কলকাতা: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতে যোগ দেবেনই? দীর্ঘ জল্পনা ফের উস্কে দিয়েছে সিএনএক্স জনমত সমীক্ষা। যেখানে দেখা গিয়েছে, ৭৭ শতাংশ মানুষ চান রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়কের।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ নিয়ে জল্পনা দীর্ঘদিনের। অনেকের ধারণা, একসময় বাম শিবিরের ঘনিষ্ঠ ছিলেন সৌরভ। রাজ্যের প্রাক্তন এক মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা তো সর্বজনবিদিত। আবার পরবর্তীকালে রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে সৌরভের সুসম্পর্ক দেখা গিয়েছে। এমনকী, জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে ‘মহারাজ’কে পাশে দাঁড় করিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, সিএবি-র প্রেসিডেন্ট পদে বসবেন সৌরভই। আবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সৌরভের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার নেপথ্যে অনেকে বিজেপি-র ভূমিকার কথা বলেন। অনেকের দাবি, সৌরভকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট করার পাশাপাশি জয় শাহকে বোর্ড সচিব করার নেপথ্যে ছিল বিজেপি হাইকম্য়ান্ডের হাত। সম্প্রতি দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় অরুণ জেটলির মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল অমিত শাহ-সৌরভকে। সেই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, সৌরভ আসবেন জেনেই তিনি শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও কোটলায় গিয়েছিলেন।
আর তারপর থেকেই জল্পনা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কি সৌরভই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন? যদিও সৌরভের অসুস্থতা সেই আলোচনায় সাময়িক ছেদ টেনেছিল। তবে সিএনএক্সের সমীক্ষা বলছে, এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ চান সৌরভ সক্রিয় রাজনীতিতে আসুন। CNX সমীক্ষায় মানুষের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, আপনার কি মনে হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত? তাতে ৭৭ শতাংশ মানুষ বলেছেন, হ্যাঁ, সৌরভের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত। ২১ শতাংশ মানুষ অবশ্য বলেছেন, তাঁরা সৌরভকে রাজনীতির ময়দানে দেখতে চান না। বলতে পারব না, জানিয়েছেন মাত্র ২ শতাংশ মানুষ।
সৌরভ নিজে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেননি। প্রশ্ন করলেও সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে থেমে নেই জল্পনা। আবার পুরোপুরি থিতিয়ে গিয়েছে, এমনটাও বলা যায় না। কারণ, সৌরভের অসুস্থতা নিয়েও রাজনীতিবিদদের সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে সৌরভের সঙ্গে কথা বলে এসেছিলেন। বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব মহারাজের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছিলেন। ফোনে খোঁজ নিয়েছিলেন অমিত শাহ। শাসক-বিরোধী উভয় দলের নেতা-নেত্রীরাই সৌরভের শারীরিক অবস্থা জানতে তৎপর হয়েছিলেন। তবে তার মধ্যেও পরোক্ষে রাজনীতি ছিল না, জোর দিয়ে বলা যায় না। জনমত সমীক্ষার পর সৌরভের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা ফের তুঙ্গে।