মুম্বই: ২৮ দিনের লড়াই শেষ। চিরবিদায় সুর-সম্রাজ্ঞী। বাগ্‍‍দেবীর বিসর্জনের দিনই চিরবিদায় নিলেন ৯২ বছরের ভারতরত্ন। রবিবার সকাল ৮টা বেজে ১২ মিনিটে দিকশূন্যপুরে রওনা দেন লতা মঙ্গেশকর। কিছুক্ষণ পরেই সর্বসমক্ষে আসে সেই দুঃসংবাদ। মুহূর্তের মধ্যে শোকবার্তা আসতে শুরু করে। একে একে হাসপাতালে শেষশ্রদ্ধা জানাতে আসেন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। শুরু হয় শেষকৃত্যের প্রস্তুতি।


রবিবার দুপুর ১.১৫ মিনিটে হাসপাতাল থেকে লতা মঙ্গেশকরের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাসভবনে। সেখানে সুর সম্রাজ্ঞীকে শেষশ্রদ্ধা জানান অমিতাভ বচ্চন। প্রভুকুঞ্জের বাইরে ভিড় করেন গুণমুগ্ধরা। বিকেল চারটেয় প্রভুকুঞ্জ থেকে শেষবারের মতো বেরিয়ে এল প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীর দেহ। জাতীয় পতাকায় মোড়া মরদেহ, ভক্তদের কান্না ভেজা শ্রদ্ধা আর ফুলের পাপড়ি বর্ষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হল শেষযাত্রা। ফুল দিয়ে মোড়া শকটে শায়িত লতা মঙ্গেশকরের মরদেহ। পিছনে হেঁটে হাজার হাজার মানুষ। রাস্তার দু’পাশে অসংখ্য মানুষের ভিড়। রাস্তা যেন তাঁকে শেষবারের মতো দেখার জন্য থমকে গিয়েছিল। যাত্রাপথে হাজি আলি, ওয়র্লি নাকা, সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির ছুঁয়ে ধীরে ধীরে শকট এগিয়ে যায় শিবাজি পার্কের দিকে। শিবাজি পার্কে পৌঁছনোর পরে লতা মঙ্গেশকরকে শেষশ্রদ্ধা জানান গুণমুগ্ধরা।


সন্ধে ৬ টা ১৫ মিনিটে শিবাজি পার্কে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পৌঁছন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, শেষশ্রদ্ধা জানান জাভেদ আখতার, শাহরুখ খান, সচিন তেন্ডুলকর সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তোপধ্বনি করে অন্তিম শ্রদ্ধা জানানো হয় শিল্পীকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় শেষকৃত্যের কাজ। ছিলেন ৮ জন পুরোহিত। তাঁরা বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে রীতি মেনে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। এরপর চিতায় অগ্নিসংযোগ করেন লতা মঙ্গেশকরের ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর।


যে শিবাজি পার্কে একম সময় সুরের মূর্ছনায় ভরিয়ে তুলেছিলেন, সেখানেই পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন সুর-সম্রাজ্ঞী। থেকে গেল তাঁর সব সুর, সব সৃষ্টি।