মুম্বই: বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার, ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বিবর্ণ হল বলিউড। প্রথমে ইরফান খান, তারপর ঋষি কপূর, চিরশান্তির দেশে পাড়ি দিলেন বলিউডের দুই কিংবদন্তি। আধুনিক ভারতের সেলুলয়েডে নতুন ধারার প্রেমের দূত ছিলেন ঋষি কপূর। আজ সকালে মুম্বইয়ের স্যর এইচএন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। রিল থেকে রিয়েল, সমান রঙিন ছিল বলিউডের এই 'চকলেট বয়'-এর জীবন। তাঁর জীবনে হওয়া এই ঘটনাগুলো জানেন কি?

  • ১৯৭৪ সালে 'জহেরিলা ইনসান' ছবিতে অভিনয় করার সময় প্রথম বন্ধুত্ব হয় নীতু সিংহ ঋষি কপূরের। ছবির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ঋষি বোঝেন, এ কেবল বন্ধুত্ব নয়, বরং তার থেকে আরও বেশি কোনও অনুভূতি। তখন মোবাইলের যুগ ছিল না। নীতুকে টেলিগ্রামে ঋষি লেখেন, 'সেই দিনগুলি বড্ড মনে পড়ে।'  ১৯৮০ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা। তাদের দুই ছেলে মেয়ে, রণবীর কপূর ও ঋদ্ধিমা কপূর সাহানি। ছেলে রণবীর একবার নাকি ফাঁস করেছিলেন, জুতো পরে ঠাকুরঘরে ঢুকে আসায় তাঁকে চড় মেরেছিলেন বাবা ঋষি।

  • ১৯৭৩ সালে প্রথম 'ববি' ছবির হাত ধরে রোম্যান্টিক ছবিতে পা রাখা নায়কের। সুপারহিট হয় সেই ছবিটি। কেবল তাই নয়, এই ছবি বদলে গিয়েছিল রুপোলি পর্দায় রোম্যান্টিক দৃশ্য শ্যুটিং করার ধারাও। এই ছবির গানেই প্রথম বদলেছিল গানে লিপ মেলাবার ধারা। ছবির পরিচালক রাজ কপূরের কথা মতো, কেবল গানে ঠোঁট মেলানো নয়, সব গানই শ্যুটিং এর সময় জোরে জোরে গাইতেন ঋষি। ফলে আরও নিঁখুত হত অভিনয়।

  • 'ববি' ছবিতে ঋষি কপূর ও ডিম্পল কপাডিয়ার রয়্যাল এনফিল্ডে চড়ে যাওয়ার দৃশ্য ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ২০০৫ সালে 'অল ইজ ওয়েল' ছবিতে ফের ওই দৃশ্যটি রিক্রিয়েট করা হয়।

  • 'মেরা নাম জোকার' ছবিতে নিজের বাবার চরিত্রের ছোটবেলার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ঋষি কপূর।

  • ২০১৭ সালে প্রকাশিত নিজের জীবনী 'খুল্লাম খুল্লা'-তে বাবাকে নিয়ে প্রচুর অজানা কথা বলেন ঋষি। জানান, একাধিক নায়িকাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বাবা রাজ কপূরের। তাঁর জন্যই 'সত্যম শিবম সুন্দরম' ছবিতে অভিনয়ের কাজ হাতছাড়া হয়েছিল রাজেশ খন্নার।

  • ২০১৮ সালে একবার 'কোন সচ্চা কোন ঝুটা' ছবি থেকে একটি জিআইএফ শেয়ার করেছিলেন এক অনুরাগী। সেখানে শ্রীদেবীর ছবি দেখে নাকি তাঁকে চিনতেই পারেন নি ঋষি কপূর। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হতে হয় তাঁকে।

  • ২০১৮ সালে বর্ষীয়ান এই নায়কের শরীরে বাসা বাঁধে ক্যানসার। এক বছরের ওপর মুম্বইতে থেকে চিকিৎসা করিয়েছিলেন তিনি।

  • নিউইয়র্কে থাকাকালীন একটি সেলুনে চুল কাটাতে যান ঋষি। সেলুনের মালিক চিনে ফেলেন তাঁকে। তারপরেই সেলুনে বাজিয়ে দেন ১৯৭৩ সালের 'ববি' ছবির সেই জনপ্রিয় গান ম্যায় সায়র তো নেহি। টুইটারে এই ঘটনাটি নিজেই জানিয়েছিলেন নস্টালজিক ঋষি।

  • মৃত্যুর ঠিক দুদিন আগে ঋষিকে সম্মান জানানোর জন্য তাঁরই ছবির ম্যায় সায়র তো নেহি গানের সঙ্গে একটি ভিডিও তৈরি করেন কর্ণ জোহর।