কলকাতা: গল্ফগ্রীনের অফিসে পুজো, সেখানে যাওয়ার জন্যই সকালবেলা তৈরি হচ্ছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। তবে তাঁর পরিচয় কেবল একজন অভিনেতা নয়, বিজেপির সক্রিয় কর্মীও বটে। নির্বাচনের আগে অনেক দায়িত্ব তাঁর। তবে রুদ্রনীলের দায়িত্ব নেওয়ার হাতেখড়ি ক্লাস এইটে। হাওড়া কেদারনাথ ইনস্টিটিউটে।
ছোটবেলায় ছবি আঁকতে ভালোবাসতেন রুদ্রনীল। তাই ঠাকুর সাজানোর গুরুভার পড়ত তাঁরই ওপর। সরস্বতী পুজোর দিন ছোটবেলার স্মৃতি উস্কে এবিপি আনন্দকে রুদ্রনীল বললেন, ‘তখন ক্লাস এইট বা নাইন, আমার ওপর দায়িত্ব এল স্কুলের পুজোয় ঠাকুর সাজানোর। একই স্কুলে সকালে মেয়েরা আর বেলায় ছেলেদের ক্লাস হত। পুজো কিন্তু একটাই। ওই একদিন ছেলে-মেয়ে সবাই একসঙ্গে স্কুলে আসতাম। গুরুদায়িত্বের মধ্যেও যে একটা রোমাঞ্চ আছে সেটা সেইসময় অনুভব করেছিলাম। তারপর অবশ্য দুর্গাপুজোর আয়োজন করে হাত পাকিয়েছি।’
সরস্বতী পুজো মানেই বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে। প্রথম শাড়ি পরা থেকে শুরু করে প্রেমপত্র, সরস্বতী পুজো তো বড় হয়ে ওঠার। রুদ্রনীল বলছেন, ‘এখনকার অল্পবয়সী মেয়েদের মধ্যে থেকে শাড়ি পরার চলটাই প্রায় উঠে গিয়েছে। তখন কিন্তু সব বয়সের মেয়েরাই শাড়ি পরে স্কুলে আসত। সবাইকে সেদিন অন্যরকম লাগত। খুব পরিণত দেখাত। আমার তো সরস্বতী পুজোয় সবাইকেই ভালো লাগত।’ কখনও কাউকে প্রেম প্রস্তাব দিয়েছেন? একটু হেসে রুদ্রনীল বললেন, ‘সেইসময় সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। এমনকি বাড়িতে টেলিফোন থাকাটাও ছিল বেশ বড় ব্যাপার। দূর থেকে দেখতাম যাকে ভালো লাগত। ব্যাস ওইটুকুই।’
মানিকতলায় আজ সরস্বতী পুজোর আয়োজন করেছিল এবিভিপি। এর আগে দুর্গাপুজোরও আয়োজন করেছিল বিজেপি। সরস্বতী পুজোতেও রাজনীতির রঙ লাগছে! রুদ্রনীল বললেন, ’৩৪ বছরে বামপন্থীরা ভগবানে বিশ্বাস করতেন না। তাই সেইসময় প্রকাশ্যে পুজো করতে দেখা যায়নি রাজনৈতিক নেতাদের। তবে তাঁরা পুজোর ভীড়কে ব্যবহার করতেন অন্যভাবে। প্রত্যেক মণ্ডপের সামনে বই বিক্রি করতেন সিপিএম কর্মীরা। কিন্তু পুজোকে জনসংযোগের মাধ্যম করে তুলেছে তৃণমূল। বিসর্জনের কার্নিভাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎসব, সবটারই উদ্যোক্তা তৃণমূল। যে পুজোগুলি পুরস্কার পায়, সেগুলির প্রত্যেকটির মাথাতেই তো একজন করে নেতা বা নেত্রী আছেন। আর সরস্বতী পুজো তো ছাত্র-ছাত্রীদেরই পুজো। এবিভিপি সেই আয়োজন করতেই পারে। তবে তৃণমূল যেভাবে পুজোগুলোকে জনসংযোগ করতে ব্যবহার করেছে সেটা বিজেপি এখনও ডিঙিয়ে যেতে পারেনি।’