মুম্বই: ‘আপ কি কসম’, ‘চোর মাচায়ে শোর’, ‘পাত্থর কে সানাম’, ‘ঝিল কে উস পার’, ‘জিগরি দোস্ত’-এর মতো সত্তরের দশকের একাধিক ছবিতে অভিনয় করা লাস্যময়ী মুমতাজের কথা মনে পড়ে? আজ ছিল তাঁর ৭০ বছরের জন্মদিন। মুমতাজ বলতে দর্শক মনে যে সমস্ত হিট গানগুলো এক নিমেষে ঝলসে ওঠে, তারমধ্যে রয়েছে ‘বিন্দিয়া চমকেগি’, ‘জয় জয় শিবশঙ্কর’, ‘আজ কাল তেরে মেরে পেয়ার কে চর্চে হ্যায় হার জবান পর’, ‘ইয়ে রেশমি জুলফে’র মতো কিছু সৃষ্টি।


রাজেশ খন্না, দেব আনন্দ, অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে জুটি বেঁধে একাধিক ছবিতে অভিনয় করা এই সুন্দরীর প্রেমে শোনা যায় একসময় পাগল ছিলেন শাম্মি কপূর, জিতেন্দ্র-র মতো অভিনেতারা।এঁদের সঙ্গেও পর্দায় জুটি বেঁধেছেন মুমতাজ। তবে মুমতাজের প্রতি শাম্মি বা জিতেন্দ্রর এই দুর্বলতা কোনওদিনই তেমন প্রকাশ্যে আসেনি।

মুমতাজের বাবা-মা ছিলেন ইরানের বাসিন্দা। তবে মুমতাজের জন্মের এক বছরের মধ্যে অভিনেত্রীর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

মূলত, বিচ্ছেদের পর মুমতাজ চলে আসেন তাঁর মামারবাড়িতে। সেসময় তাঁদের মারাত্মক অর্থকষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছিল। তাই পরিবারকে বাঁচাতে মুমতাজ ও তাঁর বোন মালিকা পা বাড়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে।

মুমতাজ তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবে। ‘সংস্কার’ ছবির হাত ধরে ১৯৫২ সালে অভিনেত্রী সম্পূর্ণভাবে বড়পর্দায় পা রাখেন।

তবে ১৯৬৩ সালে দারা সিংহের সঙ্গে কাজের সুবাদেই বলিউড থেকে একাধিক বিগ বাজেট ছবির প্রস্তাব পেতে শুরু করেন মুমতাজ। এমনকি সেই সময়ের হিসেবে মুমতাজ যথেষ্ট ভাল পারিশ্রমিকও পেয়েছেন। প্রতি ছবি পিছু আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন মুমতাজ। তবে মূলধারার ছবিতে আসার আগে বহু বি-গ্রেড ছবিতেও কাজ করতে হয়েছে মুমতাজকে।শোনা যায় এই মুমতাজের প্রেমে শাম্মি কপূর এতটাই পাগল ছিলেন, যে তিনি মুমতাজকে বিয়ে পর্যন্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেইসময় প্রেম-ভালবাসার কোনও সময়ই ছিল না মুমতাজের কাছে। তাই তিনি বিষয়টা নিয়ে সেভাবে ভাবেনইনি। মুমতাজের দাবি, তখন তাঁর মাত্র আঠারো বছর বয়স ছিল। শাম্মি চেয়েছিলেন মুমতাজ বিয়ের পর কেরিয়ার থেকে সরে আসুক। তাতেই রাজি ছিলেন না অভিনেত্রী। তবে জিতেন্দ্রকে মুমতাজ পছন্দ করতেন, ধর্মেন্দ্র তাঁর কাছে একজন আকর্ষণীয় পুরুষ ছিলেন। মুমতাজের কথায় দেব আনন্দের মতো হ্যান্ডসাম পুরুষ তিনি খুবই কম দেখেছেন। তবে নিজের সহ-অভিনেতাদের পছন্দ করা মানে তাঁদের সঙ্গে প্রেম বা বিয়ে করা নয়, মত মুমতাজের।

মাত্র সাতাশ বছর বয়সে, নিজের কেরিয়ারের একেবারে শীর্ষে থাকার সময় ব্যবসায়ী ময়ূর মাধওয়ানিকে বিয়ে করেন মুমতাজ। তাঁর দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এরমধ্যে একজন অভিনেতা ফারদিন খানকে ২০০৫ সালে বিয়ে করেন।