কলকাতা: হঠাৎ বাড়িতে হাজির উত্তমকুমার (Uttam Kumar)। এক চিলতে ভাড়া ঘরে কোথায় বসতে দেবেন, কী করবেন, ঠিক করতে পারছিলেন না কিশোরী মেয়ে। তার ওপরে বাবা সটান টাকা চেয়ে বসলেন সেই উত্তম কুমারের থেকেই! লজ্জায় লাল কিশোরীর কথা বন্ধ বাবার সঙ্গে। কে সেই কিশোরী? আর কেউ নয়, কিংবদন্তি অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় (Sabitri Chatterjee)। সেলিব্রিটি টক শো, অপুর সংসারে এসে সাবিত্রী শুনিয়েছিলেন মহানায়কের সঙ্গে কাজ করার সেই অভিজ্ঞতা।
তখন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় কিশোরী। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সবে থিয়েটার করছেন। পাশাপাশি চলছে পড়াশোনাও। সেই ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সূত্রেই হঠাৎ একদিন নাটকের রিহার্সালে গিয়ে আলাপ হয়ে যায় উত্তমকুমারের সঙ্গে। সেই সময় থিয়েটার করতেন উত্তমকুমারও। তাঁর থিয়েটারে দরকার ছিল এমন এক কিশোরীর যে বাঙাল ভাষা বলতে পারে। আলাপ হওয়ার পরে উত্তমকুমার সাবিত্রীকে বলেন তাঁর দলে থিয়েটার করতে। সাবিত্রী বলেন, উত্তমকুমারকে স্বয়ং গিয়ে তাঁর বাবার কাছে অনুমতি নিতে হবে। সেই কথা মেনে নিয়ে উত্তমকুমার হঠাৎ একদিন চলে আসেন সাবিত্রীর বাড়ি।
সাবিত্রীর বাড়িতে, তাঁর বাবার কাছ থেকে সাবিত্রীকে থিয়েটারে পাঠ করতে দেওয়ার অনুমতি চান উত্তমকুমার। সাবিত্রীর বাবা শর্ত দেন, বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে হবে সাবিত্রীকে, আবার ফিরিয়ে দিয়ে যেতে হবে। রাজি হয়ে যান উত্তমকুমার। এরপরেই অবাক কাণ্ড করে বসেন সাবিত্রীর বাবা। অভিনয়ের পারিশ্রমিক হিসেবে অ্যাডভান্স চেয়ে বসেন উত্তমকুমারের কাছে। সাবিত্রীর কথায়, 'বাড়িতে উত্তমকুমার এসেছেন, কোথায় বসতে দেব তাই ঠিক করতে পারছি না আর বাবা তাঁর কাছে অ্যাডভান্স টাকা চেয়ে বসলেন। উনি তো (উত্তমকুমার) পকেট হাতড়ে যা পারেন তাই দিয়ে গেলেন। কিন্তু আমি তারপরে বাবার সঙ্গে অনেকদিন কথা বলিনি। বাবা অবশ্য বলেছিলেন, সংসার চলে না... আবার লজ্জা।'
আসলে সেই সময়ে ভীষণ অভাবেই মধ্যে দিয়েই দিন গুজরান হত সাবিত্রী আর তাঁর পরিবারের। সেই কারণেই ন্যায্য পারিশ্রমিক দাবি করেছিলেন সাবিত্রীর বাবা যা সেই বয়সে সাবিত্রীর কাছে ছিল ভীষণ লজ্জার। অপুর সংসার-এ এসে সেই গল্পই তুলে ধরলেন সাবিত্রী।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।