তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: সল্টলেকের এই অফিসের ৯ তলায় অন্যান্যদিন কর্মব্যস্ততা থাকলেও, কর্মীদের আজ ছুটি। তবে কর্মব্যস্ততার ছুটি নেই। অফিস জুড়ে ক্যামেরা, মনিটর, রেকর্ডার... অ্যাকশন-কাট বলছেন রাজ চক্রবর্তী (Raj Chakraborty)। আর অফিসের একটা কিউবিকলে মুখোমুখি বসে শট দিচ্ছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী (Ritwick Chakraborty) ও মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। বাবা-ছেলের সম্পর্কের সমীকরণে যে গল্প তৈরি হচ্ছে, তারই শ্যুটিং সেটে হাজির হল এবিপি লাইভ (ABP Live)। 


সুস্থ হয়ে ফের শ্যুটিং ফ্লোরে ফিরেছেন মিঠুন, তবে তাঁর পারফরম্যান্স দেখে বোঝার উপায় নেই। শট বা সংলাপ বলা পছন্দ না হলে, কাট বলছেন নিজেই। বাবা-ছেলের কথোপকথনের একটা দৃশ্যের শ্যুটিং চলছে তখন। স্ত্রীর অস্ত্রোপচারের জন্য ছেলে ঋত্বিকের কাছে টাকা চাইতে এসেছেন বাবা মিঠুন। টাকা দিতে নারাজ ঋত্বিক অজুহাত দিচ্ছেন। শট শেষ হলে রাজের গলা শোনা গেল, 'দাদা, এক্সলেন্ট, দুর্দান্ত।' তারপরেই মনিটারের সামনে থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়ে এলেন পরিচালক। বললেন, 'এই শটটার পরে ঋত্বিকের তো ২ জন বডিগার্ড লাগবে। এত ভাল একজন বাবার সঙ্গে এইরকম ব্যবহার!' এরপর ঋত্বিকের উদ্দেশে বললেন, 'যে যতই পয়সা দিক.. এই অভিনয় কিন্তু আর কোথাও করবি না। অনবদ্য'


শ্যুটিংয়ের ফাঁকে কয়েক মুহূর্ত কথা বলার সময় হল মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে। রাজের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে মিঠুনের মুখে একটাই লাইন, 'হি ইজ় মাই বেস্ট বয়' (রাজ আমার সেরা ছেলে)। শরীরের কথা জিজ্ঞাসা করতেই মিঠুন বললেন, 'আমি তো সুস্থ, আপনারাই অসুস্থতার কথা লিখছেন।' চরিত্রের মধ্যে রয়েছেন বলেই খুব বেশ কথা বলতে চাইলেন না তিনি। বললেন, 'শ্যুটিং শেষে বলার মত অনেক অভিজ্ঞতা থাকে। তখন না হয় সবার সঙ্গে কথা বলা যাবে।'


আর রাজ? তিনি তো মনিটরের সামনে মিঠুনের শট দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠছেন, হাততালি দিচ্ছেন বার বার। তার মাঝেই সময় পেয়ে এবিপি লাইভকে বলে গেলেন, 'আমরা তো অপেক্ষা করে থাকি, কখন মিঠুনদার ক্লোজ শটগুলো নেব। ওঁকে অভিনয় করতে দেখার অভিজ্ঞতাটাই দুর্দান্ত। সবসময় ফ্লোরে সময়ের আগে আসেন উনি। ওঁর আমার সঙ্গে কাজ করে হয়তো ভাল লেগেছে, মনে হয়েছে আমি গুছিয়ে কাজ করি, তাই হয়তো বেস্ট বয় কথাটা বলেছেন। এটা আমার কাছে বিশাল পাওয়া।'


শ্যুটিং করতে করতে নাকি মিঠুনের চোখের দিকে তাকাতে পারছিলেন না ঋত্বিক। শট কাটতেই বলছিলেন, 'সংলাপ বলতেই খারাপ লাগছে। মিঠুনদা.. তোমার সঙ্গে এত খারাপ ব্যবহার করছি'। এবিপি লাইভের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সেই ঋত্বিকেরই চোখে মুখে যেন খুশির ঝলক। স্বপ্ন সত্যি হওয়ার আনন্দ। ঋত্বিক বলছেন, 'আপামর ভারতবাসীর কাছে মিঠুনদা যা, আমার কাছেও তাই। ওঁর সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ হয়েছে, এটা ঘটার পরেও যেন বিশ্বাস করতে সময় লাগে।'


ফ্লোরে পরিচালক আর বর্ষীয়ান অভিনেতা, দুজনের দুই ভিন্ন রাজনৈতিক মত। ঋত্বিক কখনও তাঁদের দুজনের মধ্যের রাজনৈতিক আলোচনা শুনেছেন? অভিনেতা বলছেন, 'এঁঁরা দুজনেই ভীষণ প্রফেশনাল। কাজ বোঝেন কেবল। শ্যুটিং ফ্লোরে কাজের বাইরে কথা বলার সময়ই হচ্ছে না।'


আরও পড়ুন: New Film Announcement: প্রথমবার পর্দায় সোহম-মধুমিতা-পরীমণি একসঙ্গে, 'ফেলু বক্সী' ছবির নাম ঘোষণা