কলকাতা: মঙ্গলবার ধারাবাহিকের শেষ শ্যুটিং। শনিবার রাতে শ্যুটিং সেরেই ফিরছিলেন অভিনেতা। তিন বছরের দীর্ঘ যাত্রা প্রায় শেষের মুখে। বাড়িতে কথা বলতে গিয়ে এখনও মাঝে মাঝে 'সাধক বামাক্ষ্যাপা'-র টানেই কথা বলে ফেলেন তিনি। আর তারপর বকুনি শোনেন বাড়ির লোকেদের কাছ থেকে। শ্যুটিং শেষ হওয়ার পর পরিবর্তন আসবে ব্যক্তিগত জীবনে? 'সাধক বামাক্ষ্যাপা'-র সফরকে এবিপি লাইভের সঙ্গে ফিরে দেখলেন সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। 


বামদেবের চরিত্রে অভিনয় কী কী বদল এনেছিল ব্যক্তি সব্যসাচীর জীবনে? অভিনেতা বলছেন, 'প্রত্যেক চরিত্রেরই একটা মানসিক প্রস্তুতি থাকে। বামদেবের চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়েও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল আমায়। সেইসঙ্গে আমি ৩ বছর চুল দাড়ি কাটিনি। অবিন্যস্ত ভাবেই চুল দাড়ি বাড়তে দিয়েছি, চরিত্রের জন্য ঠিক যেমনটা প্রয়োজন ছিল। ওজনও বাড়াতে হয়েছে বেশ কিছুটা। সাধারণ কথাবার্তা মাঝে মাঝেই বামদেবের মত করে বলে ফেলি। ধারাবাহিক শেষ হলে এই অভ্যাসগুলো থেকে বেরতে সময় লেগে যাবে কিছুটা।' শ্যুটিং শেষ হওয়ার পর বামাক্ষ্যাপার চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসতে কী ছোটপর্দা থেকে বিরতি নেবেন তিনি? সব্যসাচী বললেন, 'আমি ছোটপর্দা, বড়পর্দা বা ওটিটিকে আলাদা করতে বিশ্বাসী নই। আমার কাছে সবই অভিনয়ের এক একটা মাধ্যম। তবে আমার নিজের বামদেবের চরিত্রটা থেকে বেরিয়ে আসতে একটু সময় লাগবে। আমি বিশ্বাস করি দর্শকেরও একটু সময় লাগবে আমায় অন্য চরিত্রে দেখতে। কিছু কাজের কথা হলেও এখনও কিছু চূড়ান্ত করা হয়নি। একটু বিরতি নিয়ে ফের নতুন চরিত্রে ফেরার ইচ্ছা আছে।'


আরও পড়ুন: IIFA 2022: '২২তম আইফা অ্যাওয়ার্ড' অনুষ্ঠানের নতুন দিন ঘোষণা


ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পর নিজের লুক বদলে ফেলবেন সব্যসাচী? হাসতে হাসতে অভিনেতা বললেন, 'ওজন তো কমাতেই হবে খানিকটা। বাকি যে চরিত্রে ভবিষ্যতে অভিনয় করব তার ওপর লুক নির্ভর করছে।' কোন ধরনের চরিত্রে কাজ করতে চান সব্যসাচী? অভিনেতা বলছেন, 'আমার একটু গাঢ় চরিত্র পছন্দ যার অনেকগুলো স্তর রয়েছে। তাতে নিজের মত করে অভিনয় করা যায়। বামাক্ষ্যাপায় আমি সেই সুযোগ পেয়েছিলাম। এবার একটু অন্যধরণের চরিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছা আছে।'


দীর্ঘদিন বামাক্ষ্যাপা হিসেবে সব্যসাচীকেই চিনেছেন মানুষ। দর্শকদের এমন কোনও প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা মনে রাখবেন চিরকাল? সব্যসাচী বললেন, 'আমি সাধারণত শো করতে যাই না। খুব কম কয়েকবার গিয়েছি। মেদিনীপুরের একটা ঘটনার কথা মনে আছে আমার। প্রচুর মানুষ দেখা করতে এসেছিলেন আমার সঙ্গে। অনেকেই আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন। একজন ব্যক্তি এসেছিলেন, তাঁর অত্যন্ত দরিদ্র অবস্থা। তিনি আমায় ওনার বাড়িতে নিয়ে যাবেন। শেষে জোর করে আমার হাতে ৫০ টাকা গুঁজে দিলেন। কিছুতেই নিতে চাইছিলাম না আমি। শেষে বাধ্য হয়ে নিলাম। ওই টাকাটা এখনও আমার কাছে রাখা আছে।'


আর পরিবার? সব্যসাচী বললেন, 'বাড়িতে প্রথমে কেউই চায়নি আমি অভিনয়ের জগতে আসি। তখন বামাক্ষ্যাপার অভিনয় করছি। বাবা একদিন বাজার থেকে এসে বললেন, সবাই বলছে আমি নাকি ভালো অভিনয় করছি। মানুষ আমায় চিনছে এতে খুশি হন বাবা। তবে মুখে কিছু বলেন না। আর হ্যাঁ, বাড়িতে বামাক্ষ্যাপার মত করে কথা বলে ফেললে সবাই খুব বকাবকি করে, বিশেষ করে ঐন্দ্রিলা...' লাজুক হাসলেন সব্যসাচী।