কলকাতা: পাঁচ মাস বয়সে মা কে হারিয়েছিলেন। মা বলতে যাঁকে মনে পড়ে তিনি সম্পর্কে পিসি। তাঁকেই মা বলে ডেকে এসেছেন আজীবন। শাসন থেকে আদর, সবটা তাঁর কাছেই। নারীদিবসে (Intertational Woman's Day) আগে, জীবনের সেরা নারী কে, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে যাঁকে মনে পড়ে তিনি সেই মা! পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Paran Bandopadhyay) বিশ্বাস করেন, 'কেবল জন্ম দিলেই মা হয় না'


ছোটবেলা কেটেছে যশোরে। ৬-৭ বছর বয়সে বাড়ি থেকে কাটারি হাতে বেরিয়ে পড়তেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়। অভিনেতা বলছেন, 'ছোটবেলায় খুব দুষ্টু ছিলাম। বাড়ি থেকে কাটারি হাতে বেরিয়ে পড়তাম। বাজ পড়া নারকেল গাছের মাথায় উঠে পাখি পেড়ে আনতাম। নামার সময় বুক ছড়ে যেত। মা খুব বকত, শুনতাম না। একদিন মা যাঁতা ঘোরানোর লাঠি দিয়ে কোমরে মেরেছিলেন। তারপর সন্ধেবেলা, মা আমায় উপুড় হয়ে শুইয়ে পিঠে সেঁক দিয়ে দিচ্ছেন। হঠাৎ পিঠের ওপর এক ফোঁটা গরম জল পড়ল। মুখ ফিরিয়ে দেখলাম, মায়ের চোখে জল।'


আরও পড়ুন:প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে একজন নারী থাকে, এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি : খরাজ


তবে কেবল মা নয়, এবিপি লাইভের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আরও একজনের কথা মনে পড়ে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি দিদা। ছোটবেলা কেটেছে পিসির বাড়িতেই। দিদাই নাম রেখেছিলেন পরাণ। বলতেন, 'আমার পরাণের ধন'। সেই থেকেই পরাণ নামকরণ করা হয়েছিল। অভিনেতা বলছেন, 'মা যেদিন আমায় যাঁতা ঘোরানোর লাঠি দিয়ে মেরেছিলেন, দিদা মা-কে ভীষণ বকেছিলেন। ওইরকম মানুষ আমি জীবনে দুটো দেখিনি। যেমন দাপট, তেমন স্নেহ। আমায় ছোটবেলায় নিকোনো উঠোনে বসিয়ে দিতেন। মাথায় টুপি দিয়ে, বেলগাছের নিচে বসে আমি খেজুরের রস খেতাম আর পড়াশোনা করতাম। তবে অভাবও দেখেছি। ঝড়ে খড়ের চাল উড়ে গিয়েছে। খড়ের গাদায় রাত কাটিয়েছি। মাঝে মধ্যে তেঁতুল তলায় শুয়ে থাকতাম, সঙ্গী হতেন দিদা।...' কেবল মানুষ নয়, তাঁদের সঙ্গে যেন জড়িয়ে ছোটবেলা আর অসংখ্য স্মৃতি। বলতে বলতে একটু গলা ভারি হয়ে এল পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।