লখনউ : একদিকে হিন্দি ছবি 'দ্য কেরালা স্টোরি' ('The Kerala Story' ) নিষিদ্ধ করল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার ( West Bengal ) । তৃণমূল( TMC ) সরকারের আমলে এই প্রথম সরকারিভাবে কোনও ছবির প্রদর্শনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে 'দ্য কেরালা স্টোরি'কে করমুক্ত করার ঘোষণা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও তাঁর ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের ছবি দেখার জন্য স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হতে পারে।
সোমবার নবান্নে, 'দ্য কেরালা স্টোরি'র বিরুদ্ধে জাত-পাতের রাজনীতির পাশাপাশি কোনও একটি সম্প্রদায়কে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার পরদিনই যোগী সরকারের এই সিদ্ধান্ত । মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ( Yogi Adityanath ) হিন্দিতে একটি টুইটে বলেন, "দ্য কেরালা স্টোরি' উত্তর প্রদেশে করমুক্ত করা হবে।"
হয়ত খুব শিগগিরিই যোগী আদিত্যনাথ এবং তাঁর মন্ত্রিসভার জন্য সিনেমাটির একটি বিশেষ স্ক্রিনিং আয়োজন করা হবে।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক রাঘবেন্দ্র মিশ্র সম্প্রতি লখনউতে ১০০ ছাত্রীকে ছবিটি দেখানোর ব্যবস্থা করেন।এর আগে মধ্যপ্রদেশে 'করমুক্ত' করা হয় ছবিটি।
“ফিল্মটি দেখায় যে মেয়েদের (জীবন) লাভ জিহাদের ফাঁদে আটকা পড়ে তারা কীভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। এটি সন্ত্রাসবাদের নকশাকেও প্রকাশ করে”, মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন।
সোমবারই দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ করার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তামিলনাড়ুতে আগেই ছবির প্রদর্শন বন্ধ রেখেছেন মাল্টিপ্লেক্সের মালিকরা। আর এবার, পশ্চিমবঙ্গে 'দ্য কেরালা স্টোরি' ছবিটি নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে জল গড়িয়েছে রাজনীতির ময়দানে। একের পর এক ট্যুইটে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা।
এর আগে বারেবারে শাসকের রেষানলে পড়ে সিনেমা। ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাতের মুখ্য়মন্ত্রী তখন আমদাবাদ সহ গুজরাতের বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষয়ী হিংসার প্রসঙ্গ থাকায়, BBC-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোয়েশ্টেন' নিষিদ্ধ করে মোদি সরকার। এর আগে গুজরাতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল পরজানিয়া এবং ফিরাক-এর মতো ছবি। গুজরাতে মুক্তি পায়নি আমির খান ও কাজল অভিনীত ফনা। শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্যেও এই উদাহরণ রয়েছে।
বাম আমলে ২০০৬-এ নন্দনে সুমন মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘হারবার্ট’-এর প্রদর্শনের অনুমতি নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল৷
দু’হাজার একেও একইভাবে চলচ্চিত্রের ওপর নেমে এসেছিল শাসকের খাড়া ৷ সেবার আলেকজান্ডার সকুরভের ছবি টরাসের প্রদর্শনে আপত্তি জানিয়েছিলেন বিমান বসু৷ লেনিনকে হেয় করা হচ্ছে অভিযোগে কলকাতা চলচ্চিত্র উত্সবে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল একটি সংগঠন৷ নিট ফল ছবিটি তুলে নেওয়া হয়েছিল৷ 1975 সালে জরুরি অবস্থার সময় কিসসা কুর্সি কা ছবির মুক্তিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল! বলা হয় এর নেপথ্য়ে ছিলেন সঞ্জয় গান্ধী । সেই ছবি কোনওদিন মুক্তির মুখ দেখেনি! জরুরি অবস্থার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল গুজলাজ পরিচালিত সুচিত্রা সেন ও সঞ্জীব কুমার অভিনীত বিখ্য়াত ছবি আঁধি । জনতা সরকার ক্ষমতায় আসার পর আঁধি মুক্তি পায় এবং সুপারহিট হয়।