কলকাতা: দীর্ঘ সময় ধরে তিনি অভিনয় করছেন মঞ্চে এবং বড়পর্দায়। তবে বাংলার দর্শক তাঁকে নায়ক হিসেবে চিনেছিলেন 'বল্লভপুরের রূপকথা'- (Ballavpurer Rupkotha)-র হাত ধরেই। আর সেই ছবিই তাঁকে সুযোগ এনে দিয়েছিল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboproshad Mukherjee) ও নন্দিতা রায়ের (Nandita Roy)-এর প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার। সত্য়ম ভট্টাচার্য্য (Satyam Bhattacharyya)। একদিকে তিনি যেমন মুগ্ধ 'রক্তবীজ' (Roktobeej)-এ কাজ করে, তেমনই সত্যমে মুগ্ধ শিবপ্রসাদও! এবিপি লাইভকে (ABP Live)- একে অপরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতার গল্প শোনালেন সত্যম ও শিবপ্রসাদ।


'রক্তবীজ'-এ কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে সত্যম বলছেন, 'উইন্ডোজের মতো প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে প্রত্যেকেরই কাজ করার ইচ্ছা থাকে। অভিনেতা হিসেবে আমারও ইচ্ছা ছিল, গোটা ভারতবর্ষের বড় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার। তাঁদের মধ্যে শিবুদা আর নন্দিতাদি তো ছিলেনই। ফেব্রুয়ারি মাসে আমার কাছে যখন রক্তবীজের অফারটা আসে, ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। বল্লভপুরের রূপকথা-র পরে ওঁরা আমার কাজের ভীষণ প্রশংসা করে নিজে থেকেই ডেকে পাঠিয়েছিলেন আমায়। চিত্রনাট্য পড়ে আমার ভীষণ ভাল লাগে। ওঁরা এতদিন ধরে যে ঘরানার কাজ করে আসছেন, 'রক্তবীজ'-এক্কেবারে অন্য স্বাদের ছবি। এই ছবিতে অনেক নামকরা অভিনেতারা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে থেকে আলাদা করে নিজের চরিত্রটা ফুটিয়ে তোলাই ছিল আমার কাছে গুরুদায়িত্ব। আশা করি সেটা করতে পেরেছি। শিবুদা-নন্দিতাদি প্রতিটা দৃশ্যের পরেই আমার খুবই প্রশংসা করতেন। শ্যুটিং ও ডাবিংয়ের শেষেরদিন ওঁরা খুব আন্তরিকভাবে জানিয়েছিলেন আমার সঙ্গে কাজ করে খুব ভাল লেগেছে। ওঁদের কাজ কেমন, সেটা বলার ধৃষ্টতা আমার নেই। তবে ওঁদের সঙ্গে কাজ করে অনেক কিছু শিখেছি। ভবিষ্যতে আমি নিজেকে পরিচালক হিসেবে দেখতে চাই, তাই প্রত্যেক পরিচালকের থেকেই অনেক কিছু শেখার আছে বলে মনে হয়। রক্তবীজের সেটে দাঁড়িয়ে একদিকে যেমন অভিনেতা হিসেবে শিখেছি, তেমনই পরিচালক হিসেবেও শিখেছি। শিবুদা আমার ভীষণ প্রিয় অভিনেতাও। একদিন ওঁদের সঙ্গে অভিনয়, পরিচালনা, প্রযোজনা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। সত্যি বলতে, রক্তবীজের শ্যুটিং আমায় অনেক কিছু শিখিয়ে গেল। 'গুমনামি'-র পর 'রক্তবীজ' আমায় পুজো রিলিজ। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করব এটা জানার জন্য মানুষের আমার চরিত্র কেমন লাগল।'


এ তো গেল অভিনেতার কথা। আর পরিচালকের চোখে সত্যমের কাজ কেমন? এবিপি লাইভকে শিবপ্রসাদ বলছেন, 'সিনেমাতে একটি দৃশ্য রয়েছে, যেখানে আবির এবং সত্যমের একটা দীর্ঘ কথোপকথন রয়েছে। এটি সিনেমার একটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য। আমি আর দিদি ভেবেছিলাম, দৃশ্যটা শ্যুট করতে অন্তত দু-তিনটে টেক তো লাগবেই। কিন্তু 'অ্যাকশন' বলা মাত্রই, সত্যমের দুর্দান্ত অভিনয় আমাদের অবাক করেছিল। এত সূক্ষ্ম কিছু ইম্প্রভাইজেশন সত্যম করল... যখন পরে আমরা দৃশ্য়টি আরও একবার মনিটরে দেখলাম, চমৎকার লাগছিল। ওর অভিনয় দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ও বাড়িতে চিত্রনাট্য পরেছে, এবং রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেছে। ভালরকমভাবে চরিত্রটাকে বুঝে, তারপর ক্যামেরার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সিনটি ওয়ান টেক ওকে হয়েছিল। অনেকদিন পর আমি এবং দিদি কোনও অভিনেতার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে হাততালি দিয়েছিলাম দৃশ্যটি শ্যুট হওয়ার পরে।'


সত্যমকে নিয়ে শিবপ্রসাদ আরও বলছেন, 'কোনও শটের মধ্যে বা কোনও ব্রেক টাইমে আমি একবারও দেখিনি ওকে নিজের ভ্যানিটি ভ্যানে বসে থাকতে। সবসময় ও সেটের মধ্যে আশেপাশে থাকত। ক্রমাগত নিজের অভিনয় নিয়ে ভাবত এবং আমার সাথে বা দিদির সঙ্গে আলোচনা করত। অনুশীলন করত, কিভাবে সংলাপটা বললে আরও ভাল শুনতে লাগবে। আমার বিশ্বাস এই একাগ্রতা এবং কাজের প্রতি ভালবাসা সত্যমকে অনেক অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের সঙ্গে সত্যমের এটা প্রথম কাজ এবং আগামীতে আরও অনেক কাজ একসঙ্গে করব এটাই আমার বিশ্বাস।'



আরও পড়ুন: Shah Rukh Khan: চূড়ান্ত সফল 'পাঠান', 'জওয়ান'.. ২০২৩-এর শেষেই 'ডাঙ্কি'-র ঘোষণা শাহরুখের