কলকাতা: সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। তিনি এলেন, পাঠ করলেন কাগজে লেখা একটি বয়ান। তারপরেই হাত জোড় করে বিদায় নিলেন মঞ্চ থেকে। সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা নয়, কোনও ব্যক্তিগত কথোপকথন নয়। তিনি মঞ্চ থেকে চলে যাওয়ার পরে তাঁর বয়ানের একটি করে কপি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দিলেন স্ত্রী চৈতালী। এখানেই শেষ। কিন্তু এতে কি ক্ষোভের আগুন পুরোপুরি নিভল? যে উত্তেজিত জনতা সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহুর্মুহূ ক্ষোভবর্ষণ করেছিলেন রূপঙ্কর বাগচীর প্রতি, তাঁরা কি সত্যিই এক্কেবারে শান্ত হয়ে গেলেন? বিবৃতি পড়েই 'কে কে'-কে নিয়ে করা তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের দায় সত্যিই কি ঝেড়ে ফেলতে পারলেন রূপঙ্কর?
কী ছিল রূপঙ্করের সেই বয়ানে? সঙ্গীতশিল্পী বললেন, 'আমার যে ভিডিও গত ক’দিন ধরে ভাইরাল হয়েছে, এখানে আসার ঠিক আগে আমি তা মুছে দিলাম। কে কে যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর ওপর আমার কোনও বিদ্বেষ নেই। আমার সঙ্গে কে কে-র পরিবারের কোনও যোগাযোগ নেই। তাই আমি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমেই তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি গুছিয়ে ঠিক বক্তব্য বলতে না পারায় এত বিতর্ক।'
আরও পড়ুন:Belashuru: 'দর্শক হুইলচেয়ারে করে এসেও 'বেলাশুরু' দেখেছেন', সাফল্যে আপ্লুত শিবপ্রসাদ
রূপঙ্কর আরও বলেন, 'কে কে-র প্রতি আমার কোনও বিদ্বেষ নেই। আমি আমার ফেসবুক লাইভের বক্তব্যে একার কথা বলতে চাইনি। বেশ কয়েকজন ট্যালেন্টের কথা বলতে চেয়েছিলাম। তবে, তাঁদের কারও অনুমতি না নিয়ে বলেছিলাম বলে দুঃখিত। গায়ক হিসেবে আমার কোনও হতাশা নেই। কিন্তু বাঙালি সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়ে জাতিগতভাবে আমি চিন্তা করি। কে কে-র নাম তুলে আনা একটি রূপক মাত্র। কে কে জানত কে কে-র জন্য চরম পরিণতি ওৎ পেতে রয়েছে।'
বিবৃতির প্রথমেই লেখা ছিল, প্রথমেই আমি কে কে-র পরিবারের কাছে নিঃশর্ত দুঃখপ্রকাশ করছি। আমার সঙ্গীত জীবনে এইরকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি। ওড়িশায় বসে করা একটি ভিডিও পোস্ট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক, দুর্ভাবনা এবং মানসিক নিপীড়নের মধ্যে। যেখানে আমার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা রক্ষায় পাহারা দেবে টালা থানার পুলিশ। নিয়মিত হুমকি এসেই যাবে আমার স্ত্রীর ফোনে। গায়ক হিসেবে দেশবিদেশে এত লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাদের আবেগ অনুভব করেছি এত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে। মুহূর্তের অসতর্কতা যে এমন গনগনে এবং মারমুখী আবেগ বয়ে আনবে কে জানত? এক ঘৃণা! এত আক্রোশ-এত বিরুদ্ধতা, কিন্তু অনেকটাই তৈরি হল আমার বক্তব্য আমি ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে না পারায়।'