কলকাতা: তাঁর হাত ধরেই নিজেকে ভেঙেছিলেন, চেনা ছকের বাইরে বেরিয়েছিলেন 'টলিউডের ইন্ডাস্ট্রি'। বাংলা ছবি তাঁকে চিনেছিল নতুন করে, জেনেছিল তাঁর অভিনয় সত্তাকে। তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)। আর যাঁর হাত ধরে তাঁর জীবনের এই ভাঙাগড়া, নতুন অধ্যায়ের শুরু, আজ তাঁর প্রয়াণ দিবস। ঋতুপর্ণ ঘোষ (Rituparno Ghosh)।
প্রসেনজিৎতের উৎসব বাড়ির নিচের অফিসের দেওয়াল জুড়ে টাঙানো একের পর এক ছবি, 'দোসর', 'সব চরিত্র কাল্পনিক', 'চোখের বালি' ছবির পোস্টার। এই সব ছবিই প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণের স্মৃতির সঙ্গী। এই সব ছবির হাত ধরেই ছবি, ছবির বাইরে গড়ে উঠেছিল তাঁদের সম্পর্ক। দুই বন্ধুর গল্প জানত গোটা ইন্ডাস্টি। প্রসেনজিৎকে ঋতুপর্ণের নিজের হাতে সাজিয়ে দেওয়ার সেই ছবি এখনও কিংবদন্তি।
আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেন প্রসেনজিৎ। সিল্কের কাজ করা পাঞ্জাবি আর সূক্ষ কাজ করা শালে হাসছেন প্রসেনজিৎ। চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। তাঁর কাঁধে হাত দিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষ। তাঁর গায়ে কালো পোশাক, মাথায় টুপি, হাতে ঘড়ি। কানে লম্বা দুলের সঙ্গে গলায় পোশাকেরই একাংশ দিয়ে বেশ হারের মতোই ডিজাইন করা। চোখে গাড় কাজল। সব মিলিয়ে বেশ মানিয়েছে তাঁকে। প্রসেনজিতের কাঁধে হাত রেখে অন্যদিকে তাকিয়ে হাসছেন তিনিও। এই ছবি পোস্ট করে প্রসেনজিৎ লিখেছেন, 'কিছু শূন্যস্থান কখনো পূরণ হয় না... ভালো থাকিস ঋতু'
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবির সঙ্গে নিজের ছবি শেয়ার করে নিয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। সেখানে তিনি কবিতার কয়েকটি লাইন লিখে স্মরণ করেছেন কিংবদন্তি পরিচালককে। ঋতুপর্ণা লিখেছেন, 'তোমার স্মৃতি এখনো ভীষণভাবে জীবন্ত , উজ্জ্বল। যেখানেই থাকো ভালো থেকো'
ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবি শেয়ার করে নিয়েছেন অভিনেত্রী রণিতা দাসও। তিনি লিখেছেন, 'যে ঋতুর কখনও পরিবর্তন হয় না।'
২০১৩ সালে একটা মেঘলা সকালে হঠাৎ করে সবাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি। ঋতুপর্ণ ঘোষ। বাংলা ছবিতে তাঁর মতো করে নারী চরিত্রকে যেমন করে কেউ আঁকতে পারেননি, তেমনই লিঙ্গ নির্বিশেষে প্রেমকে দেখাতে পারেনি। বাংলা ছবিতে ঋতুপর্ণ ঘোষ চিরকালের এক সত্তা। সবার থেকে আলাদা।