কলকাতা: শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্র (Nirmala Mishra)। শেষ জীবনে ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত অসুখে। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। গায়িকার স্মৃতিচারণায় অপর কিংবদন্তি শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা (Haimanti Shukla)। 'শেষ বয়সে কষ্ট পাচ্ছিলেন, শান্তি প্রয়োজন ছিল,' এবিপি আনন্দকে ফোনে জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া।


নির্মলা মিশ্রের প্রয়াণে হৈমন্তী শুক্লার স্মৃতিচারণা


এদিন গায়িকা হৈমন্তী শুক্লা বলেন, 'সবাই চলে গেলেই আমাদের মন খারাপ হয়। নির্মলা দির জন্যও ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তবে শেষের দিকটায় উনি এত বেশি কষ্ট পাচ্ছিলেন যে আমরা ভাবতাম, ঠাকুর আর কষ্ট দিও না, এবার নিয়ে নাও। এবার নির্মলা দি শান্তি পেয়েছেন। নির্মলা দির মতো শিল্পীদেরই 'ইনবর্ন আর্টিস্ট' বলে। যখন যা গেয়েছেন তাই দুর্দান্ত। আসলে এটা খানিক বংশ থেকেও আসে। ওঁর বাবা জাত শিল্পী ছিলেন। ওঁর দাদা, মুরারী স্মৃতি সঙ্গীত প্রতিযোগিতা হত। সেখান থেকে আমরা সকলেই বেরিয়েছি। আমি তখনও খুবই ছোট্ট। যেতাম, গান করতাম। নির্মলা দি খুব আনন্দ পেতেন। নির্মলা দি ভাল গাইয়েকে খুব সম্মান দিতেন। আমার একটা গান উনি সব জায়গায় গাইতেন। খুব ভাল লাগত। নির্মলা দির সঙ্গে আমার ছোটবেলা থেকে অনেক স্মৃতি আছে। একবার চেতলায় গান গাইতে গিয়েছিলাম। নির্মলা দি সেখানে আমার তবলচিকে সরিয়ে বলেন যে আমার সঙ্গে তিনি বাজাবেন। সেই ছবিও আমার কাছে আছে।'


মজার কিছু মুহূর্ত মনে করে তিনি আরও বলেন, 'কোনও গম্ভীর পরিবেশে নির্মলা দি যেই আসতেন পরিবেশটাই বদলে যেত। মুখে আঙুল দিয়ে শিস দেওয়া বা একবার আমি বললাম তোমার চশমা এমন রং হল কীকরে! বলল, জানিস না, আমি নেলপলিশ দিয়ে রং করে নিয়েছি। এরকম মজাদার মানুষ ছিলেন নির্মলা দি। ওঁর মৃত্যুতে সত্যিই কষ্ট পাওয়ার থেকে এটা ভাবছি যে শেষমেশ শান্তি পেলেন। সারাজীবন এত গান করেছেন, এত মানুষের ভালবাসা পেলেন কিন্তু শেষ জীবনটা খুব মর্মান্তিক। যাই হোক! ঈশ্বর ওঁকে কোলে করে নিয়েছেন। যেখানেই থাকুন সুরে সুরে থাকুন। এটুকুই বলব। নির্মলা দিকে অনেক প্রণাম জানাচ্ছি। শেষের দিকে ওঁর ছবি দেখে এত খারাপ লাগত যে যেতে কষ্ট হত, ওঁর প্রতি প্রণাম।'


আরও পড়ুন: Nirmala Mishra Demise: প্রয়াত নির্মলা মিশ্র, শেষ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন রবীন্দ্রসদনে, কেওড়াতলায় শেষকৃত্য


আজই সঙ্গীতশিল্পী নির্মলা মিশ্রর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। গতকাল রাত ১২টা ৫ মিনিটে চেতলার বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ৮৪ বছরের শিল্পীর। রাতে দেহ রাখা হয় সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের একটি নার্সিংহোমে। সেখান থেকে  সকালে মরদেহ নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। এরপর রবীন্দ্রসদনে শেষশ্রদ্ধা জানানো হবে।