কলকাতা: দুর্গোৎসবের প্রেক্ষাপটে না বলা কিছু অভিমানী কথার মনকেমনের গল্প বলবে 'বিজয়ার পরে'। প্রত্যেক সাধারণ মানুষের জীবনেই কিছুই না বলা কথা থাকে। কেউ সময়ের অভাবে বলতে পারেন না তো কেউ শোনার মানুষের অভাবে বলে উঠতে পারেন না। দৈনন্দিন জীবনের সেই সকল অলকানন্দা, আনন্দ, মৃন্ময়ী, মিজানুরের গল্পই শোনা যাবে নতুন পরিচালক অভিজিৎ শ্রী দাসের আগামী ছবি 'বিজয়ার পরে... autumn flies'-এ। 


ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar), দীপঙ্কর দে (Dipankar De), স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee) ও মীর আফসার আলিকে (Mir Afsar Ali)। ছবিটি পরিচালনা করছেন অভিজিৎ শ্রী দাস (Abhijit Sri Das)। 


সময় যত ফুরিয়ে আসে, প্রত্যেক মানুষের জীবনেরই কিছু গল্প বলার তাগিদ ক্রমশ বাড়তে থাকে। শব্দরা কথা খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, অনেকসময়েই শ্রোতা থাকে কিন্তু সেই কথাগুলো তাদের কানে প্রবেশ করে না, বা হয়তো গল্পরাই ভাষা পায় না। এভাবেই দীর্ঘ জীবনের শেষ সঞ্চয়গুলোকে একত্রিত করে কাছের মানুষগুলোর মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আত্ম সন্তুষ্টির পথ খুঁজতে থাকেন দুই মানুষ, অলকানন্দা ও আনন্দ। সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের বিচ্ছিন্ন প্রিয়জনেরাও। দুর্গাপুজোর প্রেক্ষাপটেই ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোকে খোঁজার চেষ্টা করেন তাঁরা। দীর্ঘ সময় পর মেয়ে মৃন্ময়ীও ফিরে আসে বাড়িতে। সঙ্গে মিজানুর। ছেঁড়া সম্পর্কগুলোকে ফের সেলাই করতে থাকেন দুজনে। কিন্তু এই সবকিছুর মধ্যেই নিজের মতো করে হঠাৎ কিছু ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে থাকে অলকানন্দা। বাস্তব ও অবাস্তবের মাঝে দাঁড়িয়ে চলে জীবনের কঠিন সারাংশের উপসংহার অনুধাবনের কাজ। অপেক্ষা চলতে থাকে ছবিটা খানিক বদলে ফেলার। কিন্তু সেই বদল কি আদৌ সম্ভব? না কি অপেক্ষাতেই দিন ফুরোয়? এমনই কিছু অপেক্ষমান জীবনের গল্প বলবে এই ছবি।


আরও পড়ুন: Ritabhari Chakraborty Update: কনের সাজে 'ওগো বধূ সুন্দরী' অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী, ভিডিও পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়


ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা মীরকে। তাঁর কথায়, 'এই ছবিতে কাজ করার অন্যতম পাওনা হচ্ছে বহু বছর পর আমি আবার স্বস্তিকার সঙ্গে কাজ করতে পারছি। শেষ ওঁর সঙ্গে ২০১৭ সালে "মাইকেল" ছবিতে কাজ করেছিলাম। এই ছবিতে স্বস্তিকার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছি আমি। পুজোর প্রেক্ষাপটে একটি পারিবারিক ছবি এটি। একাধিক চরিত্র রয়েছে ছবিতে। এর আগে কখনও আমি মমতা শঙ্করের সঙ্গে কাজ করিনি, ফলে এটা নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। অভিজিৎ একজন নতুন পরিচালক। কিন্তু অভিনেতাদের থেকে কী চাই সেই ছবি ওঁর কাছে খুব স্বচ্ছ। ছবিটির জন্য অপেক্ষায় রয়েছি। যা হবে সব "বিজয়ার পরে..."।'


পরিচালকের কথায়, 'দীর্ঘ সময় ধরে বিজ্ঞাপনের ছবি নির্মাণ করতে গিয়ে অনেকটা সময় মানুষের প্রতিদিনের জীবন বৈচিত্র্যের গল্প খুঁজতে হয়েছে। লিখতে হয়েছে স্বল্প পরিসরে। সম্পূর্ণটা না বলতে পারার খামতি থেকেই যাচ্ছিল। তাঁদের গল্প শুনতে গিয়ে মনে হয়েছিল তারা সবটা বলছেন না বা বলার মতো লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই একদিন অনিয়মেই বেরিয়ে পড়লাম তাঁদের গল্প খুঁজতে বা বলা ভাল শুনতে। যাঁদের কথা কেউ শোনে না, মনযোগ দেয় না। তাঁদেরই গল্প বলবে এই "বিজয়ার পরে"।'


দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞাপনের ছবি তৈরির কাজ করেছেন পরিচালক। ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রণজয় ভট্টাচার্য।