নয়াদিল্লি: দেশ-কাল-সীমান্তের গণ্ডির মধ্যে শিল্পীকে বেঁধে রাখা যায় না। জুবিন গর্গের মৃত্যুকে আবারও একথা প্রমাণিত হল। শিল্পীর প্রয়াণের ধাক্কা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি ভারতীয় অনুরাগীরা। জুবিনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পড়শি দেশ পাকিস্তানেও। আর তাই তাঁকে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করল সেখানকার জনপ্রিয় ব্য়ান্ড।
জুবিনকে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ জানিয়েছে পাকিস্তানের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘খুদগর্জ’ (Khudgarz). করাচিতে তাদের কনসার্ট ছিল সম্প্রতি। সেখানে জুবিনের গাওয়া ‘ইয়া আলি’ গানটি গান ব্যান্ডের শিল্পীরা। বলিউড ছবি ‘গ্যাংস্টার’-এর জন্য ‘ইয়া আলি’ গানটি গেয়েছিলেন জুবিন, যা কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, ঘরে ঘরে ঘরে পরিচিত করে তোলে তাঁকে।
জুবিনের মৃত্য়ুর পর সেই ‘ইয়া আলি’ গানেই মুখরিত হল করাচি। ‘খুদগর্জে’র তরফে সোশ্যাল মিডিয়াতেও জুবিনকে শ্রদ্ধার্ঘ জানানোর ওই মুহূর্ত তুলে ধরা হয়। তারা লেখে, ‘করাচি থেকে ভালবাসা জানাই। জুবিন গর্গ, আমাদের প্লেলিস্টে চিরকাল থাকবেন আপনি। ধন্যবাদ’। ‘খুদগর্জে’র ওই পোস্ট ভালবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের বাসিন্দারাই। আবেগতাড়িত প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন অনেকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে ‘খুদগর্জ’ ‘বিনা তেরে এক পল’ গাইতে শুরু করা মাত্রই মুখরিত হয়ে ওঠেন শ্রোতারা। সকলে গলা মেলাতে শুরু করেন কনসার্টের পরিবেশই বদলে যায় নিমেষে। হাতে ধরা মোবাইল ফোনের আলো জ্বালিয়ে আকাশের দিতে তুলে ধরেন অনেকে।
সুদীর্ঘ কেরিয়ারে ৪০টির বেশি ভাষায় গান গেয়েছেন জুবিন। ভারতের বাইরেও যে সমান জনপ্রিয় তিনি, তা আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল। শিল্পী হিসেবেই নয় শুধু, ব্যক্তি জুবিনও সমান জনপ্রিয় ছিলেন। অন্য শিল্পীরা যেখানে রাজনীতি, ভূরাজনীতি বা সামাজিক ইস্যু এড়িয়ে চলেন, সেখানে অকুতোভয় জুবিন কোনও কিছুতেই নীরব থাকতেন না। ধর্ম-বর্ণ-জাতপাতের ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে গিয়ে, মানুষের হয়ে কথা বলতেন তিনি। বন্যা হোক বা ছাত্র আন্দোলন, সবার আগে মাঠে-ময়দানে নেমে পড়তেন। করোনার সময় নিজের বাড়িও কোয়রান্টিন সেন্টারে রূপান্তরিত করতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। রাজনীতি এবং রাজনীতিকদের ঘোর সমালোচক ছিলেন জুবিন। মানুষের অধিকারের প্রশ্ন তুলে ধরতেন। ছেড়ে কথা বলতেন না কাউকেই। তাই তাঁর চলে যাওয়া আরও বেশি শোকার্ত করে তুলেছে সকলকে।