কলকাতা: অভিনয় তাঁদের রক্তে। তাই মেয়ে অভিনয় করবে এই নিয়ে কোনও আপত্তি ছিল না তাঁর। কিন্তু মেয়ে আদৌ অভিনয়টা পারবে তো? নাকি ছবি অসফলতা দেখে মনের ওপর চাপ পড়বে! পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের টাকার ক্ষতি হবে প্রযোজকেরও। ৯০ এর দশকের প্রথম সারির সেই অভিনেতা ভয়ে পরিচালককে বললেন, 'হর.. দু-একদিন শ্যুটিং দেখবি। তারপর বাদ দিয়ে নতুন নায়িকা নিয়ে নিবি।' মেয়ে জানতে পেরে অবাক হবে বলেছিল, 'বাবা! সবাই সবার ছেলে মেয়েকে সাহায্য করে আর তুমি আমায় ছবিতে নিতে বারণ করছো!' বাবার ভয়কে তুচ্ছ করে পরের প্রজন্মের প্রথম সারির নায়িকা হয়ে নিজেকে প্রমাণ করেছে সেই অভিনেত্রী। কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick) এখন প্রথম সারির নাম। আর ফেলে আসা সময়ের কথা বলতে গিয়ে এখনও হাসি খেলে যায় বাবা রঞ্জিত মল্লিকের (Ranjit Mallick) ঠোঁটে। সেই হাসি গর্বের। 


কোয়েল যখন অভিনয় জগতে পা রাখতে চাইল, কী অনুভূতি হয়েছিল বাবা রঞ্জিতের? এবিপি লাইভকে অভিনেতা বলছেন, 'কোয়েলের ছবি করা নিয়ে আমার কখনও কোনও আপত্তি ছিল না। কেবল ভয় ছিল। মনে হয়েছিল, ছবি সাফল্য না পেলে ওর মনের ওপর চাপ পড়বে। পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের টাকার ক্ষতি হবে প্রযোজকেরও। ভয়ে হরনাথ চক্রবর্তীকে বললাম, 'হর.. দু-একদিন শ্যুটিং দেখবি। তারপর বাদ দিয়ে নতুন নায়িকা নিয়ে নিবি।' কোয়েল জানতে পেরে অবাক হবে বলেছিল, 'বাবা! সবাই সবার ছেলে মেয়েকে সাহায্য করে আর তুমি আমায় ছবিতে নিতে বারণ করছো!' শুরু হল শ্যুটিং। হরনাথ ২ দিন পর এসে বলল, 'তুমি ভয় পেও না দাদা। আমি দেখে নিয়েছি। ও পারবে।'


আরও পড়ুন: Ranjit Mallick Exclusive: আধুনিক ছবিতে ২ জন প্রেম করছে, পিছনে ৫০ জন নাচছে, ভীষণ অযৌক্তিক লাগে


বাবার জুতোয় পা গলাচ্ছে মেয়ে। টিপস দিয়েছিলেন? হেসে রঞ্জিত মল্লিক বললেন, 'কোয়েলের এমনিই ভীষণ নিষ্ঠা। মন দিয়ে কাজটা করে। তবে ওকে বলেছিলাম, কোয়েল, রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে দর্শক প্রথম ছবিটা দেখতে যাবেন। বড় জোর দ্বিতীয় ছবিটা। তারপর আর তুমি রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে নও। তোমাকে প্রমাণ করতে হবে তুমি, তুমিই। কোনও বাবা মা তাঁর ছেলে মেয়েকে সবটা হাতে ধরে করিয়ে দিতে পারে না। শেখাতে পারে বড় জোর।' এখন বলতে পারি, কোয়েল ওর সাধ্যমতো খাটে, ভাবে, কাজ করে নিষ্ঠা দিয়ে। আর তার ফলও পেয়েছে।'