মুম্বই: জেলে বসেই টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার। সর্বসমক্ষে ফের চরম পরিণতির হুমকি। গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের নিশানায় ছিলেন অভিনেতা সলমন খান। আর তাতেই ফের নড়েচড়ে বসল মুম্বই পুলিশ। সলমনের জব্য বরাদ্দ নিরাপত্তা ফের পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন বুঝলে তা বাড়ানো হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে (Salman Khan's Security)। 


সলমনকে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে, দাবি লরেন্সের


এবিপি নিউজের 'অপারেশন দুর্দান্ত' অনুষ্ঠানে জেল থেকে সাক্ষাৎকার দেন লরেন্স (Lawrence Bishnoi)। সেখানে খোলাখুলিই সলমনকে হুমকি দিতে শোনা যায় তাঁকে। লরেন্স জানান, জাম্বেশ্বরজির মন্দিরে গিয়ে সলমনকে বিষ্ণোই সমাজের মানুষের সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় চরম পরিণতি হবে অভিনেতার। 


লরেন্সের বক্তব্য, "সলমন খানকে নিয়ে আমাদের সমাজে ক্ষোভ রয়েছে। আমাদের সমাজকে চরম অপমান করেছেন উনি। ওঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল বটে। কিন্তু নিজে থেকে উনি ক্ষমা চাননি আমাদের কাছে। ক্ষমা না চাইলে চরম ফল ভুগতে হবে ওঁকে। কারও উপর আর নির্ভর করে বসে থাকব না আমি।"



ছোট্ট বয়স থেকেই সলমনের উপর রাগ পুষে রেখেছেন বলেও জানান লরেন্স। তিনি বলেন, "ছোট্ট থেকে ওঁকে নিয়ে ক্ষোভ পুষে রেখেছি। আজ হোক বা কাল, ওঁর অহঙ্কার ভাঙবই। আমাদের দেবীর মন্দিরে আসে ক্ষমা চাইতে হবে ওঁকে। আমাজের সমাজ যদি ক্ষমা করে, তাহলে আর কিছু বলব না আমি।"


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: প্রচণ্ড ব্যস্ত শাহরুখ, তাই দেবই ভরসা! অভিনব প্রস্তাব মমতার


সলমনকে নিয়ে লরেন্সের এই ক্ষোভের কারণ অভিনেতার বিরুদ্ধে দায়ের কৃষ্ণসার হরিণ মামলাকে ঘিরে। ১৯৯৮ সালে 'হম সাথ সাথ হ্যায়' ছবির শ্যুটিংয়ের সময়  সলমন এবং ছবির কলাকুশলীরা শিকারে বেরিয়ে একটি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে বিষ্ণোই সমাজের তরফে মামলা দায়ের হয়। তাতে জোধপুর আদালত সলমনকে পাঁচ বছরের কারাবাস শোনায়। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আসেন অভিনেতা। 


এমনিতে কৃষ্ণসার হরিণ ভারতীয় বণ্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন ১৯৭২ দ্বারা সংরক্ষিত বিরল প্রাণী। বিষ্ণোই সমাজের কাছে এই হরিণ আবার পুজ্যও। জন্মসূত্রে লরেন্স বিষ্ণোই সমাজেরই একজন। পঞ্জাবের গায়ক সিধু মুসেওয়ালাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে হত্যার ঘটনায় জেলবন্দি লরেন্স। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৮ সালেই সলমনকে খুন করতে চেয়েছিলেন তিনি। 


লরেন্স জানিয়েছেন, পানভেল ফার্মহাউসের কাছাকাছি জায়গায় সলমনকে খুনের পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। একাধিক বার ওই ফার্মহাউস এবং সংলগ্ন এলাকায় রেইকিও করে এসেছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, লরেন্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, গাড়ি দুর্ঘটনা মামলার পর থেকে অত্যন্ত ধীরগতিতে চলে সলমনের গাড়ি। তা-ও জানা ছিল লরেন্স এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের। ফার্মহাউসে গেলেও, সলমনের সঙ্গে সবসময় দেহরক্ষী শেরা থাকেন বলেও জানতেন তাঁরা।


বর্তমানে Y+ স্তরের নিরাপত্তা পান সলমন


তবে সলমন এবং তাঁর বাবা সেলিম খানকে লেখা হুমকির চিঠিতে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি লরেন্সের, যাতে সলমনের পরিণতিও সিধুর মতো হবে বলে লেখা ছিল। হাঁটতে বেরিয়ে ওই চিঠি হাতে পেয়েছিলেন সেলিম। পুলিশের হাতে তা তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তার পরই সলমনকে Y+ স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হয় মুম্বই পুলিশের তরফে। খোলাখুলি ফের লরেন্স হুমকি দেওয়ায়, তা আরও আঁটোসাটো করার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে।