কলকাতা: ওয়েবসিরিজ অভিনয় করে তিনি হাত পাকিয়েছেন ইতিমধ্যেই। পেয়েছেন জনপ্রিয়তাও। কিন্তু এই প্রথম ওয়েবসিরিজে একজন দুঁদে পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করছেন রাজদীপ গুপ্ত। শুধু কী তাই? ছবির পরিচালক ও অভিনেতা খোদ ছিলেন অঞ্জন দত্ত! প্রথম প্রথম একটু ভয় লেগেছিল বটে... কিন্তু ‘মার্ডার ইন দ্য হিলস’ –এর গোটা সফরটা অনেক কিছু শিখিয়ে গেল রাজদীপকে।
এর আগে প্রায় সমস্ত ওয়েবসিরিজেই কমেডি রোলে দেখা গিয়েছিল রাজদীপকে। কী করে নিজেকে সিরিয়াস রোলের জন্য তৈরি করলেন অভিনেতা? রাজদীপ বলেছেন, ’অঞ্জনদা (অঞ্জন দত্ত) একজন খুব ভালো শিক্ষক। আমার বিশ্বাস ছিল যে উনি ঠিক আমায় দিয়ে কাজটা করিয়ে নেবেন। আমায় অনেক রেফারেন্স ভিডিও দেখিয়েছিলেন। আর আমায় দিয়ে ভালো কাজ করিয়ে নেওয়ার কৃত্বিত্ব ৭০ শতাংশ অঞ্জনদারই। আর বাকিটা আমার সহ অভিনেতা অভিনেত্রীদের। সবাই এতটাই ভালো অভিনয় করেছেন, যে ওদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয়টা করতে হয়েছে।‘
সেই লুক সেট থেকে শুরু করে দার্জিলিং-এ শ্যুটিং, মজায় ভরা রাজদীপের নতুন ওয়েবসিরিজের অভিজ্ঞতা। বলেছেন, ‘প্রথম যেদিন লুক সেটের জন্য যাই, আমায় বলা হয়েছিল চুল কেটে আসতে। আমি সেভাবেই গিয়েছিলাম। কিন্তু অঞ্জনদা দেখেই বললেন, আরও ছোট হেয়ারকাট হবে। একদিনে আমায় ৩ বার চুল কাটিয়েছিলেন পরিচালক। তারপর বলেছিলেন, ‘কেন করলাম সেটা স্ক্রিনে দেখে বুঝবি।‘ সত্যিই পর্দায় নিজেকে দেখে চিনতে পারিনি। এক্কেবারে অবিকল দার্জিলিং-এর এসপি। এই প্রথম গোঁফ রাখলাম আমি। সব মিলিয়ে লুকের দিক থেকে অন্য এক রাজদীপকে দেখবেন দর্শক।‘
রাজদীপকে সত্যি পুলিশ অফিসার বলে নাকি ভুল করেছিলেন অনেকেই। এমন ঘটনার স্মৃতি উস্কে রাজদীপ বললেন, ‘একদিন আমি গাড়ি করে শ্যুটিং করতে যাচ্ছি। গাড়িটার সামনেও লেখা ছিল এস পি-দার্জিলিং। দেখলাম, সিগন্যালে আমার গাড়ি দেখে স্যালুট করে সিগনাল খুলে দিলেন দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মী। এমনকি রাস্তায় যখন কস্টিউম পরে ঘুরতাম, অন্যান্য পুলিশ আমায় দেখলেই স্যালুট করতেন। অঞ্জনদা শুনে মজা করে বলেছিলেন, ‘তুই কেনাকাটা করতেও কস্টিউম পরেই যাস, এক্সট্রা ডিসকাউন্ট পাবি।‘
অঞ্জন দত্তের সঙ্গে প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? ‘অনেক কিছু শিখেছি। অভিনয়ের সময় উনি ছোট ছোট টিপস দিতেন যেগুলো খুব কাজে আসত। গ্লিসারিন ছাড়াও কী করে কাঁদা যায়, সেটা অঞ্জনদাই শিখিয়েছেন।‘ উচ্ছসিত উত্তর রাজদীপের। যোগ করলেন, ‘গোটা টিমটা ভীষণ ভালো ছিল। সন্দীপ্তা(সন্দীপ্তা সেন) আর অনিন্দিতার(অনিন্দিতা বোস) সঙ্গে আমার বহুদিনের পরিচয়। অর্জুনের(অর্জুন চক্রবর্তী) সঙ্গে আমার এই প্রথম কাজ। ভীষণ প্রতিভাবান অভিনেতা ও। আর অঞ্জনদা সবসময় কম শটে কাজ করতে বিশ্বাসী। উনি বলতেন, ‘ফার্স্ট টেক ইজ দ্য বেস্ট টেক।‘ তবে শ্যুটিং-এর সময় আমরা কেউ ফোন কাছে রাখতাম না। উনি পছন্দ করতেন, যতক্ষন কাজ হবে ততক্ষণ যেন অন্য কোনও দিকে মন না যায়।‘
শ্যুটিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন অর্জুন। শ্যুটিং সেটে পড়ে গিয়ে চোখে আঘাত লাগে তাঁর। অভিনেতা বলছেন ‘আঘাত লেগে একটা চোখ কালো হয়ে গিয়েছিল। প্রথমে অবশ্য কেউ বুঝতে পারেনি। সবাই ভাবছিল ওটা অভিনয়ের মধ্যেই। আমি উঠছি না দেখে সবাই ছুটে আসে। কী মনে করে অঞ্জনদা ওই শটটা গল্পের মধ্যে রেখেছিলেন। পরে দেখলাম সুন্দরভাবে ওটা গল্পের সঙ্গে মিলে গিয়েছে।‘