কলকাতা: এই ছবি করার আগে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তিনি আর ছবি করবেন না। তবে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের (Shiboproshad Mukherjee) কথা শুনে মত বদলেছিলেন। গল্প শুনে মনে হয়েছিল, যেখানে পরিবার টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যাচ্ছে, সেখানে একজন মা ছেলের এমন গল্প বলা জরুরি। ছেলে চাকরি করে, আর বাড়িতে তাঁর মা। সেই মা ছেলের সমীকরণ নিয়েই বলা গল্প 'আমার বস'। শুক্রবার মুক্তি পেল সেই ছির ট্রেলার। আর সেই ছবির ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠানেই হাজির ছিলেন রাখী গুলজার (Rakhi Gulzar)। ট্রেলারে ধরা পড়ল মা ছেলের আবেগের গল্প, আর এই ছবি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজেও যেন আবেগে ভাসলেন রাখী।

ট্রেলারে দেখানো হচ্ছে, শিবপ্রসাদ একটি অফিসের বস। বাড়িতে তাঁর অসুস্থ মা। কিন্তু সেই মাই যদি হঠাৎ অফিসে চলে আসে তো? ট্রেলার জুড়ে রয়েছে মা ছেলের টক ঝাল মিষ্টি সম্পর্কের গল্প। সেখানে যেমন ভালবাসা রয়েছে, তেমনই রয়েছে দ্বন্ধ। মা অফিসে আসতে চাইলে ছেলের তাতে আপত্তি, অন্যদিকে মায়ের ইচ্ছা, বাবা মায়েদের দেখার জন্য অফিসেই একটা ক্রেস খোলার। মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন রাখী গুলজার। ছেলের চরিত্রে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। মা ছেলের এই দ্বন্ধের শেষ হয় শিবপ্রসাদের মুখে কিংবদন্তি সংলাপ বসিয়ে, 'মেরে পাস মা হ্যায়...' ছবি জুড়ে যে আবেগ রয়েছে, তার ঝলক দেখিয়ে নির্মাতাদের অনুরোধ, সবাই যেন বাবা মা কে নিয়ে ছবিটি দেখেন। 

রাখী গুলজারের সঙ্গে অভিনয় করা ও তাঁকে পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা নিয়ে শিবপ্রসাদ বলছেন, 'আমি ধন্য যে আমি রাখীজির সঙ্গে কাজ করেছি। আমি ওঁকে ফোন করেছিলাম ছবির গল্প শোনানোর জন্য। তারপরে বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতেই উনি সুকুমার রায়ের কবিতার আদলে আমায় ঠিকানা বোঝালেন। তখনই বুঝে গিয়েছিলাম আমি যাঁর সঙ্গে কাজ করতে চলেছি তিনি আমাদের থেকে অনেক বেশি বাঙালি। বাংলার মাটির যে সুগন্ধ, সেটা ওঁর ঘরের মধ্যে রয়েছে। উনি শর্ত দিয়েছিলেন পুরো গল্পটা আমায় পড়ে শোনাতে হবে। আমি রাজি হয়ে যাই। আমি স্ক্রিপ্ট লেখে দিদির বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। বাকিটা ইতিহাস। দিদি দেখলাম চরিত্রের কস্টিউম নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিলেন। তখনই আমার মনে হয়েছিল, দিদি কাজটায় রাজি হবে। উনি ছবিটার মধ্যে ঢুকে পড়েছেন। তারপরে আমি দিদিকে ফোন করেছিলাম, বলেছিলাম আমি হিরো। দিদি আমায় বলেছিলেন, তোমার পেট আগে যায়, মুখ পরে। অথচ দিদিই আমায় শর্ত দিয়েছিলেন, উনি ছবিটা তখনই করবেন যখন আমি ছেলের চরিত্রে অভিনয় করব। তারপরে আমার একটা নতুন ক্লাস শুরু হয়েছিল। পাতে আলু থাকলে দিদি রাগ করতেন। তবে শ্যুটিং-এর শেষের দিনটা গোটা ইউনিট কাঁদছিল। সবাই দিদির থেকে এত ভালবাসা পেয়েছিলাম।'