কলকাতা: এ যেন অভিনয়ের মধ্যে অভিনয় করা। মঞ্চে তিনি কখনও দ্রৌপদী, কখনও অন্য কোনও চরিত্র। পর্দায় তিনি সুলোচনা আর বাস্তবে তিনি পাওলি দাম (Paoli Dam)। ব্যোমকেশ সিরিজের নতুন সদস্যা। 'ব্যোমকেশ হত্যামঞ্চ' গল্পে একজন নটসম্রাজ্ঞীর চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে।
ছোটবেলায় অভিনয়ের হাতেখড়ি নাটকের মঞ্চেই। এবিপি লাইভকে পাওলি বলছেন, 'শিশুরঙ্গন নাট্যসংস্থায় নাটক করতাম। সাহিত্যিক শৈলেন ঘোষের সংস্থা। সেই আমার অভিনয়ে হাতেখড়ি। ক্লাস ৩ থেকে ১০ পর্যন্ত মঞ্চে অভিনয় করেছি। এই গল্পের অনেকটা জুড়েই নাটকের মঞ্চ রয়েছে। দমদমের একটা থিয়েটারে আমরা টানা প্রায় ১০ দিন শ্যুটিং করেছি। আমার সহ অভিনেতাদের মধ্যে অর্ণ (মুখোপাধ্য়ায়), কিঞ্জল (নন্দ) সহ অনেকেই মঞ্চাভিনেতা। ফলে কার্যত থিয়েটারের আবহেই ওই শ্যুটিংটা হয়েছে।'
একই ছবিতে মঞ্চাভিনয় আবার সিনেমায় অভিনয়, কঠিন? পাওলি বলছেন, ' খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আমার চরিত্র সুলোচনা একজন নটসম্রাজ্ঞী। সেইসময়ে বাণিজ্যিক থিয়েটারকে তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। আমার খুব প্রয়োজন ছিল সুলোচনার চিন্তাভাবনাকে আত্মস্থ করা। প্রত্যেক ছবির ক্ষেত্রে আমি এটাই করি। সেই চরিত্রর ভাবনা, কল্পনাকে বোঝার চেষ্টা করি। তবেই চরিত্র হয়ে উঠতে পারব।'
অরিন্দম শীল বলছেন, আপনার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল অনেকদিনের। আপনারও কী তাই? হেসে পাওলির উত্তর, 'অবশ্যই। অরিন্দমদা প্রচন্ড পরিকল্পনা মাফিক কাজ করেন। ওনার সেটে প্রত্যেকটা মানুষ জানেন কী কী করতে হবে। তাই অভিনেতা অভিনেত্রীদেরও কাজ করতে ভীষণ সুবিধা হয়। চিত্রনাট্য শুনেই আমার পছন্দ হয়েছিল। বেশ অন্যধরণের। অরিন্দমদা আমার চরিত্রের সাজপোশাকও পরিকল্পনা করেছেন খুব যত্ন করে। একমাত্র আমিই যআঁর পোশাকে লাল প্যালেট ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য কারও পোশাকে এত লাল নেই। লাল রঙে যেমন প্রেম আছে, তেমনই আছে রহস্য। সুলোচনার চরিত্রটাকে এত সুন্দর করে বুনেছেন অরিন্দমদা, সেটা ভীষণ পছন্দ আমার। ব্যোমকেশ পরিবারে এটা আমার প্রথম কাজ। সবার থেকে সুলোচনাকে আলাদাভাবে ফুটিয়ে তোলাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।'
ব্যোমকেশের সেটে প্রথমবার, মনে পড়ার মতো কোনও ঘটনা রয়েছে? পাওলি বলছেন, 'অনেক লম্বা শটে শ্যুটিং করেছি এই ছবিটার জন্য। এমনকি একটা শটে সুলোচনা সাজঘর থেকে বেরিয়ে উইঙ্গসের পাশে যাচ্ছে, আবার ফের অন্য জায়গায় যাচ্ছে, এত লম্বা শটে কেবল অভিনেতা অভিনেত্রী নয়, সিনেমাটোগ্রাফারের দক্ষতারও প্রয়োজন।'
ব্যোমকেশের সবচেয়ে প্রিয় গল্প? পাওলি বলছেন, 'পথের কাঁটা', 'দুর্গরহস্য', 'রক্তের দাগ', 'বহ্নিপতঙ্গ'। এই চারটে গল্প আমার বিশেষ প্রিয়।'