কলকাতা: মন খারাপ। বাবা প্রবীণ বাম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী করোনা আক্রান্ত। চিকিৎসা চলছে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আছেন আইটিইউ-তে। আপাতত স্থিতিশীল শারীরিক অবস্থা, জানালেন মেয়ে ঊষসী চক্রবর্তী। তিনি এখন কোয়ারেন্টিনে। এরই মধ্যে স্বস্তির খবর, তাঁর ও পরিচারিকার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে, এবিপি আনন্দকে ফোনে জানালেন তিনি।

শুক্রবার দুপুরে বাবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর ফেসবুকে পোস্ট করে জানান মেয়ে ঊষসী চক্রবর্তীই। বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ফেসবুক পোস্টে তিনি বাবাকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, দেখাশোনার জন্য কোনও করোনাযোদ্ধার সন্ধান করেন। শনিবার আবার তিনি এক আবেগপ্রবণ বার্তা পোস্ট করে জানান, ভাল আছেন বাবা। ক্ষীণ গলাতেই বলেছেন, করোনা কী, কত বড় বড় শত্রুর মুখোমুখি হয়েছেন জীবনে...উইল ফাইট।
ঊষসীর কথায়, “ ক্ষীণ গলাতে কিন্তু বিশ্বাসের সাথে বলেছেন will fight “...ধুর করোনা! কোনও ব্যাপারই না। এর থেকে বড় বড় শত্রুকে আমি হারিয়েছি সারা জীবনে অনেক বার।”



তিনি আরও লিখেছেন, শুক্রবারের পোস্টের পর অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে বাবাকে দেখাশোনা করার লোকের ব্যাপারে। কিন্তু এখনই লোকের প্রয়োজন হবে না, আইটিইউ থেকে বার করে বেডে দিলে তখন দরকার হবে। করোনা কালে চারিদিকে নেতিবাচক অনেক খবরের মধ্যেই নিজেকে শান্ত রেখেছেন ঊষসী। চিকিৎসকের উপর যথেষ্ট ভরসা রাখছেন, জানালেন তিনি।

আজ ঊষসী ফেসবুকে ফুয়াদ হালিমের সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কথা শেয়ার করে লেখেন, 'কোভিড আক্রান্তদের একটু সাহায্য করলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। '


জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়াল 'শ্রীময়ী'র জুন আন্টির ভূমিকায় অভিনয় করেন ঊষসী। জুন আন্টি ও শ্রীময়ীর হাইভোল্টেজ ড্রামার একনিষ্ঠ ভক্ত বাংলার হাজার হাজার দর্শক। জুন আন্টি কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার খবরে বেশ মন খারাপ তাদেরও। তাহলে কি জুনকে এখন দেখা যাবে না, বেশ কিছুদিন? ধারাবাহিকের প্রযোজক ও লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এবিপি আনন্দকে জানিয়েছেন, 'এই পরিস্থিতিতে যে কেউ যে কোনওদিন অসুস্থ হতে পারেন, কিংবা কোয়ারেন্টিনে যেতে পারেন। সেই কথা ভেবে সিরিয়ালের এপিসোড ব্যাঙ্কিং করা আছে। তাই এই মুহূর্ত থেকেই ঊষসীকে যে আর দেখা যাবে না, এমনটা নয়। তাছাড়া গল্পের আরও অনেকগুলি ট্র্যাক তো আছেই। তাই দর্শককে মিস করতে দেব না।'
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গেছে জুন আন্টিকে নিয়ে মিমে। খারাপ লাগছে?

'না একেবারেই নয়। মিম আমার খুবই পছন্দ। এতে করে বুঝি, আমার চরিত্রটিকে মানুষ ভালবাসছে, দর্শকের মনে দাগ কাটতে পেরেছি। আমাকে নিয়ে নতুন নতুন মিম না হলে বরং ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আমি তো নিজেও দুটো মিম শেয়ার করলাম আজ!'



কোয়ারেন্টিনে আছেন। খাবার-দাবার, প্রয়োজনীয় জিনিস কীভাবে পাচ্ছেন?
'অনলাইনে অর্ডার করছি। বন্ধুরা গেটে পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছে। আমার দরজার বাইরে চেয়ার রাখা থাকছে। তাছাড়া আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরা পৌঁছে দিচ্ছেন। আর আমাদের আবাসন, অভিষিক্তা বি টাইপের রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি অমরনাথবাবু ভীষণই সাহায্য করছেন। আমার সব বন্ধুরাই অসম্ভব হেল্পফুল।' জানালেন অভিনেত্রী।

অমরনাথ মুখোপাধ্যায় জানালেন, 'তাঁরা আবাসনের মধ্যে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন। শ্যামলবাবুর তো বটেই, যাঁদের পরিবারে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কেউ, তাঁদের বাড়িতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'

সুস্থ হয়ে ফিরুন বর্ষীয়াণ বাম নেতা, পর্দায় ভালয়-ভালয় ফিরুন কন্যা ঊষসী, অপেক্ষা তারই।