মুম্বই: নাবালিকাকে চুম্বন নিয়ে বিতর্কের জেরে রিয়েলিটি শোয়ের বিচারকের ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়ালেন অসমের গায়ক অঙ্গরাগ মহন্ত ওরফে পাপন। তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘এখন আমি পেশাদারি দায়িত্ব পালন করার জন্য মানসিকভাবে তৈরি নেই। তাই যতদিন না আমার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা খারিজ হচ্ছে এবং তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত ওই শোয়ের বিচারকের পদে থাকছি না। বিচারব্যবস্থার উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। ততদিন পর্যন্ত আশা করি আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে সম্মান জানানো হবে।’



যে চ্যানেলে এই রিয়েলিটি শো সম্প্রচারিত হয়, তাদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘তদন্ত এবং প্রতিযোগীদের স্বার্থের কথা ভেবে অঙ্গরাগ মহন্ত (পাপন) এই শোয়ের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। এই বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি শ্যুটিং করবেন না।’

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় পাপনের ফেসবুক লাইভের একটি ভিডিও। সেখানে তিনি যে বাচ্চাদের রিয়েলিটি গানের শোয়ের বিচার করেন, সেখানকার প্রতিযোগীদের নিয়ে একটি স্পেশাল হোলি পর্বের শ্যুট করেছিলেন। সেখানেই দেখা যায়, হাসি, গান, নাচ, মজা করতে করতে, আচমকাই পাপন এক নাবালিকা প্রতিযোগীকে রং মাখিয়ে তার ঠোঁটে চুম্বন করেন। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর নজরে আসে। তাঁর মনে হয়, একজন নাবালিকাকে এভাবে চুম্বন করা যৌন হয়রানির সমান। বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ে অংশ নেওয়া বাচ্চা প্রতিযোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, পকসো আইনে পাপনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই আইনজীবী।

এই ঘটনার পর থেকেই অনেকে সরব হন। এই ধরনের কাণ্ড ঘটানোর জন্যে পাপনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, এমন দাবিও তোলেন নেটিজেনরা। অবশেষে নীরবতা ভেঙে প্রতিক্রিয়া দিলেন পাপন। তাঁর দাবি, ওটা পুরোটা ভুল অ্যাঙ্গেলে ক্যামেরা ধরে রাখার জন্যে মনে হয়েছে চুম্বনটি অশালীন। আসলে সেইমুহূর্তে উচ্ছ্বাসে, উত্তেজনায় তিনি ওই কাণ্ডটি ঘটিয়ে ফেলেন। কোনওরকম বদ মতলব তাঁর ছিল না। পুরো ঘটনাটি রিয়েলিটি শোয়ের অন্য সদস্যদের উপস্থিতিতে ঘটেছে। কোনও রকম অশালীন কিছু বা যৌন হয়রানি উদ্দেশ্যে তাঁর ছিল না।

এই গায়কের আরও দাবি, এই ধরনের অভিযোগ করার আগে প্রত্যেকেরই আরও একটু সতর্ক হওয়া উচিত। এই ঘটনায় যাঁদের নাম জড়িয়ে যায় এবং যাঁদের পরিবার জড়িয়ে যায়, প্রত্যেকেরই সমাজে প্রচুর লজ্জা-হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। তাঁর নিজের স্ত্রী, দুটি ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। এমনকি ওই বাচ্চা মেয়েটির পরিবারের সদস্যদেরও একইরকমের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাই এধরনের ঘটনায় কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগে প্রত্যেকেরই উচিত, আরও একটু বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া।