কলকাতা: সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে বরুণ ধবন (Varun Dhawan) ও কৃতী শ্যানন (Kriti Sanon) অভিনীত 'ভেড়িয়া' (Bhediya)। বক্স অফিসে বেশ ভালই সাড়া ফেলেছে এই ছবি। প্রসঙ্গত এই ছবির অ্যান্থেমে কণ্ঠ দিয়েছেন বঙ্গকন্যা দেবাঞ্জলি বি. জোশী (Debanjali B. Joshi)। এছাড়াও বলিউডে করেছেন একাধিক কাজ। এবিপি লাইভ (ABP Live) তাঁকে পেয়েছিল ফোনে। কেমন তাঁর এখনও পর্যন্ত বলিউডের অভিজ্ঞতা, জানালেন নিজের মুখেই।


এবিপি লাইভ: প্রথমেই বলুন, 'ভেড়িয়া'য় কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
দেবাঞ্জলি: বেশ অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল। দৃশ্যের জন্য সঠিক আবেগ তৈরি করে আমরা সাধারণত বাণিজ্যিক বলিউড গানগুলি যেভাবে গাই, তার থেকে আমাকে অনেকটাই আলাদা ভোকাল তৈরি করতে হয়েছিল। এছাড়া অবশ্যই সচিন-জিগর জুটির সঙ্গে কাজ করাটা খুবই আনন্দের।


প্রশ্ন: এই ছবিতে কাজ করার সুযোগ ঘটল কীভাবে?
দেবাঞ্জলি: সচিন-জিগরের কাছে আমার ভয়েস স্যাম্পল আগে থেকেই ছিল। এই ছবির আবহ সঙ্গীতের ভোকাল ডাবিংয়ের জন্য ওঁরা নতুন কিছু খুঁজছিলেন। সেই সময়ে আমি ফোন পাই। এবং আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ তাঁদের কাছে। খুব যত্ন সহকারে কাজটি করার চেষ্টা করেছি।


 প্রশ্ন: শুরু থেকে এই পর্যন্ত সঙ্গীতের দুনিয়ায় যাত্রা পথটা কেমন?
দেবাঞ্জলি: এই ইন্ডাস্ট্রিতে যাত্রা খুব একটা সহজ একেবারেই নয়। তবে আমি মনে করি সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চাকরি ছেড়ে সঙ্গীত জগতে পা রাখার সিদ্ধান্তটা একেবারে সঠিক নিয়েছি। এখানে আমি শান্তি খুঁজে পাই। 


আমি শান স্যরের সঙ্গে একটা ডুয়েট গান গেয়ে আমার কর্মজীবন শুরু করি এবং এরপর এক জাতীয় মিউজিক লেবেলের হয়ে প্রচুর ভক্তিগীতি গাই। এছাড়া বিভিন্ন বড় সংস্থার জিঙ্গলে কণ্ঠ দিয়েছি। ডিজনি বা নেটফ্লিক্সের মতো সংস্থার হয়ে কার্টুন ছবিতেও গান গেয়েছি। 'বধাই দো', 'স্ট্রিট ডান্সার'-এর মতো বলিউড ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ হয়েছে। নেটফ্লিক্সের 'কল মাই এজেন্ট - বলিউড'-এর টাইটেল ট্র্যাক আমারই গাওয়া। এই গানের জন্য প্রচুর প্রশংসা পেয়েছি। তবে বলিউডেই শুধু নয়, বাঙালি, মরাঠি, গুজরাতি, পঞ্জাবীর মতো বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাতেও কাজ করছি আমি। একটি বাংলা ছবির জন্য অরমান মালিকের সঙ্গে 'ছোঁয়া ছুঁই' গানটি সকলে পছন্দ করেছেন। এখন তো 'ভেড়িয়া'য় আমার কাজও সকলে বেশ পছন্দ করছেন।


আরও পড়ুন: Hansika Motwani: পরশু বিয়ে, তার আগে প্রকাশ্যে হংসিকার মেহেন্দির ছবি ও ভিডিও


প্রশ্ন: বলিউডে তারকা সঙ্গীতশিল্পীদের মাঝে নিজের জায়গা করে নেওয়া কতটা কঠিন?
দেবাঞ্জলি: হ্যাঁ কঠিন বটে, তবে অসম্ভব নয়। আসলে সঙ্গীত দুনিয়ায় বিশেষত বাণিজ্যিক ছবিতে নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গায়ক-গায়িকা প্রচুর কিন্তু কাজের সুযোগ খুবই কম। এছাড়া সঠিক মানুষের কাছে নিজের ট্যালেন্ট পৌঁছে দেওয়াটাও প্রয়োজন। ইন্ডাস্ট্রিতে গায়ক-গায়িকা হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার কোনও প্রবেশিকা পরীক্ষা নেই, ফলে নিজের বুদ্ধি দিয়ে নিজের রাস্তা করে নিতে হয়।


প্রশ্ন: ভবিষ্যতে যাঁরা এই পেশায় আসতে চান, তাঁদের জন্য কী বলবেন?
দেবাঞ্জলি: এখনও কাউকে কোনও সাজেশন দেওয়ার মতো বড় হইনি। তবে আমার সংক্ষিপ্ত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, নিজের লক্ষ্যে পৌঁছনোর দুটো মূল চাবিকাঠি আছে। এক নিজের শিল্পের শ্রেষ্ঠটা বের করে আনতে অনবরত প্রশিক্ষিত করতে ও হতে থাকা, আর দুই, যত বাধাই আসুক না কেন, নিজের প্রতি বিশ্বাস অটুট রাখা। এই ইন্ডাস্ট্রি ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেয়। ফলে শিখতে থাকুন এবং ভগবানে ভরসা রাখুন। এছাড়া আজকাল তো সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকাও জরুরি। আমি নিজেও তাই থাকার চেষ্টা করছি, শিখছি।