কলকাতা: পরিচালনা থেকে শুরু করে অভিনয়... প্রত্যেক ক্ষেত্রেই প্রশংসা পেয়েছে এই ছবি। আর দর্শকদের মনে যেন এই সমীকরণ বসেই গিয়েছে যে পুজো মানেই সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherji)-র সিনেমা। গত ১১ বছর ধরে প্রত্যেক পুজোতেই দর্শকদের নতুন নতুন ছবি উপহার দিয়ে এসেছেন সৃজিত। আর এবার তাঁর পুজোর বাজি 'টেক্কা' (Tekka)। ছবি মুক্তির পরে কি ভাবছেন, কোন কোন হিসেব কষছেন পরিচালক? খোঁজ নিল এবিপি লাইভ বাংলা (ABP Live Bangla)।
সৃজিতের ছবি প্রত্যেকবার পুজোতেই বক্স অফিসের শীর্ষে থাকে। সৃজিত বলছেন, 'প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরেও আমার পুজোর ছবি ব্লকবাস্টার। তবে কালেকশনের জায়গা থেকে আমার ছবি এই নিয়ে তৃতীয়বার ২ নম্বরে রইল। মার্জিন খুব কম থাকলেও, 'বহুরূপী' প্রথম। তবে তুল্যমূল্য বিচার যদি করি, 'বহুরূপী'-শো অনেক বেশি। তাই কালেকশনও বেশি। শো-এর নিরিখে হিসেব করলে 'টেক্কা' আর 'বহুরূপী'-প্রায় একই জায়গায় রয়েছে। সুতরাং বলা যায়, ১১ বারের মধ্যে ৮ বার আমার ছবি শীর্ষে। রেকর্ড মন্দ নয়' (হাসি)। 'তবে হ্যাঁ.. বক্সঅফিসে সফর শুরু করার আগেই 'টেক্কা' লাভের অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছে। যেহেতু 'টেক্কা' খুব কম বাজেটে তৈরি ছবি, তাই স্যাটেলাইট আর ডিজিট্যাল ডিলারের থেকেই 'টেক্কা'-র ইতিমধ্যেই ২ কোটির মুনাফা হয়ে গিয়েছে। কাজেই বক্সঅফিসে যেটা পাব, সেটা পুরোটাই বোনাস। বলাই যায়, 'টেক্কা' ইতিমধ্যেই ব্লকবাস্টার।'
ছবির জন্য প্রশংসা পাচ্ছেন, 'টেক্কা' সৃজিতকে কী দিয়ে গেল? পরিচালক বলছেন, 'আমার সবচেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে রুক্মিণী আর দেবের প্রশংসা দেখে। রুক্মিণীর নামটা সবাই বলছে। দেব-ও ওর কেরিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরমেন্সটা দিয়েছে। তবুও দেব এর আগে একটা 'বুনোহাঁস' করেছে, একটা 'জুলফিকর' করেছে। ও যে তেমন চিত্রনাট্য পেলে ভাল অভিনয় করতে পারে, সেটা লোকে জানেন। তবে রুক্মিণীর পারফরম্যান্স মানুষকে অবাক করে দিয়েছে। 'টেক্কা'-র সবচেয়ে বড় পাওয়া আমার কাছে এটাই।'
রুক্মিণীকেই 'মায়া'-র চরিত্রে কেন ভেবেছিলেন পরিচালক? সৃজিত বলছেন, 'রুক্মিণীর সঙ্গে আমি ২০১১ থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি। সেই সময়ে ওর দেবের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল না। তখন ও সবে মডেলিং শুরু করেছে। আমার কোথাও ওকে দেখে খুব আন্তর্জাতিক বলে মনে হয়েছিল। অন্যরকম চরিত্রে ওকে মানাবে ভাল। ১৩ বছর পরে 'টেক্কা' সেই ভাবনাকে বাস্তবায়িত করল।' 'টেক্কা' ছবিতে সৃজিতের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল? উত্তরে পরিচালক বললেন, 'টেক্কা-র ক্লাইম্যাক্সটা লুকিয়ে রাখা। এমনভাবে ক্লাইম্যাক্সটাকে লুকিয়ে রাখা যাতে কেউ বুঝতে না পারেন। এখন তো মানুষ ট্রেলার দেখে, ঘেঁটে পড়াশোনা করে প্রেক্ষাগৃহে যান। কাজেই থ্রিলারের ক্লাইম্যাক্সটা লুকিয়ে রাখা খুব চ্যালেঞ্জিং। তবে শুনলাম, কেউই শেষটা ধরে ফেলতে পারেননি। এটাই তো পাওয়া।'
দেব কিন্তু বলেছেন, 'যদি বাংলা ছবির থ্রিলারের ইতিহাস লেখা হয়, তাহলে সৃজিতের নাম সোনা নয়, হীরে দিয়ে লেখা থাকবে..' কথাটা শুনেই হেসে ফেললেন পরিচালক। তারপরে বললেন, 'সেটা দেব-এর বদান্যতা। প্রযোজক দেবের সঙ্গে কাজ করে আমার এত ভাল লেগেছে.. ও মানুষ হিসেবে খুব ভাল। ওর সঙ্গে কাজ করে খুব আনন্দ পেয়েছি।' 'টেক্কা'-নিয়ে এমন কোনও প্রশংসা পেয়েছেন সৃজিত যা তাঁর মনে আছে? পরিচালক বলছেন, 'অনেকদিন পরে স্টার-এর সকাল ১১টার শো হাউজফুল হল। আমরা হল ভিজ়িটে গিয়েছিলাম। আমি ঢুকতে যাচ্ছি, শুনছি ভিতরে স্বতঃস্ফুর্তভাবে মানুষ হাততালি দিচ্ছেন। ওঁরা জানতেন না আমরা এসেছি। আমাদের দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন। যখন সিনেমার পর্দাটা অন্ধকার হয়ে আসে, নাম দেখাতে শুরু করে... তখন সাধারণ মানুষের ওই হাততালিটাই তো প্রাপ্তি।'
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।