কলকাতা: কেউ সমস্যার সমাধান বের করার কথা বলছেন। কেউ বলছেন বিভাজনে বিশ্বাস করি না। সকলেই কাজ বন্ধ করার বিরুদ্ধে। সকলেই চাইছেন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক। কিন্তু সমাধানসূত্রটা বেরোচ্ছে না। কার্যত স্তব্ধ টলিপাড়া (Tollywood Shooting Strike)। কী বললেন ইম্পার প্রেসিডেন্ট পিয়া সেনগুপ্ত (Piya Sengupta)?


স্তব্ধ শ্যুটিংপাড়া, কী প্রতিক্রিয়া ইম্পার প্রেসিডেন্ট পিয়া সেনগুপ্তের


অন্যান্য দিন যেখানে থাকে তুমুল ব্যস্ততা, সোমবার সকাল থেকে সেই স্টুডিওপাড়াই একেবারে শুনশান। বন্ধ সমস্ত শ্যুটিং। সিনেমা হোক, বা ওটিটি বা টেলিভিশন, আজ 'রোল, ক্যামেরা, অ্যাকশন' হল না। পরিচালক ও টেকনিশিয়ানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। সকলেই কাজ বন্ধের বিরুদ্ধে, কিন্তু বারবার বৈঠকেও খুলল না জট। উল্টে ডিরেক্টর্স গিল্ড ও টেকনিশিয়ানদের ফেডারেশনের দ্বন্দ্ব এখনই মেটার কোনও লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। 


এই প্রসঙ্গে ইম্পার প্রেসিডেন্ট পিয়া সেনগুপ্ত বলেন, 'এটা একেবারেই কাম্য। ইন্ডাস্ট্রির জন্যও ভাল নয়। এইটুকু ছোট একটা ইন্ডাস্ট্রি, সেখানে আজ 'কর্মবিরতি' মোটেই কারও জন্য ভাল সংবাদ আনে না। সেটা কলাকুশলী এবং প্রযোজক সকলের জন্যই ক্ষতি। আর্থিক ক্ষতি ও কাজের ক্ষতি। আমি অনুরোধ করব ফেডারেশন ও পরিচালক ও প্রযোজদের, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেরা বসে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য। যত দ্রুত কাজ শুরু করা যায় সেই চেষ্টা করতে, এবং তার জন্য ইম্পাকে যদি কোনও সাহায্য করতে হয় তা নিশ্চয়ই করা হবে।'


একদিকে পরিচালক হিসেবে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে কাজ করতে চাইছেন না টেকনিশিয়ানরা। অন্যদিকে রাহুলের পাশে দাঁড়িয়েছেন একঝাঁক পরিচালক ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ অভিনেতাদের একটা বড় অংশ। কী থেকে এই জটিলতার সূত্রপাত? বাংলাদেশের OTT প্ল্যাটফর্মের জন্য় একটি কাজের পরিচালনার দায়িত্ব পান পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। সিরিজ়ের শ্যুটিং হওয়ার কথা ছিল এপার বাংলায়। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের 'পথ হারাব বলে' উপন্যাসের অবলম্বনে ওয়েব সিরিজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশের OTT সংস্থাটি। সেই সিরিজের নাম দেওয়া হয় 'লহু'। গত বছরের নভেম্বর মাসে কলকাতায় চার দিনের শ্যুটিংও হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে পারিশ্রমিক নিয়ে জটিলতার জেরে আর শ্যুটিং হয়নি। বাকি শ্যুটিং হয় বাংলাদেশে। আর সমস্যার সূত্রপাত সেখানেই। অভিযোগ ফেডারেশন বা গিল্ডের কাউকে না জানিয়েই বাংলাদেশে শ্যুটিং করতে চলে যান পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়। 


আরও পড়ুন: Tollywood Controversy: 'স্তব্ধ' স্টুডিওপাড়া, বন্ধ ক্যামেরা! 'বহাল থাকবে কর্মবিরতি', সাফ জানিয়ে দিলেন পরিচালকেরা


এই অভিযোগ তুলে রাহুল মুখোপাধ্যায়কে তিন মাসের কর্মবিরতির নির্দেশ দেয় পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। কিন্তু পরে সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও, বেঁকে বসে টেকনিশিয়ানদের সংগঠন ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। এ নিয়ে প্রথম মুখ খোলেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এই প্রেক্ষাপটে এদিন কলাকুশলীদের নিয়ে বৈঠকে বসে ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। গোটা বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে কলাকুশলীদের সংগঠন। শনিবার শ্যুটিংয়ের কলশিটে পরিচালক হিসেবে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের নাম দেখে আর স্টুডিও মুখো হননি টেকনিশিয়ানরা। কিন্তু সেদিন নির্দিষ্ট সময়েই টেকনিশিয়ান স্টুডিওয় হাজির হয়ে গেছিলেন পরিচালক থেকে অভিনেতারা। শ্যুটিং না হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেখানে হাজির হন একের পর এক পরিচালক থেকে অভিনেতা। সেখানেই দেওয়া হয় সোমবার থেকে পরিচালকদের কর্মবিরতির ডাক। যে দ্বন্দ্ব সোমবার দিনের শেষেও রইল অব্যাহত।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।