সারা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসের জেরে আতঙ্কিত, তখন মানুষের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার ঘটানোর জন্যই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ‘কনসার্ট ফর হোপ’-এ ওস্তাদ আমজাদ আলি খান ও তাঁর দুই ছেলে ছাড়াও থাকবে সিঙ্গাপুরিয়ান চাইনিজ অর্কেস্ট্রা, যা পরিচালনা করবেন সুং ইয়ে। ভারতীয় রাগসঙ্গীতের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর ও চিনের সঙ্গীতের সংংমিশ্রণ দেখা যাবে এই অনুষ্ঠানে। ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতকে একই সুরে বাঁধার চেষ্টা করা হচ্ছে। সঙ্গীতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের আবেগ ও মেজাজ তুলে ধরা হবে।
এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে ওস্তাদ আমজাদ আলি খান জানিয়েছেন, ‘সংস্কৃত শব্দ সমাগমের অর্থ হল বিপুল জনসমাবেশ বা একসঙ্গে কোনও কাজ করা। শিল্পের সঙ্গে সমঝোতা না করেই ভারতীয় ও পাশ্চাত্য সঙ্গীত যাতে একে অপরের সঙ্গে মিশে যায়, সেটা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই ‘কনসার্ট ফর হোপ’ আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি রাগের আত্মা আছে। সব সঙ্গীতই ঈশ্বরের ডাক। সমাগমে ১২টি রাগ পেশ করা হবে। কোনও কোনও রাগ সামান্য সময়ের জন্য পেশ করা হবে। অন্য রাগগুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য পেশ করা হবে।’
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ভারত ও অন্যান্য দেশগুলিতে চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীদের লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়ে ওস্তাদ আমজাদ আলি খান বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে এখন যে সমস্ত চিকিৎসক, নার্স ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা এই কঠিন সময়ে টানা কাজ করে চলেছেন, তাঁদের আশীর্বাদ করুন ঈশ্বর।’
আয়ান আলি বাঙ্গাশ জানিয়েছেন, ‘এই কনসার্টের মাধ্যমে আমরা দু’ধরনের সঙ্গীতের সাদৃশ্যের ডিএনএ খুঁজে বের করতে চাই। সারা বিশ্ব যাতে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, আমরা সেই প্রার্থনা জানাচ্ছি। আমরা বলিউডের আগের সময়ের সঙ্গীত থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিয়েছি। ভারতীয় সঙ্গীতে কোনওরকম বিকৃতি না ঘটিয়েই আমরা প্রাচীন পাশ্চাত্য সঙ্গীতও ব্যবহার করছি।’
আমন আলি বাঙ্গাশ জানিয়েছেন, ‘আমরা অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আগামীদিনে রোজগার থাকবে কি না, সেটা নিয়েই অনেকে চিন্তিত। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই অন্যদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরাও বাড়িতে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন না।’
ওস্তাদ আমজাদ আলি খান সরোদ বাদক হিসেবে নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন। তিনি পদ্মবিভূষণ, ইউনেস্কো পুরস্কার সহ বহু সম্মান পেয়েছেন। তিনি ইউনিসেফের জাতীয় প্রচারদূতও হন। ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের ক্রিস্টাল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি।