মুম্বই: জীবন টিকে থাকা আর সত্যিকারের বেঁচে থাকার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। মানুষের শরীরে প্রাণ থাকলেও অনেক সময়ে সে নির্জীব হয়ে থাকে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় সঞ্জয় দত্তের প্রথম পক্ষের কন্যা ত্রিশলা জানিয়েছেন, তাঁর বর্তমান অবস্থাটা এরকমই। এটা ঠিকই যে তিনি বেঁচে রয়েছেন, কিন্তু তাঁর যেন প্রাণ নেই। বেঁচে রয়েছেন নির্জীব হয়ে!

ত্রিশলা বলছেন, এমন নিষ্প্রাণ হয়ে বেঁচে থাকার অসহনীয় অবস্থা থেকে তিনি কবে যে মুক্তি পাবেন,  তা জানা নেই। তবে তিনি আশাবাদী যে একদিন তিনি সেরে উঠবেন এবং জীবনের স্বাভাবিকতা ফিরে পাবেন।

কেন ত্রিশলার এই মানসিক অবস্থা, এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। একটু পিছিয়ে যেতে হবে। বছরখানেক আগে ত্রিশলা-র বিশেষ বন্ধুর মৃত্যু হয়। আর ওই ঘটনার ধাক্কা তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এই বন্ধুর মারা যাওয়ার খবর পাওয়ার পরই ভেঙে পড়েন তিনি। বিচ্ছেদের শোক তাঁকে গ্রাস করে ফেলে। নিজেকে বাড়ির মধ্যে বন্দি করে  ফেলেন ত্রিশলা। নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলও প্রাইভেট করে দেন। নিজের স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে লকডাউনের সময়কালে বাড়িতে থেকে কাউন্সেলিংও করান। কাউন্সেলিংয়ে ফল মিলছে। তিনি অনেকখানি সেরে উঠেছেন বলেও জানান সঞ্জয় কন্যা। এতদিনে তিনি ব্যাপারটা নিয়ে মুখ খুললেন।

আসলে ত্রিশলা এমন একটা বাতাবরণের মধ্যে রয়েছেন যে তিনি স্বাভাবিক মানসিক অবস্থাতে যেন আসতেই পারছেন না। কিছুদিন আগেই তাঁর বাবা সঞ্জয় দত্তের ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়েছে। সঞ্জয় আমেরিকায় চিকিৎসা করাতে গেলে, সেখানে স্ত্রী মান্যতা, বোন প্রিয়ার এবং ত্রিশলারও যাওয়ার কথা ছিল। তবে আপাতত করোনা পরিস্থিতিতে আর বিদেশে না গিয়ে দেশেই চিকিৎসা করাচ্ছেন সঞ্জয়। তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন বলেও জানা গিয়েছে পরিবারের সূত্রে।

ত্রিশলা জানিয়েছেন, ‘আমি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে উঠিনি। এখনও আমার চিকিৎসা চলছে। গ্রিফ থেরাপিস্ট ভার্চুয়ালি সাহায্য করছেন। আমি পরিবারের লোকজন এবং বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। তবে সবটাই ভার্চুয়ালি। কারণ, করোনা আবহে একে অপরের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। আমি বেশ কিছুদিন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে ছিলাম। কারণ, ব্যক্তিগত সময় কাটাতে চেয়েছিলাম। আমার যা ক্ষতি হয়েছে, সেটা উপলদ্ধি করা প্রয়োজন ছিল। আমার গ্রিফ থেরাপিস্ট অনেক সাহায্য করেছেন। দেড় বছর ধরে আবেগপ্রবণ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে ক্ষতিটা মেনে নিতে পারছি।’