মুম্বই: গত কয়েক মাস ধরে নানা ইস্যুতে নিজের স্পষ্ট অভিমত জানিয়ে প্রায় নিয়মিত সংবাদের শিরোনামে থাকছেন কঙ্গনা রানাউত। ট্যুইটার হ্যান্ডলে প্রতিভাবান অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল প্রয়াণের পর তার সঙ্গে বলিউডে মাদক পাচার চক্রের সংযোগের দাবি করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন তিনি। দীপিকা পাড়ুকোন, সারা আলি খান, শ্রদ্ধা কপূর, রকুলপ্রীত সিংহের মতো অভিনেত্রীদের ডেকে এ ব্য়াপারে জেরা করেছে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। বলিউডের একাংশ ক্যুইন অভিনেত্রীর পাশে থাকলেও তাঁর সমালোচনাও করেছেন কেউ কেউ। প্রবীণ অভিনেত্রী শাবানা আজমি এবার বললেন, কঙ্গনার ভয়, একদিন হয়তো শিরোনামে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে ‘অর্থ’ ছবির অভিনেত্রী বলেছেন, কঙ্গনা ওর নিজের মিথেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। ও বলেছে, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে নারীবাদ শিখিয়েছে, জাতীয়তাবাদ শিখিয়েছি। আমি খুশি যে, ও এটা করেছে কেননা আর কেউ এসবে নজরই দেয়নি। আমার মনে হয়, ও ভয় করছে, এমন দিন আসবে যে ও আর হেডলাইন হবে না, তাই খবরে থাকতে ওকে আপত্তিকর, বেফাঁস কথাবার্তা বলতে হয়। বেচারা মেয়ে। কেন ওটা যেটা সবচেয়ে ভাল পারে, শুধু সেটাই করে না, অভিনয়!

দর্শকরা এবং ফিল্মি দুনিয়ার লোকজন নিজেরাই যেভাবে হিন্দি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে আক্রমণ করছে, তা নিয়ে শাবানা বলেছেন, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন, এটাই আমার প্রাথমিক পরিচয়, এ জন্য আমি গর্বিত। দুর্ভাগ্যের বিষয়, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ঘা খেয়েই চলেছে, পরশ্রীকাতরতা থেকে অভিযোগ করা সহজ। বেহাল অর্থনীতি, চিন সীমান্তে উত্তেজনা, ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ, কৃষক আন্দোলনের মতো আসল ইস্যু থেকে নজর ঘোরানোর নিয়মমাফিক অভিযান চলছে, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তথাকথিত খারাপ দিকের ওপর আলো ফেলা হচ্ছে। যেমনটা উর্মিলা মাতন্ডকর বলেছেন, ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিকে যতটা ভয়ঙ্কর বলে দেখানো হচ্ছে, সত্যিই বাস্তবে তেমন হলে কেন প্রধানমন্ত্রী বলিউডের লোকজনকে ডেকে তাঁদের মহাত্মা গাঁধীর আদর্শের ওপর ছবি করতে বললেন?
গত কয়েক মাস ধরে যেভাবে দোষ খুঁজে বের করে টার্গেট করা হচ্ছে, তার নিন্দা করে সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলায় রিয়া চক্রবর্তী মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার বলেও অভিযোগ করেন শাবানা। সুশান্ত মামলাকে দৃষ্টান্ত হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না যে, শুরু হল স্বজনপোষণের অভিযোগ দিয়ে, তারপর রিয়াকে খুন, সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা হাতানোয় অভিযুক্ত করা হল, যার কোনওটারই ভিত্তি নেই। এইমসের রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, এটা হত্যা নয়। সুতরাং ‘সুশান্তের জন্য ন্য়য়বিচার’ পরিণত হল ‘মাদকাসক্তদের মূলোচ্ছেদ’-এ। গোলপোস্ট বারবার বদলাচ্ছে। আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে সেনসেশন ছড়ানো হচ্ছে।