কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে স্বস্তি পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরেও যে বাংলার ছবিটা এক্কেবারে অন্যরকম হবে, তা কল্পনাও করেননি 'দ্য কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story)-র নির্মাতারা। কলকাতায় এসেছিলেন উদযাপন করতে, ছবি নিয়ে কথা বলতে। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে, ক্যামেরার সামনে নিজেদের হতাশা, ক্ষোভ উগরে দিলেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন ও প্রযোজক বিপুল শাহ (Bipul Shah)। 


কলকাতায় আসতে না পারলেও, অনলাইনে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলে প্রযোজক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার পরেও বাংলায় কোনও শো না থাকায় পরিচালকের মতো হতাশ তিনিও। বিপুল বললেন, 'গতকাল সন্ধে থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আমরা ভীষণভাবে অপেক্ষা করছিলাম যে এবার ছবিটা সবাইকে দেখাতে পারব। সুপ্রিম কোর্ট আমাদের যা যা নির্দেশ দিয়েছিল, আমাদের তরফ থেকে সমস্ত কিছু পালন করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের সম্মান আমরা রেখেছি। কিন্তু আমি অবাক হয়ে দেখলাম, কলকাতা তথা বাংলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কেও মানা হচ্ছে না! এটা ভীষণ গুরুতর পরিস্থিতি। যদি এটাই চলে থাকে, আমরা আবার কোর্টে যাব। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট জনসাধারণকে এই ছবিটি দেখার অধিকার দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এও বলেছে, অশান্তির পরিস্থিতি এড়াতে প্রেক্ষাগৃহে নিরাপত্তারক্ষী রাখতে। রাজ্য যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না দিতে পারে, যদি ছবিটি না চলে দেয়, তাহলে সেই পরিস্থিতি গুরুতর। যাঁরা গণতন্ত্রের কথা বলেন আর তারপর এইরকম ব্যবহার করেন একটা ছবির সঙ্গে, তাহলে হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না আমার। তবে এই বিষয়ে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার তা আমরা নেব।'


এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছিল একটি ভিডিও। সেখানে দেখা হয়েছে এমন কিছু মেয়েদের কথা, শোনানো হয়েছে তাঁদের বার্তা, যারা ধর্মান্তরিত হওয়া ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। এই ছবিতে ৩২ হাজার মেয়ের কথা বলা হয়েছে। তবে এই সংখ্যাটি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। ছবির পরিচালকের কাছে এদিন এই সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন রাখা হলে তিনি বলেন, 'আমরা ৩২ হাজার মেয়েকে ছবিতে দেখাতে পারব না। কিন্তু তাঁদের মধ্যে থেকেই আমরা কিছুজনের গল্প বেছে নিয়েছি। হতে পারে সংখ্যাটা ৩২ হাজারের চেয়ে কিছু কম। হতে পারে সংখ্যাটা ৩২ হাজারের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এই দেশে, যদি একজন মেয়ের সঙ্গেও খারাপ কিছু হয়, তাহলে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাওয়া উচিত গোটা দেশের। আর সেন্সর বোর্ডের কাছে আমরা ২০০ পাতার নথি জমা দিয়েছি, ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা দিয়েছি ছবিটা নিয়ে। এত বিতর্কের পরেও সেন্সর বোর্ড ছবি থেকে একটি দৃশ্যও বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি। এখানেই আমার জয় একজন পরিচালক হিসেবে।'