কলকাতা: দেবকে ব্যোমকেশকে ফুটিয়ে তুলতে যতটা চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছিল, ঠিক ততটাই চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছিল রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)-কে। সত্যবতীকে ফুটিয়ে তুলতে। টিজার মুক্তির পরেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন তিনি। কিভাবে নিজেকে সত্যবতীর চরিত্রে তৈরি করলেন তিনি? এবিপি আনন্দকে সেই সফরের কথা শোনালেন রুক্মিণী মৈত্র।
সত্যবতীর প্রস্তুতি নিয়ে রুক্মিণী বলছেন, 'আমার সত্যবতী আমার মতো। আমি ছবির চিত্রনাট্য পড়েছি, বই পড়েছি। শুভেন্দুদার, বিরসার সঙ্গে বসে চরিত্র নিয়ে আলোচনা করেছি। দামিনী বসুর কাছে ওয়ার্কশপ করেছি। সবশেষে নিজের সঙ্গে বসেছি, বোঝার চেষ্টা করেছি আমি কিভাবে নিজের কাজগুলোকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চাই। যদি অন্য কারও কাজ দেখতাম, তাহলে মনের মধ্যে বসে যেন সত্যবতী এইরকম বা ওইরকম। আমি আগে থেকে কিছু ভেবে চরিত্রটা করতে চাইনি। আমি ভীষণ আবেগপ্রবণ মানুষ। একটা নিয়মের মধ্যে নিজেকে ঢুকিয়ে, সত্যবতীর চরিত্রে অভিনয় করতে পারব না।'
শ্যুটিং শুরুর আগে, এই চরিত্রে রুক্মিণী নিজের প্রস্তুতির কথা এক্সক্লুসিভলি জানিয়েছিলেন এবিপি লাইভ (ABP Live)-কে। ওয়েব সিরিজ থেকে শুরু করে সিনেমার পর্দা, যতবার ব্যোমকেশ নিয়ে কাজ করেছেন বিভিন্ন পরিচালক, ততবারই নতুন নতুন সত্যবতীকে দেখেছেন দর্শক। কোথাও কি তুলনার ভয় থাকে? রুক্মিণী বলেছিলেন, 'আমি কখোনোই ভাবি না আমার অভিনয়টা অন্য কারোও মতো হয়ে যাবে। কারণ সেটা সম্ভব নয়। আমি কাউকে অনুকরণ করি না। আর বিরসা আমায় বলেছে, একেবারে নিজের মতো করেই অভিনয় করতে। প্রত্যেক অভিনেতা অভিনেত্রীই যখন চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে চায়, তার মধ্যে নিজস্বতা আনার চেষ্টা করে। পরিচালকের ক্ষেত্রেও তাই। আমি এইসব না ভেবে, চেষ্টা করি চরিত্রটার কতটা কাছাকাছি পৌঁছনো যায়।' আর ট্রোলিং? একটু হেসে নায়িকা বললেন, 'ট্রোলিং এখনকার ট্রেন্ড। ট্রোলিংয়ের কথা ভাবলে কাজই করা যাবে না। আমায় মা একটা কথা শিখিয়েছিলেন, 'তোমরা ট্রোলিং করো,আমি কাজ দিয়ে উত্তর দেব।' বেদবাক্যের মতো আমি এখনও সেটা মেনে চলি।'
দেব ব্যোমকেশ, রুক্মিণী সত্যবতী, পর্দায় এবার নতুন রসায়ন দেখবেন দর্শক? রুক্মিণী বলেছিলেন, 'আমি এখনও পর্যন্ত যতজন অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে সিরিয়াসভাবে কাজ করেছি দেবের সঙ্গে। অন্যান্যদের সঙ্গে হাসাহাসি, খুনসুটি চললেন, দেবের সঙ্গে কাজ করার সময় ক্যামেরা বন্ধ হলেও আমরা চরিত্রের মধ্যেই থাকার চেষ্টা করি। আসলে আমার ভয় লাগে, দেব কখন বকবে! আমরা সেটে আসি ব্যক্তিগত সম্পর্ককে বাড়িতে রেখে। এই ছবির ক্ষেত্রে একদিনই ওয়ার্কশপ হয়েছিল, সেদিন আমি আর দেব চরিত্র নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছিলাম একটু। এই গল্পে ব্যোমকেশ আর সত্যবতী দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাটিয়ে ফেলেছে। আর তাই ওদের মধ্যে সেই বিশ্বাস আর নির্ভরশীলতার বন্ধনটা ফুটিয়ে তোলা খুব জরুরি। তবে ক্যামেরার পিছনে আমাদের রসায়ন, ক্যামেরার সামনে আমাদের অভিনয়ের ক্ষেত্রে সাহায্য করেনি কখনও। ক্যামেরার সামনে দেব আর আমি সম্পূর্ণ আলাদা দুজন ব্যক্তিত্ব হয়েই কাজ করি। ব্যক্তিগত জীবন থেকে ধার নিয়ে অভিনয় করি না আমরা। আসলে শিল্পী দেবের প্রতি আমার যে শ্রদ্ধাটা রয়েছে, সেটা থেকেই হয়তো এই অনুভূতিটা আসে আমার।'
আরও পড়ুন: Dev on Feluda: পর্দায় ব্যোমকেশ আর ফেলুদা হওয়ার খিদে সব অভিনেতারই থাকে: দেব
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন