনে আবেগের গান। থেমে গেল সেই দীর্ঘ সুরের যাত্রা। মাত্র ৫ বছর বয়সে শুরু হয়েছিল যে সুরের যাত্রা, তা থেমে গেল ৯২ বছর বয়সে। কেবল বলিউড নয়, বাংলাতেও গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। মন জয় করেছেন গোটা বিশ্বের। কালজয়ী কোকিলকণ্ঠ যখন থামল, তখনও কাটেনি বসন্ত পঞ্চমী।


বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ লতা মঙ্গেশকরের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় প্রভুকুঞ্জের বাসভবনে। বিকেল ৪টে নাগাদ নিয়ে যাওয়া হবে শিবাজি পার্কে। সন্ধে সাড়ে ৬টায় শেষকৃত্য। লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে ২ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল রাজ্যেও অর্ধদিবস ছুটি ঘোষণা। 


আরও পড়ুন: ৫ বছর বয়সে শুরু তালিম, ৩০ হাজারের বেশি গান রেখে গেলেন লতা মঙ্গেশকর


মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।  করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি তাঁকে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হন নবতিপর শিল্পী। তারপর থেকে ছিলেন ICU-তেই।প্রায় একমাস ধরে হাসপাতালে চলেছে লড়াই। গতকাল শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। শেষপর্যন্ত নিভে গেল জীবন-দীপ। মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওরে মৃত্যু, জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।


১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌরে জন্ম হয় লতা মঙ্গেশকরের। তাঁর বাবা দীনানাথ মঙ্গেশকর ছিলেন খ্যাতনামা মরাঠী, কোঙ্কনী সঙ্গীতশিল্পী এবং নাট্যশিল্পী। মাত্র ৫ বছর বয়সে বাবার কাছেই গানের তালিম শুরু হয় ছোট্ট লতার।



এরপর, মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তার আগে অবশ্য বাবার হাত ধরেই অভিনয় এবং গান শিখতে শুরু করে দিয়েছিলেন। ১৩-১৪ বছর বয়সেই প্রথম বার সিনেমায় গান গাওয়া। মরাঠি ছবিতে। মুম্বই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে প্রথম হিন্দি ছবিতে গান। ‘মজবুর’ ছবিতে।

 

লতাকে প্রথম হেমা বলে ডাকা হত। আগের নাম হেমা থাকলেও, বাবার ‘ভাব বন্ধন’ নাটকের ‘লতিকা’র চরিত্রে প্রভাবিত হয়ে হেমার নাম বদল করে রাখা হয় লতা। সময়ের সঙ্গে কিংবদন্তি হয়ে ওঠে সেই নাম, লতা। ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত একমাত্র মানুষ তিনি, জীবিত অবস্থায় যাঁর নামে পুরস্কার দেওয়া হত।