ওয়াশিংটন:করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ফের চিনকে তোপ দাগলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, নোভেল করোনাভাইরাস নিয়ে চিনের পদক্ষেপ নিয়ে তাঁর প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
ট্রাম্প বলেছেন, আমরা সমগ্র পরিস্থিতির জন্য আদৌ চিনের ওপর খুশি নই। কারণ, আমি মনে করি, চিন একেবারে শুরুতেই তা আটকাতে পারত। দ্রুত এই ভাইরাসকে রোখা গেল তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ত না।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারি নিয়ে শুরু থেকেই চিনের বিরুদ্ধে সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের গলায়। অতি সংক্রমক এই ব্যাধির ছড়িয়ে পড়া রুখতে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে মাঝেমধ্যেই সওয়াল করেছেন। অনেক বিষেশজ্ঞই মনে করেন, এই প্রচেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তুতির সময় দিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বলে অভিযোগ।
ট্রাম্প বলেছেন, যা ঘটেছে, তাতে একটি দেশ ছাড়া অন্য কাউকে দায়ী করা যায় না।
তিনি বলেছেন, চূড়ান্ত অপদার্থতার কারণে যাঁদের আত্মত্যাগ করতে হল, তাঁদের কথা আমরা কোনওদিন ভুলতে পারব না। চিনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওরা শুধু আমাদের নয়, সারা বিশ্বকে সুরক্ষিত করতে পারত।
সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই ট্রাম্প দাবি করেন, আমেরিকায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার হ্রাস পাচ্ছে বা স্থিতিশীল হয়েছে।
তাঁর দাবি, সবদিক থেকেই পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। তিনি বলেছেন, এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল আমাদের। কিন্তু সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়েছি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কাজে যোগদানের একটা চূড়ান্ত ‘খিদে’ সবার মধ্যে দেখা দিয়েছে।
সমগ্র দেশের সুস্বাস্থ্যের জন্য অর্থনীতির স্বাস্থ্য ভালো করতে হবে এবং একইসঙ্গে এই দুটি লক্ষ্যে এগোতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প বলেছেন, দেশে কোভিড-১৯-এর জন্য অপ্রয়োজনীয়ভাবে এত বেশি প্রাণ ঝরে গেল।
তিনি বলেছেন, এটা থামানো যেতে পারত। স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা রোখা যেত। কিন্তু বহুদিন আগে কেউ একজন এই কাজ সেভাবে না করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এই কারণেই সারা বিশ্বকেই ভুগতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কার সম্পর্কে তিনি বলছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে কিছু জানাননি ট্রাম্প।
আগামী নভেম্বরে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কথা তিনি বিবেচনা করছেন কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচনের দিন বদলের ভাবনা তাঁর নেই।
এ ধরনের জল্পনাকে বিরোধী শিবিরের অপপ্রচার বলেও দাবি করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তাঁর সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেনকে একহাত নিয়েছেন ট্রাম্প।
ছয় সপ্তাহ সময়ের মধ্যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের থেকে অনেক বেশি মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে। যে প্রেসিডেন্টের আমলে এমন হয়েছে, তিনি কী পুণর্নিবাচিত হওয়ার দাবিদার হতে পারেন? এক সাংবাদিকের এই প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেছেন, এটা ঠিক যে, অনেক মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে অনুমানের তুলনায় মৃত্যু সংখ্যা অনেকটাই কম করা গিয়েছে। করোনা মোকাবিলায় তাঁর প্রশাসন অত্যন্ত ভালো কাজ করেছে বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। তাঁর সরকারের বিভিন্ন সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে মৃত্যুর সংখ্যায় রাশ টানা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।