নয়াদিল্লি: অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া সুশান্ত সিংহ রাজপুতকে ভুলতে পারছেন না তাঁর অসংখ্য অনুগামী, গুণগ্রাহী। সুশান্তকে হারানোর শোকে এখনও মূহ্যমান তাঁরা। কিন্তু তাঁদের চেয়ে অনেক বেশি যন্ত্রণা সহ্য করছেন প্রয়াত বলিউড অভিনেতার বাবা কে কে সিংহ। শৈশব থেকে যাঁকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করেছেন, যাঁকে ঘিরে স্মৃতির মণিকোঠায় জীবন্ত বহু ঘটনা, তাঁর না থাকার শোক বুকে বয়েই বাকি জীবনটা কাটাতে হবে তাঁকে।
ছেলে চলে যাওয়ার পর কোনও সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাত্কারে তিনি সুশান্তের চাঁদে জমি কেনার কথা জানিয়ে বলেছেন, ৫৫ লাখ টাকায় কেনা টেলিস্কোপ দিয়ে সেই জমি দেখার অভ্যাস ছিল সুশান্তের। টেলিস্কোপটা ছিল বিরাট চেহারার। ওর ড্রইংরুমে বসানো ছিল সেটা। তিনি আরও বলেছেন, বহু বছরের প্রার্থনার ফল সুশান্ত। তিনি স্মৃতি হাতড়ে জানিয়েছেন, সুশান্ত ছিল বাধ্য ছেলে, উজ্জ্বল। প্রাণবন্ত, ভাবুক, অনেক স্বপ্নে ভরা। কে কে সিংহের কথায়, ও ছিল আমার একমাত্র পুত্রসন্তান। আমাদের সম্পর্ক যে কতটা স্পেশাল ছিল, নিশ্চয়ই কল্পনা করতে পারছেন আপনারা।
৩৪ বছরের সুশান্ত কেন সম্প্রতি মুম্বইয়ের বান্দ্রার ফ্ল্যাটে গলায় ফাঁস পরে আত্মহত্যা করলেন, তার কারণ নিয়ে বিতর্ক চলছে সোস্যাল মিডিয়ায়। নামী স্টার পরিবারের কেউ না হওয়ায় বেশ কিছু ছবি হাতছাড়া হওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েই তিনি চরম পদক্ষেপ করেছেন বলে দাবি তাঁর অনুগামীদের। তার মধ্যেই দিনকয়েক আগে সুশান্তের বিহারের বাড়িতে রীতিমাফিক তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে বলিউডের কিছু কলাকুশলীও হাজির ছিলেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে একমাত্র অভিনেত্রী কৃতি শ্যাননই তাঁর সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা প্রকাশ করেন বলে জানান সুশান্তের বাবা। সাক্ষাত্কারে তিনি জানিয়েছেন, সেদিন তিনি বেশি কথা বলেননি, কৃতী যা বলেছেন, তা-ই শুনেছেন।
কে কে সিংহ জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সেদিন সকলে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুখে মাস্ক ছিল সবার। সেখানে সবাইকে তিনি চিনতে পারেননি, তবে কেউ একজন তাঁকে বলেন, তাঁর ঠিক পাশের জনই হলেন কৃতী। তখন কৃতীই এগিয়ে এসে তাঁকে বলেন, সুশান্ত ছিলেন দারুণ এক মানুষ।
সুশান্তকে নিয়ে তিনি যে গর্বিত, তা বুঝিয়ে দিয়ে তিনি জানান, বিহারের জন্য ছেলের অনেক কিছু করার ইচ্ছে ছিল। সুশান্ত স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল তৈরি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এসব স্বপ্ন পূরণ করার সময় পেলেন না!