কলকাতা: ছোট থেকেই তিনি বড় হয়ে উঠেছেন এমন একটা পরিবারে, যাঁর সঙ্গে যোগ ছিল রূপোলি পর্দার। বোধহয় তাঁর কপালেও লেখা ছিল সেই রূপোলি পর্দায় ঝলমল করা। কিন্তু ছোটবেলায় এই খ্যাতি, আলো সবকিছু থেকে তাঁকে সযত্নে দূরেই সরিয়ে রেখেছিলেন বাবা-মা। ভবানীপুরের বিশাল বাড়িতে, অনেক ভাই-বোনের সঙ্গে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠছিলেন তিনি। কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick)। অনেকেই মনে করে, সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছিলেন তিনি। সহজ ছিল তাঁর রুপোলি পর্দার পথটাও। কিন্তু তা যে একেবারেই নয়, সেই গল্প বারে বারেই এবিপি লাইভকে (ABP Live) দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন কখনও কোয়েল, কখনও আবার রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick) স্বয়ং। আজ, কোয়েলের জন্মদিনে, ফিরে দেখা কোয়েলের রূপোলি পর্দার সফরের গল্প। 


চিরকালই নিজের সাংসারিক জীবন আর কেরিয়ার সমানভাবে মানিয়ে চলতেন রঞ্জিত মল্লিক। বাকি সাধারণ মানুষেরা যে সময়ে অফিস থেকে ফেরে, সেই সময়েই শ্যুটিং থেকে ফিরে আসতেন তিনি। ছোট্ট কোয়েল জানতেনও না, তাঁর বাবার জন্য তখন পাগল হাজার হাজার অনুরাগী। এমনকি বাবার সঙ্গে ভিড়ের মধ্যে পড়ে একবার বেশ বিরক্তই হয়েছিলেন ছোট্ট কোয়েল। সেই গল্প এবিপি লাইভকে বলতে গিয়ে কোয়েল বলেছিলেন, তাঁর মা একবার গাড়ি থামিয়ে গড়িয়াহাটের মোড়ে কেনাকাটা করতে নেমে যান। বাবার সঙ্গে গাড়িতেই বসেছিলেন ছোট্ট কোয়েল। হঠাৎ আশেপাশে শোরগোল। গড়িয়াহাটের মোড়ে রঞ্জিত মল্লিক গাড়িতে বসে শুনেই দলে দলে মানুষ ঘিরে ধরল সেই গাড়ি। আর তার ভিতরে বসে ছোট্ট, বিরক্ত কোয়েল তখন ভাবছে, 'এরা সবাই আমার বাবার নাম জানল কী করে?'


বাবা যে নায়ক, সেই ভুল একদিন কোয়েলের ভেঙেছিল টিভির পর্দায় চোখ রেখে। সেই গল্পও শুনিয়েছিলেন কোয়েল। একদিন বসার ঘরের টিভিতে 'কপালকুণ্ডলা' চলছিল। নায়িকা মহুয়ার পাশে ওটা কে? একটু ভাল করে দেখেই কোয়েল চিনতে পারেন মানুষটাকে! তাঁর বাবা! মহুয়ার সঙ্গে! বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার হয়ে যায় সবটা। বাবাকে যে টিভির পর্দায় দেখা যায়, ওঁর কাজটা যে সবার থেকে আলাদা সে কথা জানতেই অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিল কোয়েলের। 


অন্যদিকে কোয়েলকে নিয়ে আরও একটি মজার গল্প এবিপি লাইভকে শুনিয়েছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। তিনি বলেছিলেন, 'কোয়েলের ছবি করা নিয়ে আমার কখনও কোনও আপত্তি ছিল না। কেবল ভয় ছিল। মনে হয়েছিল, ছবি সাফল্য না পেলে ওর মনের ওপর চাপ পড়বে। পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের টাকার ক্ষতি হবে প্রযোজকেরও। ভয়ে হরনাথ চক্রবর্তীকে বললাম, 'হর.. দু-একদিন শ্যুটিং দেখবি। তারপর বাদ দিয়ে নতুন নায়িকা নিয়ে নিবি।' কোয়েল সবটা জানতে পেরে অবাক হবে বলেছিল, 'বাবা! সবাই সবার ছেলে মেয়েকে সাহায্য করে আর তুমি আমায় ছবিতে নিতে বারণ করে দিয়েছো!' শুরু হল শ্যুটিং। হরনাথ ২ দিন পর এসে বলল, 'তুমি ভয় পেও না দাদা। আমি দেখে নিয়েছি। ও পারবে।'


আরও পড়ুন: Feluda Indraneil Exclusive: রায়বাড়ির বিখ্যাত চপ, হামেশাই মেনুতে থাকে পেস্ট্রি, মিষ্টি, দই বড়া.. 'ফেলুদা'-র শ্যুটিংয়ের অন্য গল্প শোনালেন ইন্দ্রনীল


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।