কলকাতা: ২০২৪ নয়, তিনি 'বাবলি'-তে পর্দায় আনতে চেয়েছিলেন ২০০৪ সালে। বাধা দিয়েছিলেন, স্বয়ং 'বাবলি'-র লেখক। বুদ্ধদেব গুহই। কিন্তু সেই বুদ্ধদেব গুহকেই ছবিটা দেখাতে পারলেন না তিনি। এই আফশোস তাঁর রয়ে যাবে চিরকালই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে 'বাবলি'। পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) স্বপ্নের ছবি। সেই ছবি মুক্তি আগে, এবিপি লাইভ (ABP Live)-এর মুখোমুখি রাজ চক্রবর্তী। কথা বললেন ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার আর 'বাবলি' নিয়ে। 


২০০৪ সালে যে ছবি তৈরির স্বপ্ন ছিল, তা বাস্তবে রূপান্তরিত করতে কেন এত বছর লেগে গেল রাজের? পরিচালক বলছেন, 'আমি ২০০৪ সালে আমি 'বাবলি'-র গল্প নিয়ে টেলিফিল্ম করতে চেয়েছিলাম। তখন আমি টেলিফিল্মে ডেবিউ করছিলাম। প্রথম টেলিফিল্ম করেছিলাম 'নদের চাঁদ', তারপরেই 'বাবলি' করতে চেয়েছিলাম। ছোটবেলায় পড়া সেই গল্প আমার ভীষণ প্রিয়। লেখকও ভীষণ প্রিয়। কিন্তু সেই সময়ে বুদ্ধদেব গুহ বলেছিলেন, 'বাবলি বড়পর্দার জন্য লেখা। যদি কখনও বড়পর্দায় বাবলি করো, আমার কাছে এসো'। এরপরে ২০২১ সালে 'বাবলি'-র কপিরাইট চাইতে গিয়েছিলাম ওঁর কাছে। উনি রাজি হয়েছিলেন, আর বলেছিলেন ছবিটা তাড়াতাড়ি করতে। ওঁর গল্প থেকে খুব একটা ছবি হয়নি। উনি নিজেই আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) আর শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের (Subhasree Ganguly) নাম বলেছিলেন বাবলি আর অভিরূপের চরিত্রে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য আমাদের ছবির কাজে দেরি হয়ে যায়। উনিও প্রয়াত হন। বুদ্ধদেব গুহকে 'বাবলি' না দেখানোর আফশোস রয়ে যাবে।'


দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করছেন রাজ আর শুভশ্রী। ইতিমধ্যে তাঁদের জীবনেও বদল এসেছে। শ্যুটিং ফ্লোরে কি তাঁদের সম্পর্ক বদলাল? রাজ বলছেন, 'শ্যুটিং ফ্লোরে আমার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন, প্রত্যেকেই নিজের নিজের বিভাগের দায়িত্ব সামলান। ফ্লোরে আমি পরিচালক। গল্প বা আড্ডা মারতে ফ্লোরে যাই না আমি। এত টাইট শিডিউল থাকে যে কে কোথা থেকে এসেছি তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় কী করতে এসেছি।'


আবিরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল পরিচালকের? রাজ বলছেন, 'অভিজ্ঞ অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করার সুবিধা হল, তাঁরা নিজেরাই অনেক কিছু সামলে নেন। এই ছবির ক্ষেত্রে গাড়িতে অনেকগুলো দৃশ্যের শ্যুটিং ছিল। পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি চালানোটা খুব একটা সোজা নয়। আবির খুব দক্ষভাবে কাজটা করেছে। আর গাড়িতে ও আর শুভশ্রী একা ছিল.. আমরা পিছন থেকে একটা গাড়ি নিয়ে ওদের ফলো করছিলাম। আমাদের মাথায় রাখতে হয়েছিল যে, আমরা একটা বিশেষ সময়কালকে তুলে ধরছি। পাশ দিয়ে যদি কোনও গাড়ি যাচ্ছিল, আবির নিজেই রিটেক করতে বলছিল। ওইভাবে শ্যুটিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত।'


বাড়িতে শুভশ্রীর আর শ্যুটিং ফ্লোরে শুভশ্রী, পার্থক্য কোথায়? রাজ বলছেন, 'শ্যুটিং ফ্লোরে শুভশ্রী চরিত্র হয়ে আসে। খুব সিরিয়াস ও অভিনয়ের বিষয়ে। আর বাড়িতে আমাদের একেবারে উল্টো ছবি। কাজ নিয়ে প্রায় কথা হয় না বললেই চলে। আমরা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসি বাড়িতে। ছেলে মেয়েকে যতটা সম্ভব সময় দিই। শুভশ্রী বই পড়তে ভালবাসে, আমায় বিভিন্ন বই পড়ে শোনায়। বাড়িতে আমরা কাজ টেনে আনি না।'


কখনও মনে হয়, অভিনয়ের পরিবেশ ছেলে-মেয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে? রাজ বলছেন, 'কখনোই না। আমরা ছোটবেলায় বুদ্ধদেব গুহ লুকিয়ে পড়েছি... সেখানে প্রেমের বিবরণ ছিল বলে। আমি আর শুভশ্রী চাই, ইউভান আর ইয়ালিনি সবটা জেনে বড় হোক। ওরা ঠিক ভুল সবটাই দেখে, বুঝে, বেছে নিক। ইয়ালিনি আর ইউভান এই সময়ের শিশু, ওদের এমন পরিবেশ দেব যেখানে ওরা প্রাণ খুলে সবটা আলোচনা করতে পারে। 


আরও পড়ুন: Abir Chatterjee: থ্রিলার ছেড়ে বাঙালি প্রেমের ছবি দেখবে কি না, আমার সন্দেহ ছিল: আবির


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।