কলকাতা: নিজের পরিচিত গণ্ডি ভেঙে গল্প বলার চেষ্টা.. মুক্তির প্রথম সপ্তাহে একটু যেন মুষড়েই পড়েছিলেন পরিচালক। তবে কি ছবিটা ভালো হয়নি? মানুষের পছন্দ হবে না? কিন্তু প্রেক্ষাগৃহে যেতেই যেন বদলে গেল ছবিটা। অনেক মানুষ ভালো বললেন, কাঁদলেন, ভাসলেন আবেগে। আর সেই অভিজ্ঞতার কথাই এবিপি লাইভের (ABP Live)-এর সঙ্গে শেয়ার করে নিলেন কলকাতা চলন্তিকা (Kolkata Chalantika)-র পরিচালক পাভেল (Pavel)। 


প্রেক্ষাগৃহে কিছু মানুষের আবেগের কথা এখনও মনে থাকবে পাভেলের। পরিচালক বলছেন, 'হলে একজন বয়স্ক মানুষ উঠে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, তিনি মৃণাল সেনের 'কলকাতা ৭১' প্রেক্ষাগৃহে দেখেছিলেন। আর এবার 'কলকাতা চলন্তিকা'। কান্না থামাতে পারেননি অনেকেই। কেউ কেউ আবার বলেছিলেন, এই ছবিটা একটা সময়ের দলিল। অনেকে এখন না বুঝলেও পরে বুঝবেন, ছবিটা কতটা জরুরি। আমায় অনেক অল্পবয়স্ক ছেলে মেয়েরা এসে বলেছে, 'পাভেল মানেই আমরা ভাবি বড় কিছু। এই ছবিটা সেই ধারণা বদলে দিল। এবার অন্য স্বাদের ছবিও আশা করব। প্রশংসা হয়েছে রজতাভ দত্ত সহ সবার অভিনয়েরও।'


আরও পড়ুন: Kareena Kiara: 'গুড নিউজ'-এর শ্যুটিং চলাকালীন করিনার কোন শিক্ষা আজও কাজে লাগে কিয়ারার?


সাফল্যের মধ্যেও আফশোস রয়ে গিয়েছে পাভেলের। বলছেন, 'আমার ছবির শেষ শট নন্দনে। কিন্তু ছবিটা এখনও নন্দনেই জায়গা পেল না। আমি রাজদা (রাজ চক্রবর্তী) সহ সমস্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষকে ফোন করে করে বলেছি। এই সপ্তাহেও শো পেল না। এখন ওনারা বলছেন ৯ তারিখ চেষ্টা করছেন। সেটা হলেও অনেক। রাধা স্টুডিওতেও এখনও শো পায়নি। আমার আফশোস থেকে যাবে যে এই ছবিটা আরও বেশি করে দর্শকদের কাছে পৌঁছতে পারত, কিন্তু সেটা বিভিন্ন কারণে হয় উঠল না। ডিস্ট্রিবিউটারের সমস্যা, আমার নতুন প্রযোজক.. আমি গিনিপিগ হলাম একটা পরিস্থিতির। তবে পাভেল 'কলকাতা চলন্তিকা'-র থেকে শিক্ষা নিল। আগামী ছবিতে এই ভুলগুলো আর হবে না। এটুকুই ভালোলাগা।'


ছবিতে কিরণ দত্ত ও ঝিলাম গুপ্তর সংলাপ না থাকা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় হয়েছে। পাভেল বললেন, 'আমি জানি না এই বিষয়টাকে কেন ইস্যু করা হল। ছবির প্রচারে যিনি থাকছেন, তাঁর ছবিতে সবচেয়ে বড় চরিত্র থাকবে এই ধারণা কী করে হল আমি জানি না। সেই হিসেবে বলতে গেলে সবচেয়ে বড় চরিত্র খরাজদার (খরাজ মুখোপাধ্যায়)। উনি একদিনও প্রচারে আসতে পারেননি। আর ছবিটা আমার, সেখানে কার কতটা চরিত্র, কতটা সংলাপ সেটা তো আমি ঠিক করব। এমনকি কিরণ আর ঝিলাম ওদের চরিত্র নিয়ে খুশি, গর্বিত। আমি জানি না কেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ওদের হলে সবাই এমন লড়াই করছে। খারাপ রিভিউতে আমার কষ্ট হয় না, বরং অনেক কিছু শেখার থাকে। কিন্তু এই ধরণের বিতর্ক একেবারেই অনর্থক।'


তবু পাভেল তৃপ্ত। বলছেন, 'আমার কলকাতাকে বলার ছিল তাকে আমি ঠিক কতটা ভালোবাসি। ঠিক যেমন প্রেমিক তার প্রেমিকার হাত ধরে বলে। এই ছবিটার মধ্যে দিয়ে সেটা আমি বলতে পেরেছি আর মানুষ সেই আবেগটা অনুভব করেছেন, ভালোবাসার সেই ওমটা পেয়েছেন।'