কলকাতা: আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে আজ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আজ গণ কনভেশনের আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেই কনভেনশনেই উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা জিতু কমল থেকে শুরু করে অভিনেত্রী সোহিনী সরকার, কিঞ্জল নন্দ ও একাধিক অভিনেতা অভিনেত্রীরা। আর সেই কনভেনশনেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে সোহিনীর কথায় বারে বারে উঠে এল প্রতিবাদের কথা, আরজি করের আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কথা, নিজের কথাও।
সোহিনী বলছেন, 'আমি কাঁদতে চাই না কারণ কাঁদলেই কেমন যেন শরীর ছেড়ে দিচ্ছে। আমি এই কান্নাটাকে জমিয়ে রাখতে চাই, চেপে রাখতে চাই যাতে এটা অনেক দূর যেতে পারে। আরজি করের সামনে যখন ১৫ তারিখ রাতে গিয়েছিলাম, হঠাৎ কিছু ছেলেমেয়ের সঙ্গে আলাপ হয়ে যায়। অনেকেই বলছেন, সোহিনীদি নবান্ন চলো, এখানে চলো, ওখানে চলো। একটা মেয়ে ভদ্রেশ্বর থেকে এসেছে। বলল, কী করে বাড়ি ফিরব জানি না, কিন্তু বাড়িতে থাকতে পারছি না। মনে হচ্ছে কিছু একটা করতে হবে। তিলোত্তমার জন্য প্রতিবাদ করছি, আবার মনে হচ্ছে, এই দেশে এই রাজ্যেই থাকতে হবে। কাজ করে খেতে হবে। মনের মধ্যে একটা সংশয়, একটা ভয় কাজ করছে।' এরপরে এই আন্দোলন নিয়ে লেখা একটি পাঠ পড়ে শোনান সোহিনী।
সোহিনী আরও বলেন, 'ভাবতে অবাক লাগছে, এই আখতার আলি নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর পর্যন্ত গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এখন সরকারের যাঁরা মুখপাত্র, তাঁদের কিছু বলতে গেলেই তাঁরা বিষয়টা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন, অন্য রাজ্যের কথা বলছেন, বলছেন যে, বিচার চাইতে হলে সিবিআই বা সুপ্রিম কোর্টের কাছে চাও। বিভিন্ন লবির কথাও শোনা যাচ্ছে। কোথা থেকে এল এগুলো? আজকে তিলোত্তমার মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে সবটা দেখিয়ে দিয়ে গেল। নাহলে তো আমরা রিল বানাতাম, পোস্ট করতাম, অভিনয় করতাম, হয়ে যেত। আমাদের তো কাজ শেষ হয়ে গেল। আমরা যারা এখন বসে আছি, যদি পথে না নামি, আমাদেরও তিলোত্তমার মতোই অবস্থা হবে। আমি তো দীর্ঘদিন থেকে আরজি কর আর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা যদি আন্দোলনটা থামিয়ে দিই, তাহলে ওরাও কিন্তু ভাল থাকবে না। ওদেরও ফেল করিয়ে দেবে বা বদলি করিয়ে দেবে কোথাও। কিন্তু ভয় লাগছে, পুজো আসছে। আমরা যেন সব ভুলে পুজোর আনন্দে মেতে না উঠি। যতক্ষণ না আমরা বিচার পাচ্ছি, আমরা যেন আন্দোলনটা চালিয়ে যেতে পারি।'
সবশেষে সোহিনী বলেন, 'আমার সদ্য বিয়ে হয়েছে। আমার স্বামীকে বললাম, মা হব? কোন দেশে মা হব? আমি চাই না আমার সন্তানকে পৃথিবীতে নিয়ে এসে এরকম দেশে রেখে দিয়ে যেতে। এই দেশে যতক্ষণ দুর্নীতি আছে, আমি পারব না আমার সন্তানকে এই দেশে নিয়ে আসতে। সবাই পাশে থাকুন, এটুুকুই আমার বলার।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।