কলকাতা: লকডাউনের মধ্যেই অফার, বাড়িতে বসে শ্যুট। গায়ক শানের নতুন মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করলেন টলিপাড়ার ‘লাভবার্ডস’ নীল ভট্টাচার্য্য ও তৃণা সাহা। মুম্বই থেকে শানের ফোন পেয়ে আপ্লুত দুজনেই। মোবাইল ফোনে এবিপি আনন্দকে শোনালেন সেই গল্প।


মুম্বই থেকে কাজ আসছে, আগেই শুনেছিলেন নীল। একদিন সন্ধেবেলা মায়ের সঙ্গে বসে টিভি দেখছিলেন, হঠাৎ অচেনা নম্বরে ফোন আসে। নীল বলছেন, 'প্রথমটা আমি বুঝতে পারিনি। ফোন তুলতে ওপার থেকে উত্তর আসে, 'আমি শান বলছি'। নম্বর সেভ নেই বলে প্রথমটা বুঝতে পারিনি। তারপরে উনিই পরিচয় দিলেন। আমি তখন বলি, 'মা টিভির ভলিউমটা কমাও, শানদা ফোন করেছে!' তারপর কাজের কথা বলেন উনি। ছোটবেলা থেকে যাঁর গান শুনে বড় হয়েছি তাঁর কাছ থেকে ফোনে অফার পাওয়া আমার জন্য ফ্যানবয় মোমেন্ট ছিল।'



শানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণাও। বললেন, 'ভীষণ ভালো গায়ক ছাড়াও উনি একজন খুব ভালো, বিনয়ী মানুষও। শান নিজে আমায় ফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন কাজটা করতে রাজি হওয়ার জন্য।'



লকডাউনে কলকাতা মুম্বইয়ের দূরত্ব ঘুচল কী করে? নীল বলছেন, 'যেদিন প্রোজেক্ট কনফার্ম হল, তার পরেরদিনই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এল আমার। আমি ফোন করে জানাতে ওরা বলল আমার শরীর সায় দিলে শ্যুটিং করতে। আমি ভীষণভাবে কাজটা করতে চাইছিলাম। আমার ঘর থেকেই মোবাইলে শ্যুটিং করে ওদের ক্লিপিংস পাঠিয়ে দিই। গোটা টিম ভীষণ সাহায্য করেছে। গোটা ভিডিওটা ভীষণ অন্যরকম, ঠিক একটা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের মতো।'



তৃণাও নিজের বাড়িতে বসেই মোবাইলে শ্যুটিং করেছেন। বললেন, 'এটা বেশ একটা নতুন অভিজ্ঞতা। নীল নিজের বাড়িতে, আমি আমার আর শান মুম্বইতে। এর আগে এমন তিনজন তিনটে জায়গা থেকে শ্যুটিং করিনি।'



মিউজিক ভিডিও রিলিজের আগে কলকাতায় এসেছিলেন শান। প্রিয় গায়কের সঙ্গে মুখোমুখি আলাপ করে খুশি মিউজিক ভিডিওর নায়ক নায়িকা। বিলাসবহুল হোটেলে একসঙ্গে ফটোশ্যুটও সারেন তাঁরা। নীল বলছেন, 'প্রথমবার যখন শানদা কথা বললেন, আমার মনে হল যেন অনেকদিনের পরিচিত।' সেদিন শানের সঙ্গে প্রচুর আড্ডা হয়েছে, জানাচ্ছেন তৃণাও।



সম্প্রতি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে তৃণার অভিনীত ছবি 'ডিকেটটিভ'। নিজের চরিত্রের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। বললেন, 'আমি তখন শ্রীমতীর শ্যুটিং করছিলাম। খুব দ্বন্দ্বে ছিলাম ডিটেকটিভ-এর চরিত্রটা নিয়ে। কিন্তু জয়দীপদা খুব সাহায্য করেছেন।' অন্যদিকে নতুন ধারাবাহিক 'খড়কুটো'-র গুনগুনও ইতিমধ্যে মন কেড়েছে দর্শকদের। মোবাইল ফোনে বললেন, 'গুনগুন যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে আমি সেই পরিস্থিতি কোনওদিন দেখিনি। আমি চিরকালই বড় পরিবারে মানুষ হয়েছি। আর গুনগুনের বয়সটাও আমি পেরিয়ে এসেছি। সেখানে ফিরে যেতে বেশ হোমওয়ার্ক করতে হচ্ছে।'



করোনামুক্ত হয়ে ফের কৃষ্ণকলির শ্যুটিং ফ্লোরে ফিরেছেন নীল। বললেন, 'আমি ফেরার পর ইউনিটের সবাই আমায় গোল করে দাঁড়িয়ে গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিল। আর এখন শ্যুটিং চলছে পুরোদমে। আর কোনও শারীরিক সমস্যা হচ্ছে না।'



কোভিড পরিস্থিতিতে শ্যুটিং ফ্লোরে মেনে চলা হচ্ছে সমস্ত নিয়মবিধি। আর করোনাকালেও ভালো থাকার চেষ্টা করছেন নীল-তৃণা। এখনও শানের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই কথা হয় বলে জানিয়েছেন নীল। আর তৃণা বলছেন, 'আমি তো ম্যাচিং করে মাস্ক পরছি রোজ। তাতে যেমন বজায় থাকছে স্টাইল, তেমনই অনেক কম সাজতে হচ্ছে।'