মুম্বই: ‘আদিপুরুষ’ ছবিতে তিনি ‘রাবণ’ এর চরিত্রে অভিনয় করছেন। ছবিটি নিয়ে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া কয়েকটি সাক্ষাত্কারের একটিতে তাঁর কিছু মন্তব্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে দেখে ইতিমধ্য়েই ক্ষমা চেয়েছেন সইফ আলি খান। তিনি সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, নতুন ছবিতে রাক্ষসরাজ রাবণের মানবিক চেহারা তুলে ধরা হবে, এমনকী তার সীতাহরণের পিছনে যুক্তি ছিল, তাও বলা হবে। দেখানো হবে, লক্ষণ তাঁর বোন শূর্পনখার নাক কেটে দেওয়াতেই রাবণ বদলা নিতে সীতাহরণ করেছিলেন। এতেই অনেকে নিন্দায় মুখর হয়েছেন। সইফও সুর বদলেছেন। কিন্তু তাতেও তিনি রেহাই পাচ্ছেন না।


এবার প্রবীণ অভিনেতা মুকেশ খন্না একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, চলচ্চিত্র নির্মাতারা আমাদের ধর্মকে হেয় করতে ছবি বানাচ্ছেন। অতি সম্প্রতি লক্ষ্মী বম্ব বিস্ফোরণ হয়েছে। আরেকটা আক্রমণ চালানো হচ্ছে। বিখ্যাত শিল্পী সইফ আলি খান এক সাক্ষাত্কারে একটা আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করে বলেছেন, বড় বাজেটের ছবি আদিপুরুষ-এ লঙ্কেশ রাবণের চরিত্রে অভিনয় তাঁর কাছে এক বিরাট আকর্ষণের ব্যাপার হবে। তাতে রাবণকে খারাপ নয়, মানবিক, গ্রহণযোগ্য চরিত্র বলে দেখানো হবে। আমরা ওকে দয়াবান হিসাবে দেখাব। সীতাহরণকেও যুক্তিসঙ্গত বলে তুলে ধরব। জানি না কেন সইফ ভাবছেন, কাজটা এত সহজ। লঙ্কেশ কোনও বল নয় যে, যেমন খুশি ব্যাট চালানো যায়। এটা কি বলব, অপরিপক্কতা না বোকামি? ওরা জানে না, দেশের কোটি কোটি ভারতবাসীর বিশ্বাস নিয়ে ছেলেখেলা করছে অথবা জেনেবুঝে সজ্ঞানেই এটা করছে। নাকি বলব, এটা ডিরেক্টর প্রডিউসারের ঔদ্ধত্য, যিনি নিজেকে বুদ্ধিজীবী বলেন, যাঁর এখনও এধরনের ছবি করার বাসনা আছে! অন্য ধর্মের চরিত্রগুলি নিয়েও এমন ছেলেখেলার চেষ্টা করুন না। খারাপকে ভাল আর ভালকে খারাপ বলে দেখান। আপনাকে পিটুনি দেবে ওরা। রাম যেমন রাবণ হতে পারেন না, তেমনই রাবণও রাম হতে পারেন না। তাহলে রাবণকে দয়াবান দেখানোর এই চেষ্টা কেন? এর পিছনেও কোনও উদ্দেশ্য আছে? নাকি এইসব লোকের ছবি প্রমোশনের প্রয়াস? বলতে পারব না। মানুষ নিজেই স্থির করবেন। তবে আমার খারাপ লেগেছে বলেই বলছি। আপনারাও ভেবে দেখুন, ভাল না খারাপ লেগেছে।
সইফের ক্ষমা চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন ব্রেকিং খবর হল, সইফ লিখিত ভাবে নিজের মন্তব্য়ের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। বাঃ ব্রিটিশরা ‘সরি’ নামে একটা দারুণ শব্দ বের করেছে। তির, বোমা ছুঁড়ে মারুন, কাউকে ঘুষি মারুন, তারপর সরি বলুন। কিন্তু আমরা অনুমোদন করছি না। কথাটা বলার আগে কেন ভাবেন না?
সইফ নিজের বক্তব্যে কাউকে আঘাত দিতে চাননি, ‘কোনও বিকৃতি না করে’ ছবিতে কাহিনি বলা হবে বলে জানিয়েছেন। সংশোধিত বক্তব্যে তিনি বলেছেন, এক সাক্ষাত্কারে আমার বক্তব্যে বিতর্ক হয়েছে, লোকে আঘাত পেয়েছেন বলে জেনেছি। আমার অভিপ্রায় কখনই এমনটা ছিল না। আন্তরিক ভাবে প্রত্যেকের কাছে ক্ষমা চেয়ে আমার বিবৃতি প্রত্যাহার করছি। ভগবান রাম সবসময় আমার কাছে ন্যায়, নীতি, সত্য, সাহসিকতার প্রতীক। আদিপুরুষ মন্দের বিরুদ্ধে ভালর জয়ের উদযাপন নিয়ে, গোটা টিম কোনওরকম বিকৃতি না ঘটিয়েই মহাকাব্যকে তুলে ধরতে একযোগে কাজ করছে।