অরিত্রিক ভট্টাচার্য, ময়নাগুড়ি: কী কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস (Bikaner-Guwahati Express)? খতিয়ে দেখতে, তদন্ত শুরু করেছেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (Commissioner of Railway Safety)। দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও গার্ডকে।


বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে-গেছে বিকানের এক্সপ্রেসের (Bikaner-Guwahati Express) একের পর এক কামরা। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, লাইন থেকে ছিটকে পড়ে কয়েকটি বগি। একটির উপর, উঠে যায় আরেকটি কামরা। কিন্তু, কেন হল এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা? লাইনের সমস্যা? না কি, বগির কোনও সমস্যা ছিল? তা খতিয়ে দেখতে, তদন্ত শুরু করেছেন কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের চালক, সহকারী চালক ও গার্ডকে।


কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির তদন্তে উঠে এসেছে, ইঞ্জিনের ২ টন ওজনের ট্র‍্যাকশন মোটর ভেঙে গেছে। কিন্তু, কী করে ভাঙল এই ট্র‍্যাকশন মোটর? রেল সূত্রে খবর, ট্র‍্যাকশন মোটর অ্যাক্সেল থেকে ঝোলানো থাকে। কোনও কারণে ট্র‍্যাকশন মোটরের এই ভাবে খুলে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার নজির সে অর্থে নেই। বিকেল চারটে পাঁচ মিনিটে, বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে রওনা দেয়। এরপর, স্টপেজ না থাকা সত্বেও জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে দাঁড়ায় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। রেল সূত্রে খবর,  রানিনগর স্টেশন পেরনোর সময়ে ইঞ্জিন ও জেনারেল কামরার নীচে আগুনের ফুলকি দেখতে পেয়েছিলেন লাইনে কর্মরত কর্মীরা।তাঁরা বিষয়টি চালক ও গার্ডকে জানান। রিপোর্ট করা হয় কন্ট্রোল রুমে। সেখানে এক দফা ট্রেন পরীক্ষা করা হয়। তবে, সেভাবে কিছু নজরে পড়েনি বলে ফের ট্রেন চালানো হয়।


দোমোহনির যে অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই আপ লাইন দিয়ে তার আগেই দুটি মালগাড়ি গেছে। এই দুই মালগাড়ির চালক ও গার্ড লাইনের কোনও সমস্যা কথা পরবর্তী স্টেশন বা কন্ট্রোল রুমে জানাননি৷ রেলের লাইন পরীক্ষার কাজে নিযুক্ত কর্মীরাও জানিয়েছেন, তারা লাইনে কোনও ত্রুটি দেখেননি। এই অবস্থায়, কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি খতিয়ে দেখতে চাইছেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে কেন ট্রেন দাঁড়িয়ে গেল? কর্মীরা কী দেখেছিলেন? রেল বিশেষজ্ঞদের অনেকের অনুমান, ICF কোচের ব্রেক-শু কোনও ভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ঘসা খাচ্ছিল।তার ফলে, জেনারেল বগির চাকা গরম হয়ে যাওয়ার কারণে আটকে যায়।  তাই দু'বার এমারজেন্সি ব্রেক কষেন চালক। ইঞ্জিন দাঁড়িয়ে গেলেও, বগিগুলি চলন্ত থাকায়, প্রচন্ড গতিতে একে ওপরের উপর উঠে যায়। লাইন থেকে ছিটকে পড়ে কামরা।রবিবার ফের ট্রেনের ইঞ্জিন পরীক্ষা করা হয়। সোমবার, দুর্ঘটনাস্থলে আসবেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।


আরও পড়ুন: Birbhum News: ফের চালু হল ব্যবসা, বিধি মেনে বীরভূমে খুলল হোটেল, রিসর্ট