কলকাতা: যখন রূপোলি পর্দায় তাঁকে উদযাপন করছে দর্শক, তখন তিনি অনেক দূর থেকে হয়তো নজর রাখছেন সবকিছু। আজ তাঁর প্রয়াণের ১ বছর। স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত (Swatilekha Sengupta) নেই। এই কথাটা এখনও যেন বিশ্বাস হয় না তাঁর শেষ ছবির সঙ্গীদের। 'বেলাশুরু'-র (Belashuru) সাফল্য দেখে যেতে পারেননি অভিনেত্রী। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবসে 'স্বাতী আন্টি'-র স্মৃতি ফিরে দেখলেন তাঁর পর্দার মেয়ে মনামী ঘোষ (Monami Ghosh)


শান্তিনিকেতনে (Shantiniketan) বেশ লম্বা একটা শ্যুটিং ছিল। মনামী বলছেন, 'বেলাশুরু-র শ্যুটিংয়ের সময় আমার কলকাতাতেও কিছু কাজ চলছিল। আমি টানা শান্তিনিকেতনে থেকে শ্যুটিং করতে পারিনি। কলকাতা আর শান্তিনিকেতন যাতায়াত করে শ্যুটিং করেছি। আমার খুব মনে পড়ে শ্যুটিং শেষে একটা বিশেষ স্ক্রিনিং হয়েছিল। সেখানে স্বাতী আন্টি ছিল। সৌমিত্র জ্যেঠু (Soumitra Chatterjee) পুরো শ্যুটিং দেখে যেতে পারেননি। গোটা ছবিটা বসে দেখেছিলেন স্বাতী আন্টি। তারপর আমায় জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, মনামী কী ভালো কাজ করেছিস।'


আরও পড়ুন: Monami Ghosh Exclusive: নতুন ইনিংস, প্রযোজনা করছেন, গানও গাইছেন মনামী ঘোষ!


মনামীর মনে পড়ে যায় 'বেলাশুরু'-র সময় একসঙ্গে খেতে যাওয়ার স্মৃতি। মনামী বলছেন, 'শ্যুটিংয়ের মাঝখানে হঠাৎ ঠিক হল সবাই মিলে খেতে যাওয়া হবে। গোটা দল খেতে গিয়েছিলাম। ভীষণ মজার অভিজ্ঞতা ছিল সেটা। আর বেলাশুরু-তে যেদিন টাপা টিনি-র শ্যুটিংটা হয়েছিল, সেদিন আমরা সত্যি সত্যিই ভীষণ মজা করেছিলাম। শীতকাল.. মাঝরাত পর্যন্ত শ্যুটিং হয়েছে.. তারপরেও সবাই ভীষণ মজা করেছি। সত্যিই মনে হচ্ছিল পরিবারে একটা বিয়ে হচ্ছে। আর এই সমস্ত স্মৃতির সঙ্গেই ভীষণভাবে জড়িয়ে রয়েছেন স্বাতী আন্টি।'


করোনা পরিস্থিতির পরে মনে হয়েছিল মানুষ বোধহয় আর হলমুখী হবেন না। ওটিটি প্ল্যাটফর্মেই অভ্যস্থ হয়ে পড়বেন নতুন ছবি দেখতে। কিন্তু তা যে হয়নি সেটা প্রথম প্রমাণ করে দিয়েছিল 'স্পাইডারম্যান নো ওয়ে হোম' (Spiderman No  Way Home) ছবিটি। দলে দলে মানুষ এসেছিলেন ছবিটি দেখতে। কিন্তু তখনও সন্দেহের মেঘ কাটেনি বাংলা চিত্রপরিচালকদের মন থেকে। অনেকেই মনে করেছিলেন, হলিউড ছবির টানেই ভিড় জমিয়েছেন মানুষ। কিন্তু বাংলা ছবি? তা কী আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? 


সেই সন্দেহ প্রথম উড়িয়েছিল 'গোলন্দাজ' (Golondaaj) তারপর 'টনিক' (Tonic)। তারপর 'কিশমিশ' (Kishmish), 'রাবণ' (Ravan), তীরন্দাজ শবর (Tirondaj Sobor), হৃদপিণ্ড (Hridpindo) থেকে শুরু করে 'অপরাজিত' (Aparajito), দলে দলে মানুষ এসেছিলেন, প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ হয়েছিল। এরপর 'বেলাশুরু' (Belashuru)। এই ছবিকে ঘিরে উত্তেজনা ছিল আর থেকে আশির মধ্যেই। আর প্রযোজনা সংস্থার থেকে দেওয়া হিসেব বলছে, ১৪ দিনে পশ্চিমবঙ্গে এই ছবি দেখে ফেলেছেন ৪ লক্ষ দর্শক। কার্যত 'বেলাশুরু' করোনা পরিস্থিতির পরে হলমুখী করল সমস্ত বয়সের দর্শককেই।