কলকাতা: সিরিজে নায়কের চরিত্রে অভিনয়। কিন্তু নিজের চরিত্রের বিবরণ শুনে তাঁর মনে হয়েছিল, 'এই চরিত্রকে আমি নিজেই ঘেন্না করব।' তাঁর চরিত্র সম্পূর্ণ নেতিবাচক নয়, নায়িকা 'পর্ণা' দুঃসময়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সমর্থন করার মত শিরদাঁড়ার জোর নেই সেই চরিত্রের। সদ্য মুক্তি পাওয়া ট্রেলারের ঝলকেও ফুটে উঠেছে 'অভি'-র চরিত্রের দুটি দিকই।


পর্ণা ও অভি। 'উত্তরণ' সিরিজের দুই প্রধান চরিত্রের নাম। আজ মুক্তি পাওয়া ওয়েবসিরিজের ট্রেলারের সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে এই দুই চরিত্রই। 'অভি'-র চরিত্রে অভিনয় করছেন রাজদীপ গুপ্ত (Rajdeep Gupta)। কেমন ছিল এই চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা? এবিপি লাইভকে রাজদীপ বলছেন, 'গল্পটা যখন শুনেছিলাম, মনে হয়েছিল এই ধরণের চরিত্রকে আমি মন থেকে ঘেন্না করি। এখনকার যুগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিং যথেষ্ট চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি এর স্বীকার। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মানুষ আর বাস্তবে সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় যা বলি, যা লিখি তা কিন্তু করি না। গল্পটা একটা ভিডিও ক্লিপিংস ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে। অভি নিজের স্ত্রী পর্ণার খারাপ সময়ে তার পাশে দাঁড়ায়নি। কেন দাঁড়ায়নি তার কারণ হিসেবে চিত্রনাট্যে একটি অতীতের ঘটনা দেখানো হয়েছে বটে। তবে বাস্তব জীবনে আমার মনে হয় সেই কারণও যথেষ্ট নয়। একজন পুরুষ হিসেবে অভির উচিত ছিল পর্ণার খারাপ সময়ে তাকে আগলে রাখা।'


আরও দেখুন: 'রক্ষণশীল হতে গিয়ে আমরা যেন মূল্যবোধ হারিয়ে না ফেলি'


মধুমিতার সঙ্গে এই প্রথম জুটি বাঁধলেন রাজদীপ। কেমন ছিল পর্দায় কাজ করার অভিজ্ঞতা? রাজদীপ বলছেন, 'আমি সবসময় শ্যুটিং ফ্লোরে খুব মজা করি। শট শেষ হলেই সবার সঙ্গে মজা, খুনসুটি। তবে কাজ করতে গিয়ে দেখলাম এই ব্যাপারে মধুমিতা (Madhumita Sarkar) আমায় ছাপিয়ে গিয়েছে। ও ফ্লোরে আসে সবসময় ভীষণ পজিটিভ একটা এনার্জি নিয়ে। শট দেওয়ার সময়ও ভীষণ সাবলীল। ওকে মারতে বা ধাক্কা দিতে গিয়ে আমার খারাপ লাগত। যদি লেগে যায়। চোখে গ্লিসারিন নিয়ে মধুমিতা বলত, 'অত ভেবো না, চড়টা মেরেই দাও।' আমি জয়দীপদাকে বলতাম, পর্দায় দেখাবে আমি এত অত্যাচার করছি!' সেই চড়টা সত্যিই মেরেছিলেন? রাজদীপ হাসতে হাসতে বললেন, 'ওটাকে বদলে পরে ধাক্কা দেওয়া করা হয়েছে। যেটা ট্রেলারে দেখা গিয়েছে। ওই শটটার জন্য মধুমিতাকে ৫ বার ধাক্কা দিয়ে ফেলতে হয়েছে।'


সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলিং নিয়ে বেশ সরব রাজদীপ। বললেন, 'আগে রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের নিয়ে ট্রোলিং হত। এখন তো অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিয়ে হামেশাই ট্রোলিং হয়। কোনও ছবি পোস্ট করলেই তার থেকে নেগেটিভিটি খুঁজে বের করে কমেন্ট করেন কিছু মানুষ। খারাপ লাগে। কিন্তু একজন মহিলাকে অনেক বেশি ট্রোলিংয়ের স্বীকার হতে হয়। আমার বন্ধুরা যখন এইসব অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে, একজন পুরুষ হিসেবে অপরাধবোধ হয়। 'উত্তরণ'-এর মতো কাজ আরও হওয়া উচিত। পর্দায় যত বেশি করে একটি মেয়ের কষ্ট, লড়াইকে তুলে ধরা হবে, ততই সচেতনতা ছড়াবে। যদি ১ শতাংশ মানুষেরও চিন্তাধারা বদলাতে পারে 'উত্তরণ', সেখানেই সাফল্য।'


হাসির চরিত্রের হাত ধরে ওয়েব জগতে আসা। নেতিবাচক চরিত্রের হাত ধরে ছক ভাঙছেন রাজদীপ? অভিনেতা বললেন, 'এখানে আমার চরিত্রের অনেক শেডস রয়েছে। সম্পূর্ণ নেতিবাচক বলা যাবে না। 'মার্ডার ইন দ্য হিলস' -এও তাই। তবে এবার এক্কেবারে নেতিবাচক একটা চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। কমেডিতে আমি সাবলীল। তবে ছক ভেঙে এবার একটা সম্পূর্ণ নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। পর্দার 'ভালো ছেলে' ইমেজটা ভাঙতে হবে তো!'