কলকাতা: ভ্যাকসিনের নিয়ে সচেতনতা প্রচারে গিয়ে আপাতত নিজেই বিপদে পড়েছেন মিমি চক্রবর্তী। কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনচক্রের শিকার হয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার কসবায় যে ভ্যাকসিনেস ড্রাইভের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে নিজে গিয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন অভিনেত্রী সাংসদ। উদ্দেশ্য ছিল সচেতনতা প্রচার। অভিনেত্রীকে ক্যাম্প থেকে ভ্যাকসিন নিতে দেখলে মনের জোর পাবে সাধারণ মানুষ। কিন্তু আপাতত মিমির মনে প্রশ্ন জাগছে, মঙ্গলবার কোভিশিল্ড বলে শরীরে যে গেল তা আদৌ কি ভ্যাকসিন?


মঙ্গলবার কসবার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভ্যাকসিনেসন ড্রাইভের আয়োজন করা হয়। সচেতনতা প্রচারে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মিমি চক্রবর্তীকেও। সেই ক্যাম্পে গিয়েই নিজের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেন মিমি। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কোনও সার্টিফিকেট না আসায় সন্দেহ হয় মিমির। খোঁজ নিয়ে জানেন, ওই ক্যাম্পে ভ্যাকসিন নেওয়া কারোরই সার্টিফিকেট আসেনি। এরপরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মিমি।


পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে, দেবাঞ্জন দেব নামে ওই ব্যক্তি ভুয়ো আইএএস অফিসার ও জয়েন্ট কমিশনার অফ কলকাতা কর্পোরেশনের পরিচয় দিয়ে ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভের আয়োজন করেছিলেন। পুরসভার অনুমতিও নেওয়া হয়নি অনুষ্ঠানের আগে। কার্যত বেনিয়মে ব্যবহার করা হয়েছে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটিকেও। ঘটনায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


কসবাকাণ্ডের পর আজ প্রথমবার ক্যামেরার সামনে আসেন মিমি। বলেন, 'গতকাল থেকে আমার কাছে প্রচুর ফোন আর মেসেজ আসে। সবাই জানতে চায় আমি কেমন আছি। আমি সবাইকে জানাতে চাই, একদম সুস্থ আছি আমি। গতকাল আমার সঙ্গে অনেকে ভ্য়াকসিন নিয়েছিলেন, তবে আমি যদি সুস্থ থাকি, আমার ভরসা আপনারাও সুস্থ থাকবেন। কেবল ভয় পাবেন না। স্যাম্পেল চলে গিয়েছে। আমার মনে হয় ওই ভ্যাকসিনে ক্ষতিকারক পদার্থ কিছু ছিল না। তবে সম্ভবত ভ্যাকসিনও ছিল না। তবে দেবাঞ্জন দেব নামে এই লোকটি আরও অনেকগুলো ক্যাম্প করেছে ইতিমধ্যেই। যাঁরা এমন কোনও ক্যাম্পে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁরা কলকাতা কর্পোরেশন বা কাছাকাছি পৌরসভায় যোগাযোগ করুন। পরবর্তী পদক্ষেপ কী তা জানুন। নিজের শরীরের খেয়াল রাখুন।'


সেইসঙ্গে মিমি আরও বলেন, 'যাঁরা ভ্যাকসিনেসন ক্যাম্পে যাচ্ছেন তাঁরা খেয়াল করবেন, ভ্যাকসিনেসন হওয়ার পরেই মোবাইলে মেসেজ আসে। সেটা আসতে দেরি হলেও, ক্যাম্প থেকেই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আমি সেই সার্টিফিকেটটা পাইনি বলেই অভিযোগ করি।'



অন্যদিকে কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন কেন্দ্রে দেওয়াই হয়নি কোভিশিল্ড কিংবা কোভ্যাক্সিন। কসবা প্রতারণা কাণ্ডে এমনই বিস্ফোরক দাবি করল কলকাতা পুরসভার। এ প্রসঙ্গে ডেপুটি সিএমও এইচ জানিয়েছেন, সাধারণত কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের ভায়ালে ব্যাচ নম্বর, এক্সপায়ারি ডেট, ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট লেখা থাকে। তবে দেবাঞ্জনের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া ভায়ালের কোনওটাতেই ছিল না ব্যাচ নম্বর, এক্সপায়ারি ডেট। ছিল না ম্যানুফ্যাকচারিং ডেটও। শিশির আয়তনও তুলনামূলক ছোট এবং লেখা ছিল না কোম্পানির নম্বরও।