কলকাতা: সবাই যখন মহানগরের পুজোয় আলো মাখতে ব্যস্ত, তখন প্রেমিকাকে আগলে শহর থেকে অনেক দূরে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। বহরমপুর। সেখান থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিলেন অন্যরকম এক পুজো উদযাপনের ছবি। অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীর ফেসবুক পেজ থেকে হদিশ মিলল প্রেমিকা ঐন্দ্রিলার সঙ্গে পুজো কাটানোর অভিজ্ঞতা।


সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোস্ট দিয়ে ঐন্দ্রিলা ও নিজের ছবি ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। সব্যসাচী লিখছেন, 'অনেক বছর পর বেশ অন্যরকম পুজো দেখলাম। গত কয়েক বছর ধরে আমি পুজোতে কলকাতায় থাকতাম না, ইচ্ছা করতো না, পুজোর ছুটি পেলেই মোটরসাইকেল নিয়ে পাড়ি দিতাম দূরদূরান্তে। এই বছর আমি কোথাও যাইনি। তবে অষ্টমীর ভোররাতে দুচাকার মায়া ত্যাগ করে চারচাকা নিয়ে কলকাতা ছেড়েছিলাম, গন্তব্য বহরমপুর। প্রসঙ্গত বলি, ঐন্দ্রিলার পৈতৃক ভিটে বহরমপুরে, এই শহরেই ওর বেড়ে ওঠা, তাই ওর কল্যানেই এই বছর পুজোতে আমার বহরমপুরে আগমন।



আমি এই প্রথমবার এখানে এলাম, তবে বহরমপুরের মাটিতে পা দিয়েই বুঝলাম, এই মাটির হৃদ্যতা আলাদা। গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে পাড়ার পূজামণ্ডপ থেকে লোকজন ছুটে এলো ওর খবর নিতে, ভোগ খাওয়ানোর জন্য ঝুলোঝুলি, টিফিন বক্সে করে খিচুড়ি, পোলাও, আলুরদম, চাটনি সাজিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিলো। পাড়ার পুজোখানি ছোট্ট বটে কিন্তু আবেগে ভরপুর। সবার আগে দৌড়ে এসেছিলো গোপাল বা গেপু, ঐন্দ্রিলার ছোটবেলার খেলার সাথী। গোপাল আমার পূর্বপরিচিত, ঐন্দ্রিলাকে বিশ্রাম নিতে বাড়িতে পাঠিয়ে আমরা দুজন বেরোলাম ঘুরতে।'

 

এখানেই শেষ নয়, বহরমপুরে হওয়া একটা ছোট্ট ঘটনার কথা ভাগ করে নিলেন সব্যসাচী। তিনি লিখছেন, 'ঐন্দ্রিলা আর গোপালকে নিয়ে হাজারদুয়ারি গিয়েছিলাম। তখন অবশ্য বন্ধ হবার মুখে। ওই বিশাল স্থাপত্যের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বড় তুচ্ছ মনে হয়। সূর্য ডুবেছে অনেকক্ষণ হলো, আকাশে তখন অস্তরাগ। মদিনা মসজিদের আজানের ধ্বনিতে আকাশ মুখরিত, এদিকে হিজাব পরিহিত মুসলমান পরিবার, দল বেঁধে দুগ্গাপুজো দেখতে যাচ্ছে। তারই মধ্যে থেকে হঠাৎ একজন হুমড়ি খেয়ে এসে আমায় প্রণাম করে বললো “ ভাইয়া আমি মুসলমান, কিন্তু আমি আর আব্বাজান রাতে বামাখ্যাপা না দেখে খেতে বসি না। পায়ে হাত ঠেকালাম ভাইয়া, কিছু মনে করবেন না।” গলার কাছটা কেমন দলা পাকিয়ে এলো আমার। জড়িয়ে ধরলাম মুসলমান ভাইটিকে।

এইটুকুই তো পুজো। বাকি সব আড়ম্বর মাত্র।' (অপরিবর্তিত)

 

প্রসঙ্গত, সাধক বামাক্ষ্যাপা ধারাবাহিকের নাম ভূমিকায় অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন সব্যসাচী।