কলকাতা : সকাল থেকেই নীরব অসম। সকাল থেকেই মনখারাপ অসমের মানুষের। রাজ্যের প্রিয় মানুষটার শেষকৃত্য যে আজ। হাজার অনুরাগীর চোখের জলকে সাক্ষী রেখে গুয়াহাটির অদূরে কামারকুচি গ্রামে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেলেন প্রিয় শিল্পী জুবিন গর্গ। উপস্থিত ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

Continues below advertisement

গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (GMCH) দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হয় প্রিয় শিল্পীর। তারপর, সোনাপুরের তাঁর জন্মস্থান কামারকুচি গ্রামে চূড়ান্ত শোভাযাত্রার আগে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সরুসাজাই স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়। 

 

Continues below advertisement

স্বামীর শেষকৃত্যে শোকাতুর জুবিন গর্গের স্ত্রী গরিমা

 

পরিবার, প্রিয়জনদের কাঁধে প্রিয় শিল্পীর দেহ

পরে গ্রামেই পরিবার, প্রিয়জন ও অসংখ্য অনুরাগীর উপস্থিতিতে মুখাগ্নি করেন বোন পালমি বোরঠাকুর। সঙ্গে ছিলেন মিউজ়িক কম্পোজ়ার রাহুল গৌতম। তার আগে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গান স্যালুট দেওয়া হয় শিল্পীকে। 

খানিক নীরবতা, কান্না আর "জুবিন, জুবিন" স্লোগান তখন চারদিকে। অনুরাগীরা গাইছিলেন শিল্পীর প্রিয় "মায়াবিনী রাতির বুকু"। যে চন্দনগাছ ২০১৭ সালে নিজের হাতে লাগিয়েছিলেন জুবিন, তাঁরই চিতায় সে গাছেরই শাখা রাখা হয় শিল্পীর পাশে। বৈদিক নিয়ম মেনে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের রীতি-উপাচার পালন করা হয়। হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল, কিরেন রিজিজু, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রমুখ। 

সিঙ্গাপুরে নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে শিল্পীর আকস্মিক প্রয়াণের খবর আসে। স্কুবা ড্রাইভিং করতে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। পরে অসম সরকারের তরফে CID তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় জুবিন গর্গের মৃত্যুর। দিল্লি হয়ে গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হয় শিল্পীর মরদেহ।  

শুধু অসমের নয়। জুবিন গর্গ ছিলেন দেশের একজন অন্যতম খ্যাতনামা জনপ্রিয় শিল্পী। তিনি শুধু গায়ক ছিলেন না, ছিলেন, কম্পোজ়ার, চিত্র পরিচালক, অভিনেতা। তিরিশ বছরেরও বেশি বর্ণময় কেরিয়ারে দিয়েছেন একের পর এক হিট গান উপহার। অসমীয়া, হিন্দি, বাংলা সহ ভারতের একাধিক ভাষায় রয়েছে তাঁর হাজারো গান। এক-দুটো নয়, সমান তালে বাজাতে পারতেন নানা ধরনের বাদ্যযন্ত্র। ১২ রকমের বাদ্যযন্ত্র যেমন, আনন্দলহরী, ঢোল, দোতারা, ড্রাম, গিটার, হারমোনিকা, হারমোনিয়াম, ম্যান্ডোলিন, কি বোর্ড, তবলা এবং অন্যান্য পারকাশন বাদ্যযন্ত্র বাজানোয় জুবিন গর্গের সমান দক্ষতা ছিল।