কলকাতা: 'রেনবো জেলি'-র হাত ধরে দর্শকদের সঙ্গে তাদের আলাপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, সেই ঘোতন আর পপিন্স বড় হয়ে উঠেছে। বাস্তবেও তারা প্রায় স্কুলের গন্ডি পার করে ফেলেছে। যেমন তাদের পর্দার জীবন বদলেছে, তেমনই জীবন বদলেছে বাস্তবেরও। এবার ঘোতন আর পপিন্সের হাতে এসে পড়েছে, 'পক্ষীরাজের ডিম'। কিন্তু বাস্তবে এই দুই কিশোর কিশোরী ঠিক কেমন? তারা কি অঙ্কে ভয় পায়? রূপকথায় বিশ্বাস করে? খোঁজ করল এবিপি লাইভ বাংলা (ABP Live Bangla)। 

সিনেমায় দেখানো হচ্ছে, ঘোতন অঙ্কে ভয় পায়। আর বাস্তবে? মহাব্রত বসু বলছে, 'একটা সময় অঙ্ক বুঝতে পারতাম না। এরপরে সেটা হয়েছিল সাইকোলজিতে। খাতায় কিছু সংখ্যা লেখা রয়েছে প্রশ্ন। তবে সেগুলো নিয়ে যে ঠিক কী করা উচিত, তা বুঝে উঠতে পারছি না। তবে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে দিয়েছি। ফলে অঙ্ক আর সাইকোলজি এই দুয়ের হাত থেকেই মুক্তি। এখন ইচ্ছা রয়েছে ভিস্যুয়াল আর্ট নিয়ে পড়ার।' ঘোতনের পর্দার সঙ্গী পপিন্স, অর্থাৎ অনুমেঘা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাব্রতর থেকে বয়সে একটু ছোটই। দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ছে। অনুমেঘা বলছে, 'বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছি। কম্পিউটার রয়েছে। অঙ্কে ভয় পেলেও, অঙ্ক করতে আমি ভীষণ ভালবাসি। ভবিষ্যতে ইচ্ছা রয়েছে অ্যাসট্রো ফিজিক্স নিয়ে পড়াশোনা করার।' দুই কিশোর কিশোরীরই পড়াশোনা নিয়ে এগোনোর ইচ্ছা, তাহলে সিনেমা? দুজনের কাছ থেকেই সমবেত উত্তর পাওয়া গেল, 'পড়াশোনার পাশাপাশি সুযোগ পেলে অবশ্যই অভিনয় করব।'

দুই স্কুল পড়ুয়া বড়পর্দায়। মহাব্রত আর অনুমেঘার বন্ধুরা কী বলছে? হাসতে হাসতে কিশোরীর জবাব, 'বন্ধুরা তো মুখিয় রয়েছে। তবে যে সপ্তাহে সিনেমা রিলিজ, সেই সপ্তাহেই পরীক্ষা শুরু। কিন্তু বন্ধুরা বলেছে, সবাই দল বেঁধে দেখতে যাবে। এই আগ্রহটা দেখে ভীষণ ভাল লাগছে।' মহাব্রত বলছে, 'বন্ধুরা প্রথমে জানত না। ট্রেলার দেখে আমায় সবাই ফোন করে বলছে, 'ওখানে তুই আছিস!' 'রেনবো জেলি'র সময় ও বন্ধুরা খুব উৎসাহ দিয়েছিল। এবারেও তাই।'

'রেনবো জেলি' থেকে 'পক্ষীরাজের ডিম', কাজের অভিজ্ঞতায় কী কী বদল এল? মহাব্রত বলছে, 'দুটোর অভিজ্ঞতাই একেবারে আলাদা। রেনবো জেলি-র সময় খুব ছোট ছিলাম। তখন মজাটা একরকম ছিল। এখন মজাটা অন্যরকম।' অনুমেঘার অনুভূতিতে, 'রেনবো জেলি-র সময় খুবই ছোট ছিলাম। সবটা বুঝতামই না। এখন অনেকটা বুঝতে শিখেছি। আর এটা আউটডোর শ্যুটিং। শিমুলতলায় শ্যুটিং। প্রথমবার বাইরে গিয়ে শ্যুটিং করা।'  আর শ্যুটিং মানেই তো পড়াশোনায় ছাড়! হেসে ফেলে মহাব্রতর উক্তি, 'সেটা তো বটেই। একটা নতুন জায়গা, শ্যুটিং.. দারুণ পরিবেশ।'

অনির্বাণের সঙ্গে কাজ করার কেমন অভিজ্ঞতা হল দুজনের? মহাব্রত বলছে, 'অনির্বাণদা তো অনির্বাণদা। ভীষণ সহযোগীতা করেছেন। কাজ করতে কখনও কোনও সংকোচ হয়নি। খুব নিজের বলে মনে হয়েছে।' অনুমেঘার প্রিয় অভিনেতাদের তালিকায় অনির্বাণ আগে থেকেই রয়েছেন। সে বলছে, 'শুরুতে যখন শুনেছিলাম অনির্বাণদা এই চরিত্রটা করবে, ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। তবে শুরুতে, সেটে সামনে থেকে দেখে মনে হয়েছিল, এত বড় অভিনেতার সঙ্গে কাজ করব! কিন্তু অভিনয় করতে গিয়ে বুঝেছি, উনি ভীষণ সাহায্য করেন। কখনও কোনও কিছু বলার থাকলে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেন। শ্যুটিংয়ের মধ্যেও অনেক কথা হত। খুব বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেছেন।'

আর পরিচালক সৌকর্য্য ঘোষালের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা? অনুমেঘা বলছে, 'কোনও সমস্যা হওয়ার আগেই দাদা সেটা সমাধান করে দিতেন। দাদা না থাকলে কাজটা করতেই পারতাম না।' একই সুরে মহাব্রত বলছে, 'দাদা তো নিজেরই লোক। এত আপন করে নিয়েছিলেন.. তবে হ্যাঁ, বকাঝকাও করেছেন।' সেটে কে বেশি বকুনি খেত? মহাব্রতর সহাস্য স্বীকারোক্তি, 'আমিই খেতাম। কারণ আমিই ভুল করতাম। কিন্তু বকাটার মধ্যে একটা আদর রয়েছে।' অনুমেঘা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল, 'না ভুল আমিও করতাম।'

গল্পের মতো, বাড়িতে সত্যিই যদি একটা পক্ষীরাজ থাকত? মহাব্রত বলছে, 'পক্ষীরাজ বললেই আমার একটা ছবি মাথায় ভাসে। একটা ঘোড়া চাঁদের দিকে উড়ে যাচ্ছে। সত্যিই একটা পক্ষীরাজ পেলে আমি চারিদিকে ঘুরে বেড়াতাম। কখনোই বাড়িতে থাকতাম না।' সুরে সুর মিলিয়ে অনুমেঘাও বলল... 'সত্যি দারুণ হত। ফ্রি-তে চারিদিকে ঘুরে বেড়ানো।'